মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের অফিসারের নাম করে ভুয়ো ফোন পেলেন কাটোয়ার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট তথা ভারপ্রাপ্ত মহকুমাশাসক প্রশান্তকুমার গুহ। ঘটনাটি জানিয়ে গত শুক্রবার বিকেলে কাটোয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন প্রশান্তবাবু। অভিযোগ পেয়েই তদন্তে নেমেছে পুলিশ। তবে কে বা কারা ওই ফোন করেছিল, তা এখনও জানা যায়নি।
প্রশান্তবাবু লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের ‘অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি’ (ওএসডি) শঙ্খশুভ্র চক্রবর্তীর পরিচয় দিয়ে গত ১১ এপ্রিল তাঁর মোবাইলে ফোন করেন এক ব্যক্তি। ফোনে তাঁকে বলা হয়, প্রতারণার অভিযোগে হুগলির শ্যাওড়াফুলি থেকে সিপিএম নেতা-সহ যে দু’জনকে সম্প্রতি ধরেছে কাটোয়া থানার পুলিশ, জেল হাজতে থাকা সেই দু’জন যেন কোনও মতেই জামিন না পান। কাটোয়া আদালতের সরকারি আইনজীবী কাঞ্চন মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রশান্তবাবুকে যোগাযোগ করতেও অনুরোধ করে ওই ‘অপরিচিত’ ব্যক্তি।
একই সঙ্গে প্রশান্তবাবু অভিযোগপত্রে জানিয়েছেন, তিনি শঙ্খশুভ্রবাবুকে সব জানান। ‘ওএসডি’ প্রশান্তবাবুকে বলেন যে, এক জন ‘প্রতারক’ এই কাজ করছে এবং তিনি বিষয়টি পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের জানাচ্ছেন। সব শুনে সন্দেহ হয় সরকারি আইনজীবীরও। খোঁজ নিয়ে প্রশান্তবাবুও জানতে পারেন, মহাকরণ থেকে এমন কোনও ফোনই তাঁকে করা হয়নি। কাঞ্চনবাবুর কথায়, “ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট আমাকে ডেকেছিলেন। থানায় অভিযোগ হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করতেই ওই ভুয়ো ফোন। পুলিশ অবিলম্বে দোষীকে গ্রেফতার করুক।”
যে মামলা নিয়ে ওই ভুয়ো ফোন, সেটি আর্থিক প্রতারণার। গত ৭ এপ্রিল চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে হুগলি সিপিএমের বৈদ্যবাটি লোকাল কমিটির সদস্য সুবীরকুমার রায় ও স্থানীয় সমবায় ব্যাঙ্কের কর্মী সুনীলকুমার রায়কে শ্যাওড়াফুলি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কাটোয়ার এসিজেএম তাঁদের ১২ এপ্রিল পর্যন্ত জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন। ধৃতদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি কাটোয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বর্ধমান শহরের বড়নীলপুর এলাকার বাসিন্দা সুব্রত রায়। তাতে তিনি জানান, সমবায় ব্যাঙ্কে চাকরি দেওয়ার নাম করে ওই দু’জন এবং বড়নীলপুরেরই বাসিন্দা বিশ্বেশ্বর রায় তাঁর কাছ থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা নেন। বিশ্বেশ্বরকে পুলিশ এখনও ধরতে পারেনি। পুলিশ জানিয়েছে, বর্তমানে মামলাটি অতিরিক্ত জেলা জজের এজলাসে রয়েছে। আজ, সোমবার ওই দু’জনের জামিনের জন্য আবেদন করার কথা তাঁদের আইনজীবীর।
মন্ত্রী কিংবা তাঁদের দফতরের অফিসারদের নাম করে ভুয়ো ফোনের ঘটনা এই প্রথম নয়। গত বছর শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম করে টাকা চেয়ে বাঁকুড়ার জেলাশাসক মহম্মদ গুলাম আলি আনসারিকে ফোন করেছিল এক যুবক। যদিও পরে ওই যুবককে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। একই রকম ভাবে নানা কারণে অন্য জেলাশাসকদেরও ফোন করার অভিযোগ উঠেছিল নদিয়ার ওই যুবকের বিরুদ্ধে। |