দলে চোর, ‘সিন্ডিকেট-পার্টনার’, ‘আক্ষেপ’ শোভনদেবের
লের কেউ ‘সিন্ডিকেট-ব্যবসা’র সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না বলে আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এখনও যে ‘সিন্ডিকেট-পার্টনার’রা দলে রয়েছে, তা নিয়ে প্রকাশ্যেই সরব হলেন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের প্রাক্তন সভাপতি তথা বিধানসভায় শাসকদলের মুখ্য সচেতক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। বুধবার রাজ্য সরকারি কর্মীদের একটি কনভেনশনে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, “আমাদের দলেও অনেক চোর, ডাকাত, সিন্ডিকেট-পার্টনার রয়েছে।” তবে তাঁর আশা, দল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
জ্যোতি বসুর জমানায় বাম-সরকারকে ‘ঠিকাদারদের সরকার’ বলে মন্তব্য করেছিলেন তাঁর মন্ত্রিসভার বর্ষীয়ান সদস্য বিনয় চৌধুরী। এ দিন শোভনদেববাবুর মন্তব্য শুনে রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের সেই কথা মনে পড়ে গিয়েছে। দলে ‘বেনোজল’দের বিরুদ্ধে সমালোচনা করে এ দিন শোভনদেববাবু আরও বলেন, “মা-মাটি-মানুষের স্লোগান দেবেন, অথচ তার অর্থ বুঝবেন না! কেউ কেউ মনে করেন, শুধু মা-মাটি মানুষ জিন্দাবাদ আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ বললেই হবে!”
শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়: মা-মাটি-মানুষের স্লোগান দেবেন, অথচ তার অর্থ বুঝবেন না! কেউ কেউ মনে করেন,
শুধু মা-মাটি মানুষ জিন্দাবাদ আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ বললেই হবে! ছবি: নিজস্ব চিত্র
সম্প্রতি শোভনদেববাবুকে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র সব পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ দিনের সভায় তাঁর বক্তৃতায় স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই কিছু কথা বেরিয়ে আসে, যা থেকে তাঁর অভিমানও প্রকাশ পেয়েছে। তৃণমূলের প্রবীণ বিধায়কের কথায়, “আমাকে আইএনটিটিইউসি-র দু’টি স্তর থেকেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাতে আমার কোনও ক্ষোভ নেই। দল মনে করেছে নতুন নেতৃত্ব আনা দরকার। তাই তা করা হয়েছে। আমি শুধু আমার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, আমি যে ইউনিয়নগুলি করি সেগুলি করতে পারব কি না। আমার নেত্রী সেই অনুমতি দিয়েছেন। এমনকী, এই সভায় আসার নির্দেশও তিনি দিয়েছেন।”
তবে কনভেনশন নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেই ‘বিতর্ক’ তৈরি হয়েছে। আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভানেত্রী দোলা সেন বলেন, “রাজ্য সরকারি কর্মীরা তো তাঁদের চাকরির নিয়ম-কানুন অনুযায়ী কোনও দলীয় রাজনীতির অনুমোদন নিয়ে সংগঠন করতে পারেন না। তাই আইএনটিটিইউসি-র সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই।” বস্তুত, এই সভার আয়োজকরা দোলা বা তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ কোনও নেতা-মন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানাননি। আমন্ত্রণ পেয়েও সভায় যাননি রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়। পরে তিনি বলেন, “আমি সরকারি কাজে ব্যস্ত ছিলাম। আর এ দিনই আমি বাঁকুড়া থেকে শহরে ফিরেছি।”
আইএনটিটিইউসি-র অনুমোদিত সরকারি কর্মী সংগঠনের ওই ‘বিক্ষুব্ধ’ সদস্যদের সভায় যোগ দেওয়া প্রসঙ্গে শোভনদেববাবু বলেন, “এ নিয়ে বিতর্কের কিছু নেই। সংবিধান আমাদের সংঘবদ্ধ হয়ে গণতান্ত্রিক পথে আন্দোলন করার অধিকার দিয়েছে। ট্রেড ইউনিয়নগুলি বছরের এই সময়েই কনভেনশন করে।” কারও নাম করে কোনও সমালোচনা না-করলেও বক্তৃতায় শোভনদেববাবু বলেন, “১৯৯৮ সালে আমরা খুব কম লোকই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে কংগ্রেসের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বেরিয়ে নতুন দল গঠন করি। এখনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই আমার নেত্রী। কোনওদিন প্রকাশ্যে বা গোপনে ওঁর সমালোচনা বা নিন্দা করিনি।”
তবে কনভেনশনের উদ্যোক্তা ‘পূর্বতন’ আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত রাজ্য সরকারি কর্মীদের সংগঠন ‘ইউনাইটেড স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ ফেডারেশন’-এর নেতারা শোভনদেববাবুর উপস্থিতিতেই বর্তমান সরকারের সমালোচনা করেন। কর্মীদের বিভিন্ন দাবি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে কনভেনশনের অন্যতম আহ্বায়ক অনিমেষ ঘোষ প্রশাসনকে ‘নড়বড়ে’ বলেন। তিনি সরাসরিই বলেন, “আমাদের দফতরে তুঘলকি রাজত্ব চলছে।” সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি সৌম্য বিশ্বাসও রাখঢাক না-করেই বলেন, “বর্তমান নেতৃত্বকে আমরা মানি না। শোভন’দাই আমাদের নেতা।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.