দাদা-ম্যাচ হারার মধ্যে আরও যন্ত্রণা বয়ে আনল হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট। রবিবার সকালে স্ত্রী সাক্ষীকে নিয়ে মুম্বই বেরিয়ে যাওয়ার আগে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি একান্ত সাক্ষাৎকারে যা যা বললেন:
প্রশ্ন: আপনার টিম তো ও দিক দিয়ে বেরোচ্ছে। আপনি এ দিকে কোথায় চললেন?
ধোনি: আমি টিমের সঙ্গে যাচ্ছি না।
প্র: তা হলে?
ধোনি: আমি মুম্বই যাচ্ছি। গাড়ি এসে গিয়েছে বোধ হয়।
প্র: সে কী? কেন?
ধোনি: কেন আবার! হ্যামস্ট্রিং। গেল আমার আইপিএলের চার-পাঁচটা ম্যাচ মনে হচ্ছে।
প্র: কাল মাঠে যেটা লাগল?
ধোনি: হ্যাঁ। বাজে লেগেছে। হ্যামস্ট্রিং বলে চিন্তাটা বেশি।
প্র: সত্যি বলছেন না মজা করছেন?
ধোনি: আরে না না। সত্যিই বলছি। এই তো দেখছেন না টিমের সঙ্গে যাচ্ছি না। মুম্বই যাব।
প্র: কী মনে হচ্ছে? কবে নাগাদ আবার মাঠে ফিরতে পারবেন?
ধোনি: বুঝতে পারছি না। হ্যামস্ট্রিংয়ে লেগেছে তো। কিছুটা সময় তো লাগবেই। আমি ধরে রাখছি অন্তত তিন-চারটে ম্যাচ। মুম্বই গিয়ে ডাক্তার দেখাব। দেখি কী বলেন। আমাদের এখন দিন চারেক মতো ফাঁকা আছে। ম্যাচ নেই। সেটা সামান্য হলেও সাহায্য করবে।
প্র: পরের ম্যাচ তো চেন্নাইয়ে পুণে ওয়ারিয়র্সের সঙ্গেই। ১৯ তারিখ। পারবেন সেই ম্যাচ খেলতে?
ধোনি: মনে হচ্ছে না। হ্যামস্ট্রিং কি এত তাড়াতাড়ি সারবে! মাত্র চার দিনে! খুব নিশ্চিত নই।
প্র: এপ্রিল ৩০? চেন্নাই সুপার কিংস বনাম কলকাতা নাইট রাইডার্স। চেন্নাইয়ের মাঠে। ওটা পারবেন?
ধোনি: হ্যাঁ, ওটা পারা উচিত। হাতে এখনও পনেরো দিন সময়।
প্র: দাদা বনাম ধোনি নিয়ে চার দিকে যা চলছে সেটা কী চোখে দেখেন?
ধোনি: চালাচ্ছে কারা? আমরা ক্রিকেটারেরা তো নই। চালাচ্ছে মিডিয়া। ওটা মিডিয়ার সৃষ্টি। আমি ও ভাবে দেখি না। মনে হয় না কোনও ক্রিকেটার দেখে।
প্র: আপনার চোখে তা হলে দাদার পুণে ওয়ারিয়র্সের সঙ্গে ম্যাচ মানে তার কী বিশ্লেষণ?
ধোনি: আর পাঁচটা ম্যাচের মতোই ক্রিকেট ম্যাচ। প্রতিদ্বন্দ্বিতার ম্যাচ। যেমন অন্য ম্যাচগুলোতেও থাকে। আর পুণে ওয়ারিয়র্স ভাল খেলছে। ছন্দে আছে। তাই বাড়তি সতর্ক থাকার ম্যাচ ছিল।
প্র: ক্যাপ্টেন বনাম ক্যাপ্টেন এ রকম কোনও ব্যাপার চলে না মাথার মধ্যে?
ধোনি: ধুর, একেবারেই চলে না। চলার ফুরসতও পাবেন না। ক্যাপ্টেনকে প্রতিপক্ষের পুরো টিম নিয়ে ভাবতে হয়। শুধু এক জনের ওপর ফোকাস করে বা ব্যক্তিগত ডুয়েল নিয়ে সে কখনও বসে থাকতে পারে নাকি?
প্র: ম্যাচটা হেরে গিয়ে তা হলে চেন্নাই সুপার কিংস অধিনায়কের প্রতিক্রিয়া কী?
ধোনি: প্রতিক্রিয়া এটাই যে, কয়েকটা ব্যাপার কাল মাঠে খাটেনি। বা আমরা করতে পারিনি। সেই কারণে হেরেছি। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সের সঙ্গে খুব ভাল জিতেছিলাম। ২০৫ রান তাড়া করে। মনে হয়েছিল টিমটা এ বার ছন্দ পেয়ে গিয়েছে। ভাল দৌড়বে। সে দিক দিয়ে দেখতে গেলে কালকের হারটা একটা ঝটকা।
প্র: এখন কি মনে হচ্ছে ইয়ো মহেশকে দিয়ে শেষ ওভারটা না করালেই ভাল হত?
ধোনি: ম্যাচের পর তো অনেক কিছুই মনে হতে পারে। তখন মাঠে দাঁড়িয়ে ক্যাপ্টেনকে একটা সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কোনও দিন সেটা খাটে। কোনও দিন খাটে না। আমি ইয়ো মহেশকে বল দেওয়ার আগে অন্য বোলারদেরও বাজিয়ে দেখেছিলাম। ওকে আমার সবথেকে আত্মবিশ্বাসী মনে হয়েছিল। নিজে খুব জোর দিয়ে বলল, পারবে। ওই জেদটা দেখেই শেষ ওভারটা ওকে দিই। ও পারল না ঠিক আছে। ক্রিকেটে এ রকম হতেই পারে। স্টিভ স্মিথ ভাল মেরে দিয়েছে।
প্র: আপনার তা হলে এখন সূচি কী? মুম্বইয়ে কয়েক দিন কাটিয়ে রাঁচি যাওয়া?
ধোনি: না, রাঁচি ফিরছি না। মুম্বইয়েই থাকব। ট্রিটমেন্ট করাতে হবে। তার পর দেখি ডাক্তার কী বলে।
প্র: চেন্নাই ভক্তদের বেশ আতঙ্কিত হয়ে পড়ার কথা। এমনিতে গত বারের চ্যাম্পিয়ন টিম এই মুহূর্তে পয়েন্ট টেবিলে ছয় নম্বরে। চার ম্যাচে দু’টো জয়, দু’টো হার। তার ওপর ক্যাপ্টেন চোট পেয়ে ছিটকে যাচ্ছে।
ধোনি: না, না, অত চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। অন্যরা আছে। টিম ঠিক খেলে দেবে। আর আইপিএলের এখনও অনেক বাকি। পয়েন্ট টেবিল রোজই পাল্টাতে থাকবে। এখনই এই টিম এগিয়ে গেল, ওই টিম পিছিয়ে পড়ল এ সব ভাবার সময় হয়নি। |