গোষ্ঠী কোন্দলে উত্তেজনা ছড়াল তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার দিনহাটা (১) ব্লকের সম্মেলনে। রবিবার দিনহাটার গোসানীমারি হাইস্কুলে সম্মেলনটি ডাকা হয়। দলীয় সূত্রের খবর, সম্মেলন শুরুর আগে জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের অনুগামী বলে পরিচিত আয়োজকদের সঙ্গে প্রাক্তন বিধায়ক অশোক মণ্ডলের অনুগামীদের তুমুল বচসা থেকে উত্তেজনা ছড়ায়। দুই গোষ্ঠীর বাদানুবাদ কিছুক্ষণের মধ্যে চরমে পৌঁছায়। শুরু হয়ে যায় হাতাহাতি। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। জেলা সভাপতি শিবিরের অভিযোগ, “দলের পতাকা নিয়ে দলের ভাল চায় না এমন কিছু লোক গোলমাল করেছে। হামলা চালিয়েছে। ৩ জন জখম হন। এরমধ্যে ভেটাগুড়ির তপন মোহন্তকে দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।” অশোক মণ্ডলের অনুগামীরা অবশ্য ওই অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁদের পাল্টা অভিযোগ, “দলনেত্রী গোষ্ঠীকোন্দল বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তারপরেও প্রাক্তন বিধায়ককে ব্লক সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। জেলা সভাপতির ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত শিবিরের ওই মনোভাবের প্রতিবাদ জানাতে অনেকে সম্মেলনে যান। সভাপতির লোকজন বাধা দেওয়ায় গোলমাল হয়। সম্মেলন হয়েছে।” তবে সভাপতি অনুগামীদের দাবি, ট্রেন দেরিতে থাকায় অনেক নেতা কলকাতা থেকে আসতে না পারায় সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে। খবর পেয়ে সম্মেলন স্থলে পুলিশ গিয়ে দুই পক্ষকে কোনওমতে শান্ত করায় বড় গোলমাল হয়নি। পরিস্থিতির জেরে সম্মেলনে গিয়েও গাড়ি থেকে না নেমেই ফিরে যান দলের জেলা সহসভাপতি নিরঞ্জন দত্ত। তিনি বলেন, “যা অবস্থা দেখেছি তা কাঙ্খিত নয়। গোটা ঘটনা উর্ধ্বতন নেতৃত্বকে জানিয়েছি।” তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা সভাপতি, সহ-সভাপতি সহ তাঁদের শিবিরের বিভিন্ন নেতাদের সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হলেও বাদ যান প্রাক্তন বিধায়ক অশোক মণ্ডল। তা নিয়ে অশোক অনুগামীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। তা নিয়েই গোলমালের সূত্রপাত। অশোক শিবিরের নেতা মনোজিৎ সাহা চৌধুরী বলেন, “অশোকবাবুকে বাদ দিয়ে সম্মেলন দলের পুরানো বহু কর্মী মেনে নিতে পারেননি। তাঁরা একজোট হয়ে সম্মেলন করতে যান। কিন্তু আয়োজকরা বাধা দেন। পরে অবশ্য বিশাল জমায়েত দেখে আয়োজকরা পালিয়ে যাওয়ায় আমরাই সম্মেলন করেছি।” আর জেলা সভাপতির অনুগামী বলে পরিচিত দিনহাটার তৃণমূল নেতা পার্থনাথ সরকার বলেন, “কলকাতা থেকে ফেরার ট্রেন দেরিতে চলায় নেতারা সময়মত আসতে পারবেন না বুঝে সম্মেলন স্থগিত করা হয়। কয়েকজন দলের পতাকা নিয়ে গোলমাল পাকায়। কয়েকজনকে মারধোর করা হয়। অশোকবাবু সাংগঠনিক কোনও পদে না থাকার জন্যই হয়ত আমন্ত্রণ পাননি।” প্রাক্তন বিধায়ক অশোক মন্ডল অবশ্য বলেছেন, “সম্মেলনে আমাকে না ডাকায় আমি যাইনি। কিন্তু পুরানো কর্মীরা যাঁরা বাদ গিয়েছেন তাদের ক্ষোভ হলে আমার কী করার আছে?” আর জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “কলকাতা থেকে ফেরার ট্রেনের দেরির জন্য সম্মেলনে যেতে পারিনি। বিশদে খোঁজ না নিয়ে মন্তব্য করব না।” |