নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস স্টপে ঢুকে দুই যাত্রীকে পিষে লাগোয়া বাড়ির দেওয়ালে ধাক্কা দুমড়ে গেল একটি বেসরকারি বাস। বুধবার সকালে মালদহের রতুয়ার ভাদো বাগুয়া মোড়ে সামসি-মালদহ রাজ্য সড়কে ঘটনাটি ঘটে। ওই দুর্ঘটনায় জখম হয়েছেন ১৪ জন। তাঁদের মধ্যে ৪ জনকে গুরুতর জখম অবস্থায় মালতিপুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাঁরা ওই বাসের যাত্রী ছিলেন। পুলিশ জানায়, মৃতদের নাম সায়েদ আলি (২৪) এবং মহম্মদ মফিজুদ্দিন (৩৮)। দুর্ঘটনার পরে ক্ষতিপূরণ সহ এলাকায় যান নিয়ন্ত্রণের দাবিতে সকাল ৮টা থেকে প্রায় দু’ঘন্টা পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় বাসিন্দারা। অবরোধের জেরে নাকাল হতে হয় নিত্যযাত্রীদের। ঘটনার পরে বাস ফেলে চালক ও কন্ডাক্টর পালিয়ে যায়। মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসস্টপে ঢুকে পড়ে। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা দুই যাত্রীকে পিষে একটি বাড়িতে ধাক্কা মারে। বাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাসিন্দাদের দাবি মেনে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশি নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি এলাকায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, হরিশ্চন্দ্রপুরের কুশিদা থেকে মালদহগামী বাসটি আচমকা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রচন্ড গতিতে ডান দিকে বাস স্টপে ঢুকে পড়ে। ওই সময় সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন কয়েকজন যাত্রী। হুড়মুড়িয়ে বাসটি ঢুকে পড়ায় তাঁরা পালানোর সুযোগ পায়নি। চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান দু’জন। বাসের ধাক্কায় গুরুতর জখম হন ৪ জন। তাঁদের মালতিপুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এদের মধ্যে মহম্মদ জাকির ও শেখ জাহিরের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাসটি প্রচন্ড গতিতে ছুটে আসে। বাস স্টপের পিছনে লতিফুর রহমান নামে এক শিক্ষকের বাড়ির সামনের পাকা কয়েকটি খুঁটি গুঁড়িয়ে শোওয়ার ঘরের দেওয়ালে ধাক্কা মেরে থামে। ফাটল ধরে ওই বাড়ির দেওয়ালে। বিকট শব্দ শুনে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান পরিবারের লোকজন। শিক্ষক লতিফুর রহমান বলেন, “আওয়াজ শুনে প্রথমে কিছু বুঝতে পারিনি। দিশেহারা হয়ে পড়ি। কোনও মতে পালিয়ে বাঁচি। ঘরের দেওয়ালে এতটাই ফাটল ধরেছে যে কোনও সময় ভেঙে পড়তে পারে।” এ দিন সকালেই ক্ষতিপূরণ সহ যান নিয়ন্ত্রণের দাবিতে পথ অবরোধ করে বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, বাগুয়া মোড়ে ওই ঘটনা প্রথম নয়। মাঝেমধ্যে ছোটখাটো দুর্ঘটনা লেগেই থাকে। বাসের গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে লাভ হয়নি। যদিও এ দিন পুলিশের কর্তারা ঘটনাস্থলে পৌছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে অবরোধ উঠে যায়।” |