মালদহের চাঁচল মহকুমার মহানন্দা বাঁধ ও ফুলহার বাঁধের উপর রাস্তা তৈরির জন্য বরাদ্দ মিলল। ওই দুটি রাস্তার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করছিলেন বাসিন্দারা। শুধু বাসিন্দারাই নন, একই দাবিতে পদযাত্রাতেও সামিল হন উত্তর মালদহের সাংসদ মৌসম বেনজির নূর। সেচ দফতর জানায়, দুটি রাস্তাই সেচ দফতরের মহানন্দা এমব্যাঙ্কমেন্টের অধীন। একটি হল হরিশ্চন্দ্রপুরের কুশিদা থেকে রতুয়ার চাতোর পর্যন্ত মহানন্দা বাঁধের ৪৮ কিমি। দ্বিতীয়টি হরিশ্চন্দ্রপুরের দিল্লি দেওয়ানগঞ্জ থেকে ভালুকা ঢেলাই মোড় পর্যন্ত ফুলহার বাঁধের ২২ কিলোমিটার রাস্তা। প্রথম রাস্তাটির জন্য বরাদ্দের পরিমাণ ২৩ কোটি টাকা ও দ্বিতীয়টির জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১০ কোটি টাকা। দুটি রাস্তাই পিছিয়ে পড়া এলাকা উন্নয়ন তহবিলের (বিআরজিএফ) টাকায় করা হবে বলে সেচ দফতরের মহানন্দা এমব্যাঙ্কমেন্ট সূত্রে জানানো হয়েছে। জেলা সেচ দফতরের মহানন্দা এমব্যাঙ্কমেন্টের নির্বাহী বাস্তুকার আশিস কুমার সাহু বলেন, “দুটি রাস্তা মিলিয়ে বিআরজিএফ তহবিল থেকে ৩৩ কোটি টাকা বরাদ্দ মিলেছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হলেই কাজ শুরু হবে। কুশিদা থেকে চাতোর পর্যন্ত মহানন্দা বাঁধের উপর ৪৮ কিলোমিটার রাস্তাটি অবশ্য প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা রায়গঞ্জের সাংসদের উদ্যোগে ২০০৬ সালে পাকা করা হয়েছিল। জলসম্পদ উন্নয়ন দফতরের টাকায় ওই রাস্তাটি তৈরি করে ফরাক্কা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ। তার পর সংস্কারের অভাবে ওই রাস্তাটি এতটাই বেহাল হয়ে পড়ে যে তা বর্তমানে যাতায়াতের অযোগ্য হয়ে রয়েছে। রাস্তা তৈরিতে বরাদ্দের কথা জেনে খুশী উত্তর মালদহের সাংসদ মৌসম বেনজির নূরও। তিনি বলেন, “দুটি রাস্তাই ফুলহার ও মহানন্দা পাড়ের লক্ষাধিক মানুষের জীবনরেখা হিসেবেই পরিচিত। রাস্তার কাজ কে করবে তা নিয়ে কম টালবাহানা হয়নি। ওই রাস্তা দুটি জরুরি বলে একসময় সেচমন্ত্রীরও দ্বারস্থ হই। রাস্তা দুটির সংস্কারের দাবিতে পথে নেমে আন্দোলনও করি। বরাদ্দ মেলায় বহু বাসিন্দা উপকৃত হবেন। পিচের চাদর উঠে গিয়েছে। রাস্তা জুড়ে এত খানাখন্দ যে হেঁটে যতায়াত করাও দায় হয়ে পড়েছে। ফলে ঝুঁকির ওই রাস্তায় একসময় যানবাহন চলাচল করলেও তা কয়েক বছর ধরেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যদিও ওই রাস্তাটিকে মহানন্দা পাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের জীবনরেখা বলা হয়ে থাকে। বেহাল ওই রাস্তাটি ফের নতুন করে তৈরির দাবিতে কয়েক বছর ধরেই আন্দোলন করছে আজাদ গ্রাম উন্নয়ন সমিতি নামে এলাকারই একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। আর ফুলহার বাঁধের রাস্তাটিও ২০ বছর আগে তৈরি হওয়ার পর সংস্কারের অভাবে এতটাই বেহাল যে, ওই রাস্তাতেও যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে দীর্ঘদিন আগেই। ওই রাস্তা সংস্কারের দাবিতেও নাগরিক মঞ্চ গড়ে একাধিকবার আন্দোলন করেছেন বাসিন্দারা। গত বছর তো নাগরিক মঞ্চ টানা একসপ্তাহ ধরে এলাকায় বন্ধ করে। |