|
|
|
|
ফের ফিরল সেপ্টেম্বরের আতঙ্ক |
বুধবার দুপুর থেকে সন্ধে পর্যন্ত অন্তত ১৫ বার মৃদু কম্পন |
অনির্বাণ রায় • জলপাইগুড়ি |
ছয় মাস আগের স্মৃতি উস্কে বুধবার দুপুর থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত অন্তত ১৫ বার মৃদু কম্পনে আতঙ্কে কাটালেন উত্তরবঙ্গ ও সিকিমের বাসিন্দারা। এ দিন দুপুর ২ টা বেজে ৮ মিনিটে সুমাত্রার পশ্চিম উপকূল এদিনের ভূকম্পনের উৎসস্থল হলেও উত্তরবঙ্গ ও সিকিমেও মৃদু ভূকম্পন অনুভূত হয়। তার পরে ঘন ঘন বেশ কয়েকটি ‘আফটার শক’ হয়েছে বলে আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই কম্পনগুলিও উত্তরবঙ্গে অনুভূত হয়েছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের গ্যাংটক শাখা সূত্রে জানা গিয়েছে, দুপুর থেকে সন্ধ্যে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত অন্তত ১৫ বার কেঁপে উঠেছে উত্তরবঙ্গ ও সিকিম। তবে সেই কম্পনের মাত্রা ছিল সামান্যই। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, “দুপুরে ভূমিকম্পের পরেই ক্রমাগত আফটার শক হতে থাকে। সন্ধ্যে পর্যন্ত ১৫টি আফটার শক ধরা পড়েছে। এর ফলেই বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। গ্যাংটক এবং লাগোয়া এলাকায় বেশি কম্পন অনুভূত হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতি বা ধসের খবর এখনও নেই।” মৃদু কম্পন হলেও তা ঘন ঘন হওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। ভূমিকম্পের পরে গ্যাংটকের মহাত্মা গাঁধী মার্গে পর্যটকরা আতঙ্কে নেমে আসেন। গ্যাংটক লাগোয়া বালুয়াখনি এলাকাতেও বাসিন্দারা বাড়ি থেকে নেমে রাস্তায় চলে আসেন। গ্যাংটকের এক হোটেল কর্মী বিশু মন্ডল বলেন, “গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসের ভূমিকম্পের ভয়াবহ স্মৃতি কোনও দিনই মন থেকে মুছবে না। তাই এদিন দুপুরে দু’বার কম্পন টের পাওয়ার পরেই হোটেলে ফিরতে সাহস পাচ্ছি না। এলাকার বাসিন্দারাও সকলেই রাস্তায় নেমে আসেন।” একই ভাবে দার্জিলিঙের বাসিন্দারাও শঙ্কিত হয়ে পড়েন। হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইন্সস্টিটিউটের কিউরেটর চন্দ্রনাথ দাস জানান, কাঁপুনি টের পেতেই বহু মানুষ রাস্তায় নেমে পড়েন। চন্দ্রনাথবাবু বলেন, “গত সেপ্টেম্বরের স্মৃতি এখনও বেশ টাটকা। সে জন্য কেউই ঝুঁকি নিতে চাননি। যাই হোক, শেষ পর্যন্ত এ বার অন্তত কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।” দুপুরের প্রথম ভুমিকম্প অনেকেই টের না পেলেও কলকাতা-সহ দেশের অন্যপ্রান্তে ভুমিকম্পের খবর পেয়ে শিলিগুড়ির হাকিমপাড়া, সুভাষপল্লি, দার্জিলিঙের ম্যাল, জলপাইগুড়ির সমাজপাড়া, স্টেশন রোড, কদমতলা এলাকার অনেক বাসিন্দারাই রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। ঘনঘন উঁলু শাখের ধ্বনি শোনা যায়। শহরের বহুতল আবাসন এবং বাজারগুলি থেকেও বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে রাস্তায় নেমে আসেন। কোচবিহার, মালদহেও মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে জলপাইগুড়ি শহরের দিনবাজার এলাকায় বেশ কিছু বাড়ি ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দিনবাজারের বাসিন্দা বিজয় অগ্রবাল বলেন, “এদিনও ভূমিকম্প টের পেয়েছি। তারপরে টেলিভিশনে যখন কলকাতার ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতির ছবি দেখতে পাই, তখন গত সেপ্টেম্বরে জলপাইগুড়ির দিনবাজারের ছবি চোখে ভেসে ওঠে। তাই আতঙ্কে তিন তলা বাড়ি থেকে নিচে নেমে আসি। ভাবছি রাতে আর তিনতলায় থাকা সমীচিন হবে না।” জলপাইগুড়ির জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্র বলেন, “বেশ কিছু এলাকায় সাধারণ বাসিন্দাদের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। তবে ক্ষয়ভতির কোনও রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি।” |
|
|
|
|
|