নাটকীয় প্রত্যাবর্তনের যাবতীয় সম্ভাবনা তৈরি করেও ম্যাচ জেতা গেল না বটে, কিন্তু বৃহস্পতিবার কলকাতায় পা দেওয়ার আগে রাহুল দ্রাবিড়ের দলবল বুঝিয়ে দিল নাইটদের ঝামেলায় ফেলার ভাল রসদ তাদের আছে!
কে তিনি? রসদের নাম কী? নাইট সমর্থকদের নামটা ভালই চেনা। চরিত্রটির নাম ওয়েইশ শাহ, যিনি একসময় কাটিয়ে গিয়েছেন নাইটদের ড্রেসিংরুমে। মোদ্দা কথা, এক পুরনো নাইটই শুক্রবারের ম্যাচে প্রধান প্রতিপক্ষ হতে যাচ্ছেন গৌতম গম্ভীরের নতুন নাইটদের।
কায়রন পোলার্ড যদি বুধবার ওয়াংখেড়েতে ৩৩ বলে ৬৪ করে থাকেন, তো ওয়েইশ শাহের ব্যাট থেকে বেরোল ৪২ বলে ৭৫! পাঁচটা বাউন্ডারির সঙ্গে, পাঁচটা বিশাল ছক্কা। চোখের সামনে আস্কিং রেট চড়চড় করে চড়ে বসছে কখনও দশ, কখনও এগারোতে। উল্টো দিকে রাহুল দ্রাবিড় বলে কোনও ব্যাটিং-স্তম্ভ নেই। টাইমিংয়ের গণ্ডগোলে তিনি শুরুর দিকেই আউট। কুড়ি ওভারে ১৯৭ তাড়া করতে গিয়ে দলের ২ উইকেট পড়ে গিয়েছে মাত্র ৭ রানের মধ্যে। কিন্তু কোনও কিছুই রুখতে পারেনি ইংরেজ ব্যাটসম্যানের ধুন্ধুমার। কখনও আজিঙ্ক রাহানে, কখনও অশোক মেনেরিয়াকে নিয়ে নিয়ম করে ওভারে ১৬-১৭ নিয়ে গেলেন। মালিঙ্গার বলে লেগ স্টাম্পের দিকে অহেতুক সরে না গেলে কপালে আজ বোধহয় দুঃখই ছিল মুম্বইয়ের। নাইটদের মুখও আরও গোমড়া হত। একটা সময় তো জোর আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছিল, ব্রেন্ডন ম্যাকালাম-মণীশ পাণ্ডে-পল ভলথাটিদের কীর্তির সরণিতে ঢুকে পড়তে চলেছেন শাহ। আসতে চলেছে চলতি আইপিএলের প্রথম সেঞ্চুরি। |
শেষ পর্যন্ত সেটা যে হল না, তার পিছনে যতটা না কৃতিত্ব মালিঙ্গার, তার চেয়ে দোষ বেশি শাহের নিজের। ওয়াংখেড়ের উইকেটে বল ভাল আসছিল ব্যাটে। মুম্বই ব্যাটিংয়ের সময় পোলার্ড-বিস্ফোরণও সেটা বুঝিয়েছে। সচিন বনাম রাহুল মহাযুদ্ধের প্রেক্ষাপট আজ ছিল। কিন্তু সে যুদ্ধের কোনও সুযোগই হয়নি সচিন চোট থেকে পুরোপুরি সেরে না ওঠায়। বরং ভিড়ে ঠাসা ওয়াংখেড়েকে নিয়মিত উত্তেজনা যুগিয়ে গেলেন এই দু’জন। পোলার্ডের ছক্কা দেখে যেমন উল্লাসে ফেটে পড়েছে মুম্বই জনতা, তেমনই শাহের ওভার বাউন্ডারিতেও গ্যালারিতে উৎসব। শেষ তিন ওভারে রাজস্থানের দরকার ছিল ৪০। অশোক মেনোরিয়া ছিলেন, কিন্তু ওই অসহ্য চাপ নেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়নি। একটা ওয়েইশ শাহ থেকে গেলে গল্পটা হয়তো অন্য ভাবে লিখতে হত। |