ধর্মঘটের দিন কাজে আসা এবং না-আসা, দু’টো অধিকারই কর্মীদের আছে বলে মন্তব্য করেছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। কিন্তু তাঁরই অধীন স্কুলশিক্ষা দফতর ২৮ ফেব্রুয়ারির ধর্মঘটে কর্মস্থলে অনুপস্থিতির জন্য প্রায় ৪৯ হাজার স্কুলশিক্ষকের এক দিনের বেতন কাটার নির্দেশ দিয়েছে। এবং এপ্রিলের বেতন থেকেই তা কাটা হবে বলে স্কুলশিক্ষা সচিব বিক্রম সেন বুধবার জানিয়ে দিয়েছেন।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি, ধর্মঘটের দিন গরহাজির সরকারি কর্মীদের শাস্তি হিসেবে এক দিনের বেতন কাটা এবং কার্যকাল থেকে একটি দিন ছেঁটে নেওয়া শুরু হয়েছে। রাজ্যের নতুন সরকার জানিয়েছিল, ওই ধর্মঘটের দিন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে গরহাজির শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদেরও এক দিনের বেতন কেটে নেওয়া হবে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় তাতে আপত্তি জানায়। বিতর্কও কম হয়নি। খোদ শিক্ষামন্ত্রীও ধর্মঘটের দিন আসা বা না-আসাটা কর্মীদের নিজস্ব ব্যাপার বলে মেনে নিয়েছিলেন। কিন্তু বিক্রমবাবু বুধবার বলেন, “প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক মিলিয়ে প্রায় তিন লক্ষ ২৫ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা আছেন। তাঁদের ৮৫-৮৬ শতাংশই ধর্মঘটের দিন উপস্থিত ছিলেন। বড়জোর ১৫ %সে-দিন আসেননি। এপ্রিলের বেতন থেকেই তাঁদের এক দিনের বেতন কাটা হবে।”
সরকারি স্কুল ও কলেজ ছাড়া সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল-কলেজে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের সরকার নিয়োগ করে না। তাঁদের নিয়োগ করে পরিচালন সমিতি। আর বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হয় নিজেদের আইনে। তা হলে রাজ্য সরকার কী করে এই শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের বেতন কাটার নির্দেশ দিচ্ছে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে শিক্ষকমহলে। বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন এর বিরোধিতা করে সরকারকে স্মারকলিপিও দিয়েছে।
বিক্রমবাবু এ দিন বলেন, “সরকারি নিয়ম মেনেই সবাই নিযুক্ত হয়েছেন। কেউই আইনের বাইরে নন।” আর কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে কী হবে? রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, ধর্মঘটে অনুপস্থিতি নিয়ে এখনও অনেক কলেজ রিপোর্ট দেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিও কিছু জানায়নি। তাই সেখানকার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন কাটার ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। |