‘স্বচ্ছতা’ আনার চেষ্টায় সিএসটিসি-র পুরনো বাস বিক্রির পদ্ধতি বদলানো হচ্ছে। এতকাল টেন্ডার ডেকে বিক্রি হত পুরনো বাস। সম্প্রতি নিগমের পরিচালন পর্ষদে এ ভাবেই ২১৮টি বাস বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু মহাকরণের নির্দেশে ওই সিদ্ধান্ত বাতিল হয়েছে। ঠিক হয়েছে, এ বার বাস বিক্রি করা হবে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন এক সংস্থার মাধ্যমে।
কলকাতা রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের এক পদস্থ অফিসার বলেন, “পরিচালন পর্ষদের গত বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, এ বার টেন্ডার ডেকে ২১৮টি বাস বিক্রি হবে। তা কার্যকরী না করে এমডি-কে বলা হয়েছে এমএসটিসি লিমিটেড-এর মাধ্যমে বাস বিক্রি করতে।” তিনি আরও বলেন, “পর্ষদের অন্যতম সদস্য তথা তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক সঞ্জয় বক্সী চেয়েছিলেন চিরাচরিত পদ্ধতিতেই বাতিল বাস বিক্রি হোক। কিন্তু স্বচ্ছতা বজায় রাখতে আমরা এমএসটিসি লিমিটেডের মাধ্যমে বাস বিক্রি করতে চাই।” সঞ্জয়বাবুর বক্তব্য, “কী ভাবে নিগমের আয়বৃদ্ধি করা যায়-- সকলেরই তা লক্ষ্য হওয়া উচিত। নিগমে আমরা সবাই নতুন এসেছি। গোড়ায় আমার এ ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা ছিল না। এখন আমিও মনে করি এমএসটিসি-র মাধ্যমে বাস বিক্রি করাই ভাল।”
সিএসটিসি-র মোট বাসের সংখ্যা ৮৭৮। দৈনিক রাস্তায় চলে কমবেশি ৪৭০টি। শহরে চলার জন্য বরাদ্দ ৬৬৮। চলে গড়ে ৩৬৬টি। অর্থাৎ অর্ধেকের উপরে বাস বসে থাকছে। কারণ হিসেবে এক নিগম-কর্তা বলেন, “বসে থাকা বাসগুলোর বেশির ভাগই পুরনো। চালাতে গেলে বেশি ডিজেল লাগছে। তাতে বাড়ছে লোকসানের পাল্লা।”
বসিয়ে রাখা বাসগুলো কেন ডিপোয় পড়ে আছে? কর্তৃপক্ষ জানান, “এ বার ২১৮টি পুরনো বাস বিক্রি হবে। এর মধ্যে একটি ‘ত্রিতলিকা’।” এক সময়ে মূলত এল ৯ রুটে চলত এই তিনতলা বাস। প্রচুর তেল লাগে বলে তা বসিয়ে দেওয়া হয় কিছু বছর আগে। এটি পড়ে আছে বেলঘরিয়া ডিপোয়।
এর পরেও বিভিন্ন ডিপোয় রয়ে যাবে সিএসটিসি-র মোট অচল ৪০৮ বাসের প্রায় অর্ধেক। এর মধ্যে থাকছে ভ্রাম্যমাণ গ্রন্থাগার হিসেবে ব্যবহৃত দু’টি বাসও। প্রয়াত পরিবহণমন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তীর নির্দেশে বাস দু’টি তাঁর স্ত্রী-র স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে দেওয়া হয়েছিল। কিছু ডিপোয় বছরের পর বছর পড়ে থাকা বাসের গায়ে লতাপাতা ছেয়ে গিয়েছে। এগুলো কেন বিক্রি করা হচ্ছে না? পরিবহণ দফতরের এক পদস্থ অফিসার বলেন, “কোন কোন বাস বাতিল চিহ্নিত করে বিক্রি করা হবে, তা ঠিক করতে নিগমের একটি কমিটি আছে। বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখে তারাই বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়।” |