ভারতের শেয়ার বাজার যে এখনও বিশ্ব বাজারের মুখের দিকে তাকিয়েই ওঠা-নামা করে, তা ফের প্রমাণিত হল সাম্প্রতিক কালে সূচকের ওঠা-পড়ার গতি থেকেই। বিশ্ব বাজার পড়ার জেরে গত চার দিনের লেনদেনে নিট হিসাবে সেনসেক্স হারাল ৩৯৮ পয়েন্ট। বুধবার তা ৪৪.৪৪ পড়ে থামে ১৭,১৯৯.৪০ অঙ্কে। দেশের আর্থিক উন্নতির কথা বলা হলেও, বিশ্বায়নের যুগে বাজার নিছক তার উপর নির্ভর করে না বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।
তবে সূচক যখন পড়ছে, নিরাপদ লগ্নির মাধ্যম হিসেবে তখন লাফিয়ে বেড়েছে সোনার দাম। স্বর্ণশিল্পে ধর্মঘট ওঠার পরে গত শনিবার থেকে চার দিনের লেনদেনে ভারতে প্রতি ১০ গ্রাম ২৪ ক্যারেট পাকা সোনার দাম বেড়েছে মোট ৫২৫ টাকা। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সূচক ঝিমিয়ে থাকলে দাম আরও বাড়বে। এমনকী বাজেটে সোনায় কর বৃদ্ধি নিয়ে যে-সব প্রস্তাব আছে, তা বাস্তবায়িত হলে বিশ্বে দাম বাড়ার হারের থেকে ভারতে বৃদ্ধির হার বেশি হবে বলেও আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
অন্য দিকে, বিশ্ব বাজারের হাল না ফিরলে ভারতের শেয়ার বাজার চাঙ্গা হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বলেই মনে করছেন বহু বিশেষজ্ঞ। যেমন, বিশেষজ্ঞ অজিত দে বলেন, “আমেরিকা বা ইউরোপের আর্থিক অবস্থা বাস্তবে কতটা ফিরেছে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তাদের শেয়ার বাজারের হাল দেখে মনে হয়, ঘুরে দাঁড়াতে যতটা আর্থিক বৃদ্ধি জরুরি ছিল, তা হয়নি। আর বিশ্বায়নের যুগে আন্তর্জাতিক বাজারের এই প্রভাব ভারতে যে পড়বেই, তাতে সন্দেহ নেই।”
১৭ এপ্রিল রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি। অনেকেরই আশা, এ বার সুদ কমানোর রাস্তা খুলতে রেপো রেট কমানো হতে পারে। ফের কমতে পারে নগদ জমার অনুপাতও। এটা ঘটলে বাজার উৎসহিত হবে বলেই আশা। যদিও অজিতবাবুর মতো বিশেষজ্ঞদের মত, “বিশ্ব বাজারের অবস্থা না-ফিরলে, সুদ কমলেও ভারতের বাজারের ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা কম।” এ দিকে আজই প্রকাশ হবে শিল্পোৎপাদনের হার। আগামী সোমবার জানা যাবে সার্বিক মূল্যবৃদ্ধি বাড়ল, না কমল। ওই সব পরিসংখ্যান বাজারে কী প্রভাব ফেলে এখন সেটাই দেখার। |