|
|
|
|
কর্তাদের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ঘাটাল ব্যাঙ্কে |
ঋণ আদায় কমে মাত্রই ৪৮ শতাংশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঘাটাল |
মাথায় হাত ঘাটালের কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন ব্যাঙ্কের পরিচালন কর্তৃপক্ষের! রাজ্য সমবায় কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন ব্যাঙ্কের অধীন এই ব্যাঙ্কটি গত ৩১ মার্চ শেষ হওয়া আর্থিক বছরে (২০১১-১২) প্রদত্ত ঋণের মাত্র ৪৮ শতাংশই আদায় করতে পেরেছে। অথচ দশ বছর আগেও, ২০০১, ’০২ সালে ঋণ দেওয়া, আদায়, পরিচালনার দক্ষতায় রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কগুলির মধ্যে সেরার শিরোপা পেয়েছিল ঘাটালের এই ব্যাঙ্ক।
তবে, গত কয়েক বছর ধরেই ঋণ-আদায়ের ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কের ‘পারফরম্যান্স’ নিম্নমুখী হচ্ছিল। ২০০৮-২০০৯ সালে ১৭ কোটি ২০ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকা ঋণ দিয়ে আদায় হয়েছিল ৬৭ শতাংশ। কিন্তু ২০০৯-২০১০-এ ২১ কোটি ৩৯ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকা ঋণ দেওয়া হলেও আদায় হয়েছিল মাত্রই ৩৯ শতাংশ। আর গত বার, ২০১০-২০১১-এ ১৩ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা ঋণ দেওয়া হয়, আদায় হয়েছিল মোটে ৫৩ শতাংশ। এ বার আরও কমে হল ৪৮ শতাংশ। গত বারের চেয়েও ৫ শতাংশ কম। এ বার ঋণ দেওয়া হয়েছিল ১৭ কোটি ৪৫ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা। অনাদায়ী ৫২ শতাংশ ঋণের জেরে রুগ্ণ হতে থাকা ঘাটাল ব্যাঙ্ক এ বার আরও আতান্তরে।
এ বার ঋণ আদায় কমে যাওয়ার জন্য তৃণমূল পরিচালিত সমবায় ব্যাঙ্কটির কর্মকর্তারা আবার নিজেদের দলের মুখ্যমন্ত্রীর একটি নির্দেশকেও অন্যতম কারণ মানছেন। তাঁদের বক্তব্য, ঋণ-আদায়ে কৃষকের বন্ধকী জমি-সম্পত্তি কোনও ভাবেই বাজেয়াপ্ত বা নিলাম করা যাবে না বলে মুখ্যমন্ত্রী মার্চের মাঝামাঝি যে হুঁশিয়ারি দেন, তার জেরেও অনেকে ঋণ-শোধে আগ্রহ দেখাননি। ঋণ আদায়ে ‘জোর’ করার কোনও সুযোগ হয়নি। যদিও, মহকুমায় সমবায় আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত অনেকে ঘাটালের ব্যাঙ্ক-কর্তাদের ‘ব্যর্থতা’, ‘দক্ষতার অভাব’কেও সঙ্কটের কারণ বলে মনে করছেন। ব্যাঙ্কটির গত দু’বারের ঋণ-আদায়ের হারও যে নিম্নমুখী প্রবণতাই তুলে ধরছে, তা-ও মনে করিয়ে দিচ্ছেন তাঁরা। সঙ্কট স্বীকার করেই পরিচালন কমিটির সভাপতি জহরলাল হাজরা বলেন, “ঋণ-আদায়ে ব্যাপক ভাটা পড়েছে। কোটি কোটি টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে। আদায় না হলে চলতি আর্থিক বছরে (২০১২-১৩) বেশি ঋণও আর দেওয়া যাবে না।” অথচ, কৃষি যন্ত্রপাতি কেনা, পান ও ফুল চাষে এই ব্যাঙ্কের ঋণের উপরেই অনেকখানি নির্ভর করেন মহকুমার কৃষিজীবী মানুষ। আতান্তরে পড়তে চলেছেন তাঁরাও। |
|
|
|
|
|