ওয়েবসাইটে নথিভুক্তিকরণে ত্রুটি
আটকে একশো দিনের কাজের প্রকল্পের টাকা
০১১-১২ আর্থিক বছরে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে দাঁতন-১ ব্লকের ন’টি গ্রামপঞ্চায়েত ও দাঁতন-১ পঞ্চায়েত সমিতি কাজ করেছে মোট ১৮ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকার। কিন্তু সরকারি ওয়েবসাইটে, কেন্দ্রীয় ভাবে তৈরি করা হয় যে তথ্য-ভাণ্ডার, সেখানে টাকার অঙ্ক দেখানো হয়েছে মাত্র সাড়ে তেরো কোটি টাকা। প্রশাসন ও জেলা পরিষদে এ নিয়ে অভিযোগও জানানো হয়েছে। কিন্তু কাজ হয়নি। ফলে নতুন কাজ করা ও শ্রমিক-ঠিকাদারদের টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়েছে পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি।
বিডিও জ্যোতি ঘোষ ও পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সদানন্দ দাস দাবি করেন, এনআরইজি-এ প্রকল্পের সরকারি ওয়েবসাইটে ৪ কোটি ৬০ লক্ষ ৭০ হাজার ৮০০ টাকা কম দেখানো হয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে প্রশাসন ওয়েবসাইটের তথ্যগুলিই ব্যবহার করে। নতুন প্রকল্পের অনুমোদন ও অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রেও প্রশাসন ভরসা করে ওয়েবসাইটের তথ্যকেই। ফলে জেলার প্রশাসন ও অন্যান্য ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের কাছে ভুল বার্তা যাচ্ছে। সঠিক মূল্যায়ন হচ্ছে না। অনুমোদিত প্রকল্পগুলির কাজ হয়নি মনে করে নতুন প্রকল্পের অনুমোদনও যেমন দেওয়া হচ্ছে না, তেমনই কাজ হয়ে যাওয়া প্রকল্পগুলির অর্থও পাঠানো হচ্ছে না। ফলে এলাকায় শ্রমিক ও ঠিকাদারদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে। কোথাও কোথাও ক্ষোভ-বিক্ষোভও হয়েছে।
এই কারণে অনুমোদিত প্রকল্পগুলির কাজ শেষ করেও নতুন কাজ পাওয়া থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি। বর্ষার আগে বেশ কিছু কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও তা করা যাচ্ছে না। তররুই গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান প্রতুল দাস, শালিকোঠা পঞ্চায়েতের প্রধান মণি টুডু বলেন, “প্রশাসনিক এই গাফিলতির জন্য আমরা লক্ষ্যমাত্রা পূরণে পিছিয়ে যাচ্ছি। রাজ্য সরকার যেখানে চলতি আর্থিক বছরে জবকার্ড পিছু কমপক্ষে পঞ্চাশ দিন কাজ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে, সেখানে প্রশাসনের এমন ভূমিকা হলে লক্ষ্যভ্রষ্ট হতে হবে। তা ছাড়া, কাজ করেও টাকা না পাওয়ায় গ্রামবাসীরা ক্ষোভ জানাচ্ছেন।” তাঁদের আরও বক্তব্য, কয়েক দিন পরে বোরো ধান কাটার কাজ শুরু হলে শ্রমিক পাওয়া সমস্যা হবে। তা ছাড়া বর্ষা নামার আগে থেকেই চাষিরা আমন চাষের জমি প্রস্তুত করার কাজে নেমে পড়বেন। চলবে বীজতলা ফেলার কাজও। ফলে চাষের কাজ বেশি থাকায় একশো দিনের প্রকল্পে যোগ দিতে আসবেন না শ্রমিকরা। তা ছাড়া বর্ষা নেমে গেলে চাষ-জমি থেকে মাটি নিয়ে গ্রামীণ রাস্তা তৈরি, সম্প্রসারণ ও সংস্কারের কাজও সম্ভব হবে না। করা যাবে না রাস্তায় মোরাম দেওয়ার কাজও। ব্যক্তিগত পুকুর সংস্কার করে রাস্তা ও স্কুলের মাঠ ভরাট করার কাজও অসম্ভব হয়ে যাবে। ফলে, আবার কাজের জন্য অপেক্ষা করতে হবে সেই নভেম্বর পর্যন্ত।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্য সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, “গোটা জেলাতেই এই সমস্যা। একটি আর্থিক বছরের শেষে ওয়েবসাইটে কেন্দ্রীয় ভাবে তথ্য নথিভুক্তকরণের ক্ষেত্রে সাধারণত ১৫-২০ দিন সময় লেগে যায়। সেটাই লাগছে। তা ছাড়া সরকারি নিয়মেই রয়েছে কাজ শেষ হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে শ্রমিকদের টাকা দিতে হবে। সেটাও হচ্ছে না। প্রশাসনকে বলা হয়েছে দ্রুত পদক্ষেপ করতে।” এনআরইজি-এ প্রকল্পের জেলা নোডাল অফিসার প্রিয়ঞ্জন দাস বলেন, “বিষয়টিকে স্বাভাবিক ঘটনা বা প্রযুক্তিগত সমস্যা বলা যেতে পারে। কেন্দ্রীয় ভাবে তথ্য নথিভুক্তিকরণ হওয়া সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। কমপক্ষে দু’সপ্তাহ সময় লাগে। কিছু ক্ষেত্রে নথি যাচাইও করা হয়। তাই আরও সময় লাগে। তবে এতে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।” টাকা না পাওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “২০১১-১২ আর্থিক বছরে জেলা পেয়েছিল ২৫৪ কোটি টাকা। তার মধ্যে খরচ হয়ে গিয়েছে ২২৬ কোটি টাকা। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারকে টাকা না দেওয়ায় আমরাও পরবর্তী প্রকল্পগুলির জন্য কোনও টাকা পায়নি।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.