খড়্গপুর পুরসভা
প্রদেশ নেতৃত্বের সায় নেই, অনাস্থা আনছে না কংগ্রেস
ড়্গপুরে তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে এখনই অনাস্থা আনছে না কংগ্রেস। পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে চেয়ে গত ৩১ মার্চ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যের সঙ্গে দেখা করেন ১৪ জন কংগ্রেস কাউন্সিলর। দলীয় সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত প্রদেশ থেকে অনাস্থা আনার ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত মেলেনি। এ ক্ষেত্রে প্রদেশ সভাপতি আরও কিছু সময় চেয়েছেন। ওই সূত্র জানিয়েছে, কংগ্রেসের একাংশ কাউন্সিলরও চাইছেন না, এখনই পুরবোর্ডের হাতবদল হোক। দলের অন্দরে তাঁদের বক্তব্য, অনাস্থা আনলেই তৃণমূল ক্ষমতাচ্যুত হবে। এ নিয়ে সংশয় নেই। কিন্তু, এই পরিস্থিতিতে যেই ক্ষমতায় আসুক না- কেন, তাঁকে শহরবাসীর ক্ষোভের মুখে পড়তে হবে। এক কংগ্রেস কাউন্সিলরের মন্তব্য,“ গরম পড়তে না- পড়তেই শহরে জলকষ্ট শুরু হয়েছে। পরে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। আমরা কেন জেনেবুঝে এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হব!” জেলা কংগ্রেস সভাপতি স্বপন দুবে বলেন,“ অনাস্থা আনতে চেয়ে খড়্গপুরের দলীয় কাউন্সিলররা প্রদেশ সভাপতির সঙ্গে দেখা করেছিলেন। প্রদেশ থেকে যেমন নির্দেশ আসবে, সেই মতো পদক্ষেপ হবে। তবে এখনও কোনও নির্দেশ আসেনি।”
পশ্চিম মেদিনীপুরে জোট সমীকরন ক্রমেই যেন জটিল হচ্ছে। খড়্গপুরের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ঘাটালেও। খড়্গপুরে যেমন ‘চাপে’ রয়েছে তৃণমূল, ঘাটালে তেমন ‘চাপে’ রয়েছে কংগ্রেস। জেলার খড়্গপুর, মেদিনীপুর, ঘাটাল- এই ৩ টি পুরসভাতেই কংগ্রেস- তৃণমূল একে অপরের উপর নির্ভরশীল। ঘাটাল ও মেদিনীপুরের পুরবোর্ড জোটের দখলে রয়েছে। ঘাটালে পুরপ্রধান পদে রয়েছেন কংগ্রেস কাউন্সিলর। উপপুরপ্রধান পদে তৃণমূল কাউন্সিলর। মেদিনীপুরে পুরপ্রধান পদে রয়েছেন তৃণমূল কাউন্সিলর। উপপুরপ্রধান পদে কংগ্রেস কাউন্সিলর। অন্যদিকে, রেলশহর খড়্গপুরে প্রায় দেড় বছর কংগ্রেসের সমর্থনেই পুরবোর্ড চালিয়েছে তৃণমূল। কংগ্রেস অবশ্য সরাসরি বোর্ডে অংশগ্রহন করেনি। বাইরে থেকে সমর্থন করেছিল মাত্র। এখন অবশ্য সেই সম্পর্কেও ‘ফাটল’ ধরেছে। গত বছরই পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে সমর্থন প্রত্যাহার করেছে কংগ্রেস। রেলশহরে এই দুই দলের সম্পর্ক অবশ্য কোনও দিন ‘মধুর’ ছিল না। মাঝে দু’পক্ষের মধ্যে একটা ‘সমঝোতা’র বাতাবরণ তৈরি হয়েছিল। এখন সেই সম্পর্ক একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে।
কংগ্রেসের বক্তব্য, তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ড সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলরই বোর্ডের বিরুদ্ধে। ২০১০ সালের পুরভোটের পর এখানে কংগ্রেসের সমর্থনে বোর্ড গড়ে তৃণমূল। পরে সেই সমীকরণ পাল্টে যায়। গত বছর দুই সিপিএম কাউন্সিলর কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় এখন কংগ্রেসের ওয়ার্ড সংখ্যা ১২ থেকে বেড়ে ১৪ হয়েছে। তৃণমূলের দখলে রয়েছে ১৫ টি ওয়ার্ড। অন্যদিকে সিপিএম, সিপিআই, বিজেপি ও নির্দলের দখলে রয়েছে যথাক্রমে ১, ৩, ১ ও ১ টি ওয়ার্ড। কংগ্রেসের বক্তব্য, নির্দল কাউন্সিলরের সমর্থন তাদের দিকেই রয়েছে।
এই শহরে আবার তৃণমূলের মধ্যেও ‘দ্বন্দ্ব’ রয়েছে। এই অবস্থায় অনাস্থা এলে তৃণমূল বোর্ড ধরে রাখতে পারবে না বলেই কংগ্রেস- শিবিরের দাবি। এই দাবি এককথায় উড়িয়ে দিচ্ছেন না একাংশ তৃণমূল কাউন্সিলর। বরং তাঁদের পাল্টা বক্তব্য, বামেদের সঙ্গে হাত মিলিয়েই বোর্ডে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছে কংগ্রেস। অভিযোগ অস্বীকার করে এক কংগ্রেস কাউন্সিলর বলেন, “শহরের উন্নয়ন স্তব্ধ হয়ে গেলে তো আমরা বসে থাকতে পারি না! আগে আমরা যে সব অভিযোগ তুলে ধরে পুর- কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করার চেষ্টা করেছি, তার একটাও খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়নি।” খড়্গপুরে অনাস্থা এলে ঘাটালেও অনাস্থা আসবে বলে মনে করছে জেলা কংগ্রেসের একাংশ। তাই এ ক্ষেত্রে তড়িঘড়ি কোনও সিদ্ধান্ত নিতে নারাজ জেলা নেতৃত্ব। অন্যদিকে, মেদিনীপুর শহর কংগ্রেস নেতৃত্বের একটা বড় অংশ চাইছেন না এখনই দু’দলের সম্পর্কের অবনতি হোক। শহর কংগ্রেসের এক নেতার কথায়,“ খড়্গপুর- ঘাটালে জোট থাকবে না, আর মেদিনীপুরে জোট থাকবে, এটা হতে পারে না। তাই এ ক্ষেত্রে সবদিক দেখেই এগোনো উচিত।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.