সেচ ব্যবস্থা ঢেলে সাজার উদ্যোগ
বিশ্বব্যাঙ্কের অর্থ সাহায্য, তৈরি হল টাস্ক ফোর্স
বিশ্ব ব্যাঙ্কের আর্থিক সহায়তায় সেচ ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। প্রায় সাড়ে ৪ হাজার প্রকল্পের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রায় ২৩০টি প্রকল্প রূপায়িত হবে। প্রকল্পের খসড়া নিয়ে মঙ্গলবার কালেক্টরেটে এক বৈঠক হয়। উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত, অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) শুভাঞ্জন দাস, জেলা উন্নয়ন ও পরিকল্পনা আধিকারিক প্রণব ঘোষ প্রমুখ। বৈঠকে কোন এলাকায় কী কী প্রকল্প হবে, সেই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। আগামী ৫ বছরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে। কাজের দেখভালের জন্য একটি টাস্ক ফোর্সও গঠন করা হয়েছেযার চেয়ারম্যান হয়েছেন জেলাশাসক।
পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় সেচ ব্যবস্থা এখনও সে ভাবে গড়ে ওঠেনি। ফলে, চাষের কাজে সমস্যা হয়। জলের অভাবে অনেক সময় চাষের কাজ মার খায়। ক্ষতির মুখে পড়েন কৃষকরা। চলতি মরসুমেও জলের অভাবে জেলার বোরো চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে কৃষি দফতর সূত্রে খবর। জেলায় মোট কৃষিজমির পরিমাণ ৭ লক্ষ ৭৩ হাজার ৩৭৫ হেক্টর। এর মধ্যে সেচের সুবিধা রয়েছে ৩ লক্ষ ২৩ হাজার ৯৬৩ হেক্টর জমিতে। জঙ্গলমহলে আবার মোট কৃষি জমি রয়েছে ২ লক্ষ ১২ হাজার ৯৭৮ হেক্টর। এর মধ্যে সেচের সুবিধা রয়েছে ১ লক্ষ ৯ হাজার ২৯ হেক্টরে। বাস্তব পরিস্থিতি আরও খারাপ বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ। তাঁদের বক্তব্য, খাতায়-কলমে যা দেখানো হয়েছে, সেই পরিমাণ জমিতেও সেচের সুবিধা নেই। পরিস্থিতি পাল্টাতে সেচ ব্যবস্থা ঢেলে সাজার পাশাপাশি বৃষ্টির জল ধরে রাখতে ‘জল ধরো-জল ভরো’ প্রকল্প রূপায়ণে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। এর জন্য পুকুর, চেক ড্যাম প্রভৃতি তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ দিকে, জেলায় আবার জলস্তর কমতে শুরু করেছে। যার প্রভাব পড়ছে চাষেও। পর্যাপ্ত জলের অভাবে চাষাবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
পশ্চিম মেদিনীপুরে বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১ হাজার ৫৪২ মিলিমিটার। জেলার উপর দিয়েই বয়ে গিয়েছে কংসাবতী, সুবর্ণরেখা। কিন্তু, তা-ও বিস্তীর্ণ এলাকায় সেচের জল পৌঁছয় না। প্রশাসন সূত্রে খবর, জঙ্গলমহল এলাকায় এ বার বেশি সংখ্যক চেক ড্যাম তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। বৃষ্টির জল উঁচু এলাকা থেকে গড়িয়ে এসে জমা হবে এই চেক ড্যামে। শুষ্ক মরসুমে আবার ওই জলই চাষাবাদ-সহ অন্য কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। পিছিয়ে পড়া এলাকার জন্য বরাদ্দ ইন্টিগ্রেটেড অ্যাকশন প্ল্যানের (আইএপি) অর্থও সেচের উন্নতির জন্য ব্যয় করা হচ্ছে। প্রত্যন্ত এলাকায় তৈরি হচ্ছে গভীর নলকূপ। এত কিছুর পরেও জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা যে এখনও সেচসেবিত নয়সরকারি পরিসংখ্যান থেকে তা স্পষ্ট।
তাই এই সব এলাকায় সেচের পরিকাঠামো গড়ে তুলতে বিশ্বব্যাঙ্কের টাকায় এ বার রিভার লিফট ইরিগেশন, গভীর নলকূপ তৈরি-সহ বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বিশ্ব ব্যাঙ্কের আর্থিক সহায়তায় জেলায় বিদ্যুৎ চালিত ১০১টি ও ডিজেল চালিত ১৫টি রিভার লিফট ইরিগেশন প্রকল্প তৈরি করা হবে। নলকূপ, সেচ খালও তৈরি করা হবে। এক একটি প্রকল্পে কোথাও ৩০ হেক্টর, কোথাও ২০ হেক্টর, কোথাও বা ১০০ হেক্টর জমিতে সেচের সুবিধা পৌঁছনো যেতে পারে। কোন ব্লক কোন প্রকল্প তৈরি করবে, সেই নিয়ে ব্লক স্তর থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছিল জেলা প্রশাসন। সেই মতো জেলায় রিপোর্ট এসে পৌঁছেছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ২৩৬টি প্রকল্প রূপায়িত হবে। এর মধ্যে ১১৬টি রিভার লিফট ইরিগেশন ও ১২২টি গভীর নলকূপ তৈরির প্রকল্প রয়েছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.