গত ৮ তারিখ কমিটি ঘোষণার পরে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বৈঠকে বসে অটো-নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রূপরেখা তৈরির কথা ছিল তাদের। পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের বেঁধে দেওয়া সেই সময়সীমার পরেও ৯৬ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এক বারের জন্যও বৈঠকে বসেনি রাজ্য সরকারের ওই কমিটি। ঘোষণার এক সপ্তাহের মাথায় রবিবার জানা গেল, কমিটির চেয়ারম্যান কে হবেন, তা ঠিক হয়নি সাত দিনেও। আইএএস অফিসার তথা রাজ্যের ভূতল পরিবহণ নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আশিস ঠাকুরকে রবিবার কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে। মন্ত্রীর ঘোষণা, আজ সোমবারই বৈঠকে বসবে কমিটি।
গত ৮ এপ্রিল অটো ইউনিয়নগুলির সঙ্গে বৈঠকের পরে পরিবহণমন্ত্রী রাজ্য সরকারের ওই কমিটির কথা ঘোষণা করেন। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছিল পরিবহণ দফতরেরই যুগ্মসচিব বিশ্বজিৎ দত্তকে। ৭২ ঘণ্টায় ওই কমিটি বৈঠক করে অটো-নিয়ন্ত্রণে প্রাথমিক রূপরেখা তৈরি করবে বলে জানান মন্ত্রী।
কমিটির কোনও বৈঠকই গত এক সপ্তাহে হয়নি কেন? পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, কমিটির মাথায় কোনও আইএএস অফিসারকে বসানো যায় কি না, তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি পরিবহণমন্ত্রী। তাই এত দেরি। সোমবারের বৈঠক সম্পর্কে মদনবাবু বলেন, “ওই কমিটি যাতে সর্বাঙ্গসুন্দর হয়, সেই চেষ্টা করছিলাম। সোমবার সেই বৈঠক হবে। আমি নিজে সেখানে উপস্থিত থাকার চেষ্টা করব।”
কমিটিতে পাবলিক ভেহিক্লস ডিপার্টমেন্টের অধিকর্তা তমোনাশ ঘোষ, সহ-অধিকর্তা সব্যসাচী বাগচী, স্টেট ট্রান্সপোর্ট অথরিটির ভাইস চেয়ারম্যান বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় রয়েছেন। থাকার কথা সল্টলেক, হাওড়া ও কলকাতার পুলিশ কমিশনার কিংবা তাঁদের প্রতিনিধিদের। কমিটিতে এক জন আইনজীবী, পেট্রোল ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিও রয়েছেন। এ দিন নেওয়া হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কলকাতা ও হাওড়ার আরটিও-দের।
অটো নিয়ে কমিটির ভূমিকা কী হবে, এ দিন তার কিছুটা ইঙ্গিত দিয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী। তিনি জানান, অটোগুলিকে পাঁচটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। একটি শ্রেণির ক্ষেত্রে পারমিট থেকে শুরু করে সরকারি গেজেটে প্রকাশিত বৈধ রুটের পারমিট সবই রয়েছে। দ্বিতীয় শ্রেণির বৈধ নথি থাকলেও সরকারি গেজেটে নির্দিষ্ট করা অটো রুটের পারমিট নেই। তৃতীয় শ্রেণির অটোর রেজিস্ট্রেশন থাকলেও রুট নির্দিষ্ট নয়। চতুর্থ শ্রেণির অটোর রেজিস্ট্রেশন রয়েছে, পারমিট নেই। পঞ্চম শ্রেণির অটোগুলির কোনও বৈধ নথিই নেই। এই সব ক’টি শ্রেণির অটোকে একটি নির্দিষ্ট নিয়মে কী ভাবে বাঁধা যায়, তা খতিয়ে দেখবে কমিটি।
তবে শেষ পর্যন্ত অটোর ভাড়া যে বাড়বে না, এ দিন তা ফের স্পষ্ট করে দেন মদনবাবু। তাঁর কথায়, “অটোচালকদের বেশির ভাগই আসেন নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার থেকে। তাই ভাড়া না বাড়লেও অটোতে বিকল্প রোজগারের পথ কী হতে পারে, তা-ও ভাবনাচিন্তা করবে নবগঠিত কমিটি।” |