শালবনিতে স্টেডিয়াম, কলেজ তৈরির প্রস্তুতি
রাজ্যে সরকার পরিবর্তনের পরে জঙ্গলমহলের জন্য একাধিক দফায় বহু ঘোষণাই করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার অন্যতম, শালবনিতে কলেজ ও স্টেডিয়াম গড়ার আশ্বাস। কিছুটা দেরিতে হলেও ওই দুই প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে অবশেষে উদ্যোগী হয়েছে সরকার। দু’টি প্রকল্পের জন্যই জমি দেখার কাজ শেষ। খাস-জমিই রয়েছে বলে দাবি প্রশাসনের। সেই জমি যাতে উচ্চশিক্ষা দফতর ও ক্রীড়া দফতরকে হস্তান্তর করা হয়, জেলা প্রশাসনকে সেই নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক অরিন্দম দত্ত জানিয়েছেন, “জমি হস্তান্তরের নির্দেশ এসে গিয়েছে। দ্রুত সংশ্লিষ্ট দুই দফতরকে জমি হস্তান্তর করে দেওয়া হবে।”
দু’টি প্রকল্পই হবে শালবনি ব্লকের কয়মা-য়। পিরাকাটা ও ভীমপুরের মাঝে কয়মা। এক সময়ে এলাকাটি মাওবাদী ‘ঘাঁটি’ ছিল। কয়মা-য় কেন্দ্রীয় বাহিনীর শিবিরও করা হয়। সেখানেই এ বার তৈরি হবে কলেজ ও স্টেডিয়াম। শালবনি ব্লকের প্রত্যন্ত এলাকার ছাত্রছাত্রীরা যেমন সহজে এই কলেজে পড়ার সুযোগ পাবেন, তেমনই লালগড় ও মেদিনীপুর সদর ব্লকের কিছু এলাকার ছাত্রছাত্রীরাও উপকৃত হবেন। তাঁদের আর কষ্ট করে মেদিনীপুর বা ঝাড়গ্রামে যেতে হবে না। প্রত্যন্ত এলাকার ছাত্রছাত্রীদের কলেজ যাতায়াতের পথ সুগম করতেই এই পরিকল্পনা বলে প্রশাসন সূত্রে জাননো হয়েছে।
কলেজের জন্য ৫ একর খাস-জমি দেখা হয়েছে কয়মা-য়। কলেজ গড়ার খরচ দেবে উচ্চশিক্ষা দফতর। জমি হস্তান্তরের কাজ শেষ হলেই কলেজ তৈরি শুরু হয়ে যাবে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। স্টেডিয়াম তৈরির জন্য দেখা হয়েছে ১৫ একর খাস জমি। এর খরচ দেবে রাজ্য ক্রীড়া দফতর। ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকা। যার প্রশাসনিক অনুমতিও মিলেছে। বাকি শুধু জমি হস্তান্তর। জমি হস্তান্তর হয়ে গেলেই দরপত্র আহ্বান করা হবে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। কাজ করবে পূর্ত দফতরের বিদ্যাসাগর ইউনিভার্সিটি ডিভিসন। দু’টি কাজ হয়ে গেলে শালবনি-সহ পাশের লালগড় ও মেদিনীপুর সদর ব্লকের একাংশও উপকৃত হবে বলে প্রশাসনিক কর্তাদের অনুমান। কারণ, প্রত্যন্ত এলাকা থেকে কলেজ অনেক দূরে হওয়ায় কিছু ছাত্রছাত্রীর মধ্যে পড়াশোনায় অনীহা দেখা দিত। আবার কিছু ক্ষেত্রে যাতায়াতের খরচ বেশি হওয়ায় অনেক পরিবারই ছেলেমেয়েদের কলেজে পড়াতে পারতেন না। গরিব পরিবারের ছাত্রছাত্রীরা উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হতেন। কলেজ হলে এ বার তাঁদের কাছে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
খেলাধূলার ক্ষেত্রেও একটি বড় দিক খুলে যাবে। জঙ্গলমহলে ফুটবল খুবই জনপ্রিয়। আর্থিক অনটনের মধ্যেও এলাকার যুবকরা নিয়মিত ফুটবল খেলার চেষ্টা করেন। কিন্তু পরিকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় ততটা নিজেদের মেলে ধরতে পারেন না। মাওবাদী মোকাবিলায় যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরুর পর অবশ্য ফুটবলকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। পুলিশের পক্ষ থেকে ফুটবল, জার্সি, জুতো দেওয়া, বিভিন্ন প্রতিযোগিতা আয়োজন, পুরস্কৃত করাএ সবই হয়েছে। এতে এলাকার যুবকদের মধ্যে উৎসাহও বেড়েছে। স্টেডিয়াম হলে কেবল ফুটবল নয়, ক্রিকেট, ভলিবল-সহ নানা ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা যাবে। বিভিন্ন সময়ে প্রশিক্ষণ-শিবিরও করা যাবে। সব মিলিয়ে খেলার ক্ষেত্রেও এক নতুন দিগন্ত খুলে যাবে। প্রশাসন জানিয়েছে, স্টেডিয়াম তৈরি করতে দেড় বছর মতো সময় লাগবে। কলেজ তৈরিতেও তার থেকে বেশি সময় লাগার কথা নয়।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.