শহরের দু’টি রাস্তাই গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘদিন ধরে উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ার কারণে বর্তমানে একেবারেই চলার অযোগ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। একাধিকবার জেলা প্রশাসনের সর্বত্র সংস্কারের দাবি জানানো হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। খারাপ রাস্তার কারণে ছোট-বড় দুর্ঘটনারও বিরাম নেই। ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ তাই প্রতিবাদ জানাতে বুধবার রাস্তায় নেমে পড়েন।
বসিরহাট কলেজের সামনে এ দিন সকালে টাকি রোডে এবং শ্মশান মোড়ের কাছে ইটিন্ডা রোডে পথ অবরোধ করেন স্থানীয় মানুষ। কলেজের সামনে এক ঘণ্টা অবরোধ হলেও শ্মশান মোড়ের কাছে ইটিন্ডা রোডে রাস্তা কেটে দীর্ঘক্ষণ ধরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। এক ফলে শহরজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। চরম দুর্ভোগে পড়েন নিত্যযাত্রী থেকে সাধারণ মানুষ।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বসিরহাট শহরের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে মেরামতির অভাবে ইটিন্ডা রোডের একটা বড় অংশ প্রচণ্ড খারাপ। দীর্ঘ আন্দোলনের পরে সম্প্রতি কিছুটা মেরামতির কাজ হলেও বেহাল বাকি অংশের কাজই শুরু হয়নি। জামরুলতলার কাছে শ্মশান মোড় থেকে পুরাতন বাজার হয়ে থানা পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তার বর্তমান অবস্থা অত্যন্ত বিপজ্জনক। অধিকাংশ জায়গাতেই পিচ-পাথর উঠে গিয়ে বড় বড় ডোবার আকার নিয়েছে। মাঝেমধ্যে ওই সব ডোবা ভরাট করতে পূর্ত দফতর থেকে ইট-সুরকি ফেলা হলেও গাড়ির চাকায় তা উঠে গিয়ে ফের আগের চেহারায় ফিরে যাচ্ছে। দুর্ঘটনাও ঘটছে। |
অবরুদ্ধ ইটিন্ডা রোড। ছবি: নির্মল বসু। |
এলাকার ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, শুকনো দিনে ধুলোর কারণে ব্যবসা প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার জোগাড় হয়েছিল। এখন আবার বৃষ্টি শুরু হওয়ায় রাস্তার জমা জল-কাদায় দোকানের জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে ব্যবসা বন্ধ হওয়ার অবস্থা দাঁড়িয়েছে। ফলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। বার বার প্রশাসনকে সমস্যার কথা জানানো হলেও তাদের কোনও হেলদোল নেই।
মঙ্গলবার বিকেলে ঝড়-বৃষ্টি হলে ব্যবসায়ীদের একাংশই রাস্তা কেটে জল সরানোর ব্যবস্থা করেন। ওই দিন সন্ধ্যা থেকেই রাস্তায় পাইপ, বেঞ্চ ফেলে অবরোধ শুরু করেন। বুধবার বিকেলেও তা অব্যাহত ছিল। বিক্ষোভকারীদের তরফে আবুজার মোল্লা, বাপ্পা মোদক, আবু সেলিম গাজি, গগনদীপ মোদক বলেন, “খানাখন্দে ভরা রাস্তা মেরামতির জন্য বার বার প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছি। কিন্তু প্রতিশ্রুতি পাওয়া ছাড়া আরও কোনও কাজ হয়নি। রাস্তার কারণে আমাদের ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে। পথচারীরা জখম হচ্ছেন। তাই রাস্তা মেরামতির জন্য ব্যবস্থা না নেওয়া হবে পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।’’ রাস্তা মেরামতি নিয়ে পূর্ত দফতরের অবশ্য কোনও বক্তব্য জানা যায়নি। দফতরের কর্তাদের সঙ্গে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁদের মোবাইল ফোনের সুইচ অফ ছিল।
অন্যদিকে এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ বসিরহাট কলজের সামনে টাকি রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান বামবিরোধী ছাত্রছাত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ, বাম সমর্থিত একদল বহিরাগত কলেজে ঢুকে অধ্যক্ষের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। প্রতিবাদ করলে তাঁদের উপরে হামলা করে ওই বহিরাগতরা। পরে পুলিশ গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের বুঝিয়ে অবরোধ তুলে দেয়। বামদের পক্ষ থেকে অবশ্য তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ রামলাল রায় বলেন, “বিনা অনুমতিতে আমার ঘরে কয়েকজন বহিরাগত ঢুকে চাকরির দাবি জানায়। অশালীন আচরণ করে ও হুমকি দেয়। ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হয়েছে।” |