ভিড় সামলাতে গলদঘর্ম পুলিশ। প্রায় হাতেপায়ে ধরে সামলাতে হচ্ছে লোকজনকে। কিন্তু ভূমিকম্পের দিনে এ ভিড় পালাতে চাওয়া লোকের ভিড় নয়, সুনামি দেখে ‘চক্ষু সার্থক’ করার ভিড়। তা-ও আবার কোথায়! সেই মেরিনা সৈকতেযেখানে ২০০৪ সালের ডিসেম্বরের এক ভোরে জীবনের সব চিহ্ন মুছে দিয়েছিল সুনামি। এক প্রৌঢ়া তো সাফ বলেই দিলেন, “সমুদ্রের তীরে যাবই। সুনামি চাক্ষুষ দেখতে চাই।” তিনি তো একা নন, সমুদ্রসৈকতে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন বয়সের মানুষের উৎসাহ ঠেকাতে পুলিশ জেরবার! একই দৃশ্য এ দিন দেখা গিয়েছে পুদুচেরিতেও।
বুধবার ভূমিকম্পের পরে ভারতের উপকূলবর্তী এলাকা জুড়ে সুনামি-সতর্কতা দেওয়া হয়েছিল। ফলে তামিলনাড়ু থেকে পুদুচেরি, গোয়া, সর্বত্রই প্রশাসন নির্দেশ দেয়, কেউ যেন সমুদ্রের ধারে না যান। কিন্তু কথা শোনে কে? পুলিশ এসে মেরিনা বিচে ইতিউতি ঘুরে বেড়ানো লোক, দোকানদারদের সরিয়ে দিলেও দর্শনার্থীদের সরাবে কে? ভূমিকম্পের পরে ততক্ষণে শহরের বিভিন্ন এলাকায় অফিস ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে, বন্ধ হয়ে গিয়েছে স্কুল। |
গাড়িতে, গাড়িতে যানজট! চেন্নাই বন্দরের কাজকর্ম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলার ছ’টি দল পৌঁছে গিয়েছে চেন্নাই। আর তখনই ভিড়ের একটা অংশ দৌড়চ্ছে মেরিনা সৈকতে। সুনামি দেখতে। তামিলনাড়ুর কুড়ানকুলাম এবং কলাপক্কম পরমাণু কেন্দ্রকে সতর্ক করা হলেও সেখানে কাজ যথারীতি চলেছে। ২০০৪-এর সুনামিতে সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত নাগাপট্টিনম জেলা জুড়েই ছিল আতঙ্কের ছবি। অটো, মিনি-লরি যে যা পেয়েছেন, তাতে চড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে রওনা হয়েছেন। কমিউনিটি হলেও আশ্রয় নেন অনেকে। সতর্ক করা হয় কেরলকেও। ওড়িশার বিভিন্ন স্থানে মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত হয়। সতর্কতা জারি করা হয় উপকূলবর্তী এলাকায়। পুরী-সহ বিভিন্ন জায়গায় লাউডস্পিকার নিয়ে ঘোষণা করা হয়, কেউ যেন সমুদ্রের তীরে না যান। সতর্কতা হিসেবে নিচু কিছু এলাকা থেকে লোকজন সরিয়েও নেওয়া হয়। ভূমিকম্পের জেরে বেঙ্গালুরুতে দুপুর দুটো ৪০ নাগাদ থেকে মেট্রো চলাচল কিছুক্ষণ বন্ধ করে দেওয়া হয়। স্টেশন থেকে বের করে নেওয়া হয় যাত্রীদের। |