চাষির অপমৃত্যু, ঋণ ও চাষে ক্ষতিকে দায়ী করছে পরিবার
স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে কাটোয়ার এক ভাগচাষির। শনিবার রাতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত ওই ব্যক্তির নাম বক্রেশ্বর মণ্ডল (৩৮)। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, সম্প্রতি ঝড়-বৃষ্টিতে বোরো চাষে ক্ষতি ও চাষ করতে গিয়ে দেনা হয়ে যাওয়ার জেরেই আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, কাটোয়ার ভালশুনি গ্রামের বাসিন্দা বক্রেশ্বরবাবু শুক্রবার বিকেলে বাড়িতেই কীটনাশক পান করেন। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় বক্রেশ্বরবাবুকে প্রথমে কাটোয়া মহকুমা হসাপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে সেখান থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। শনিবার গভীর রাতে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। রবিবার মৃতদেহের ময়না-তদন্ত হয়।
বক্রেশ্বরবাবুর পরিবার বিপিএল তালিকাভুক্ত। তাঁর স্ত্রী খুকু মণ্ডল জানান, মোট চার বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছিলেন তাঁর স্বামী। তার মধ্যে অন্যের জমি ৩ বিঘা ৫ কাঠা ও নিজের ১৫ কাঠা। এ জন্য এলাকার মহাজনদের থেকে মোট ২২ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। এ দিন বর্ধমান পুলিশ মর্গের সামনে দাঁড়িয়েই তাঁর দাদা সহদেব মণ্ডলের অভিযোগ, “কয়েক দিন আগে ঝড়ের দাপটে ভাইয়ের জমির সমস্ত ধান নষ্ট হয়ে যায়। ধার করে চাষ করেছিল। ফসল নষ্টের জের আর ঋণ শোধ না করতে পারার আশঙ্কাতেই ভাই আত্মঘাতী হয়েছে।” বক্রেশ্বরবাবু ও খুকুদেবীর দুই ছেলে-মেয়ে। ছেলে সপ্তম শ্রেণি ও মেয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে।
স্থানীয় গীধগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কংগ্রেসের করুণাময় ভট্টাচার্য বলেন, “ঝড়-বৃষ্টির জেরে এলাকার অনেকেরই ধান নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বক্রেশ্বর ঋণ করে চাষ করেছিলেন। তাঁর পরিবারের লোকেরা আমার কাছে এসেছিলেন ঘটনার কথা জানাতে। আমি বিডিও-কে জানিয়েছি। স্থানীয় প্রশাসন যাতে ওই চাষির পরিবারটিকে আর্থিক সাহায্য করে, সেই আবেদনও জানিয়েছি।”
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যুগ্ম বিডিও এবং মহকুমা কৃষি আধিকারিক (প্রশাসন) এ দিন সন্ধ্যায় গ্রামে যান। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের জানান, ঝড়-বৃষ্টিতে চাষে ক্ষতি হয়েছে। তবে সব ধান নষ্ট হয়ে গিয়েছে, এ কথা ঠিক নয়। জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা বলেন, “আমি এমন ঘটনার কথা জানি না। কেউ এ রকম কোনও খবর আমাকে দেয়নি।”
জেলা কৃষি দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর শ্যামল দত্ত বলেন, “কালবৈশাখী ও শিলাবৃষ্টির দাপটে কালনা ও কাটোয়ার প্রায় ২০ হাজার হেক্টরে বোরো চাষে ক্ষতি হয়েছে। তার মধ্যে ২০০ হেক্টরের ফসল পুরোপুরি নষ্ট হতে পারে বলে আমাদের আশঙ্কা। তবে এলাকার ধানের ফলন যদি গত পাঁচ বছরের গড় ফলনের চেয়ে কম না হয়, তা হলে চাষিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া সম্ভব হবে না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.