বন্যা নিয়ন্ত্রণে কান্দি মাস্টার প্ল্যান কার্যকরী করতে এ বারের বাজেটে ৪৩৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করায় রবিবার কান্দিতে গণসংবর্ধনা দেওয়া হল কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়কে।
কান্দি মহকুমা এলাকা ছাড়াও বর্ধমানের কেতুগ্রাম, বীরভূমের রামপুরহাট নানুর, সুতির একটা অংশ, নবগ্রাম এলাকার বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। কান্দি মাস্টার প্ল্যান রূপায়িত হলে ওই সব এলাকার মানুষও উপকৃত হবেন বলে প্রণববাবু আশাবাদী। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বলেন, “কান্দি মাস্টার প্ল্যান দ্রুত রূপায়ণের জন্য অবিলম্বে উপদেষ্টামণ্ডলী গড়ে তুলতে হবে। রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া ইতিমধ্যে সেই কাজ শুরু করেছেন।” |
এই মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণে দেরি হওয়ায় সিপিএমের সমালোচনা করে অধীর চৌধুরী বলেন, “দীর্ঘ দিন আগে কান্দির মাস্টার প্ল্যান তৈরি করে রাজ্য সরকারের কাছে জমা দেওয়া হয়। কিন্তু বামফ্রন্ট সরকার ওই পরিকল্পনা রিপোর্ট চেপে রেখেছিল। তারা কেন্দ্রে পাঠায়নি। পরে নতুন সরকারের মন্ত্রী হিসেবে মানসদা দিল্লি-কলকাতা ছোটাছুটি করে ওই মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণে সচেষ্ট হন।” অধীর বলেন, “কান্দি, ভরতপুর, নবগ্রাম, বড়ঞা এলাকার মানুষ প্রতিবছর বানভাসি হন। বন্যার সময়ে তাঁদের সাপ-গবাদি পশুর সঙ্গে ঘর করতে হয়। প্রণববাবু নিজেও বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ। ফলে তিনি বন্যা প্রতিরোধে কান্দির মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণে উদ্যোগী হওয়ায় জেলা ও কান্দিবাসী তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ।” কান্দি মহকুমা কংগ্রেস আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সেচমন্ত্রী মানসবাবু বলেন, “গত ৩৪ বছরে বাম সরকার বন্যা প্রতিরোধে উদ্যোগী হয়নি। রাজ্যের দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকার মধ্যে কান্দি সবচেয়ে উর্বর এলাকা। সেদিকেও তারা নজর দেয়নি। তবে প্রণববাবু এসব ব্যাপারে সব সময়ে এগিয়ে আসেন। |
২০০৯ সালে আয়লার পরে নদীবাঁধের জন্য ৫ হাজার ৩২ কোটি মঞ্জুর করেছিলেন। কেলেঘাই-কপালেশ্বরী নদী সংস্কারেও তিনি ৫০৬ কোটি টাকা মঞ্জুর করেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ও অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের সহযোগিতাও রয়েছে।” মানসবাবু বলেন, “ফরাক্কা ব্যারেজের বাঁধ সংস্কারের কাজ চলছে। মালদহ-মুর্শিদাবাদের ভাঙন প্রতিরোধের কাজও চলছে।” কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকার বলেন, “বন্যা মানুষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়ে থাকে। এই প্ল্যান রূপায়িত হলে এলাকার চেহারাই পাল্টে যাবে।” এদিনের অনুষ্ঠানে সাংসদ মান্নান হোসেন, মৎস্যমন্ত্রী আবু হেনা-সহ ১৭ জন কংগ্রেসের বিধায়ক হাজির ছিলেন। তার মধ্যে কাটোয়ার রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, বীরভূমের হাসনের অসিত মাল, নলহাটির অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় ছাড়াও মালদহ রতুয়ার বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় ছিলেন। এদিন খড়গ্রাম লাগোয়া বীরভূমের বসোয়া, বিষ্ণুপুর এলাকার বন্যা প্রতিরোধে দ্বারকা অ্যাকশন প্ল্যানের দাবি তোলেন অসিতবাবু। এ দিন লালগোলা ব্লকে সীমান্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা খাতে ৪৩ কিমি দীর্ঘ পিচ সড়ক পথ নির্মাণের জন্য ১৫ কোটি ১৩ লক্ষ কেন্দ্রীয় অর্থ বরাদ্দ করার কথা ঘোষণা করেন প্রণববাবু। দুটি রাস্তার শিলান্যাসও করেন তিনি। |