তিনি বুঝেছেন, জীবনের চেয়ে কোনও কিছুই দামি নয়। তিনি ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিচ্ছেন, সেই জীবন ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য।
ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে সোমবারই দেশে ফিরেছেন যুবরাজ সিংহ। কথা দিয়েছিলেন, বুধবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হবেন। ধুসর জিন্স, ‘লাভ-১২’ লেখা কালো টি-শার্ট, চোখে সানগ্লাস পরা যুবরাজকে পাওয়া গেল গুরগাওয়ের ‘যুবরাজ সিংহ সেন্টার অব এক্সেলেন্স’-এ। কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ছিলেন যুবরাজ, যখন বলছিলেন: “জীবনের থেকে কোনও জিনিষ দামি নয়। জীবন ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ঈশ্বরকে অনেক ধন্যবাদ।” তিন মাস চিকিৎসার পরে দেশে ফিরলেও যুবরাজকে পুরো সুস্থ দেখাচ্ছিল না। মাঝে মাঝে কাশছেন। মাঝে মাঝে রুমাল দিয়ে ঠোঁট মুছে নিচ্ছেন। কথা বলতে বলতে গলা শুকিয়ে যাওয়ায় জল খেয়ে যাচ্ছিলেন। |
কিন্তু তারও মধ্যে বোঝা যাচ্ছিল, দেশে ফিরতে পেরে কতটা খুশি ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক। বার বার বলছিলেন সে কথা। কিন্তু গোটা দেশ যে প্রশ্নের জবাব চায়, তার কী হবে? কবে ক্রিকেট মাঠে ফিরতে পারবেন আপনি? একটু ভেবে নিয়ে যুবরাজ বলছিলেন, “আশা করছি দু’ মাস পর। তবে এখনও কোনও কিছু নিশ্চিত নয়। এইটুকু বলতে পারি, খুব পরিশ্রম করব। কিন্তু এটা জানি, আবার ক্রিকেট খেলতে মাঠে আমি ফিরবই।” তিনি যখন দেশে ফিরলেন, আইপিএল শুরু হয়ে গিয়েছে। আর তাঁর দল পুণে ওয়ারিয়র্সকে নিয়ে টগবগ করে ছুটছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। সে কথা উঠতেই যুবরাজের প্রতিক্রিয়া, “খেলতে পারছি না বলে অবশ্যই হতাশ। কিন্তু সৌরভ অধিনায়ক হওয়ায় আমি খুব খুশি। ও যে দক্ষতায় ভারতীয় দলকে চালাত, পুণেকেও সে ভাবে চালাচ্ছে। ইচ্ছে আছে ফিট থাকলে আইপিএলে দ্বিতীয় পর্যায়ে মাঠে গিয়ে দাদার খেলা দেখব।” |
ঘুরেফিরে এসেছে সচিন তেন্ডুলকর প্রসঙ্গ। এবং একশোতম সেঞ্চুরির দিন মাঠে থাকতে না পারার হতাশা এখনও যাচ্ছে না যুবরাজের। পাশাপাশি গত দু’মাসের অভিজ্ঞতা থেকে বলছিলেন, “আমেরিকায় আমার চিকিৎসা চলার সময় সচিনের সঙ্গে কথাবার্তা হত। খুব উৎসাহ দিত। লন্ডনে আবার দেখা হয়ে গেল সচিনের সঙ্গে। আমি মিডিয়ার কাছে ব্যাপারটা জানাতে চাইনি। কিন্তু আপনাদের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখা গেল কই!”
মাঠের লড়াই তিনি অনেক জিতেছেন। মাঠের বাইরের লড়াইও। আর তাঁর মতো যাঁরা এই ক্যানসারের শিকার হয়েছেন, তাঁদের উদ্ধেশে যুবরাজের একটাই বার্তা: “হতাশ হবেন না। হাসতে ভুলবেন না। আর লড়াই ছাড়বেন না।” |