সুর নরম, এক দিনই বন্ধ করবে মোর্চা বিরোধীরা
রাজ্য সরকারের আবেদনের প্রেক্ষিতে সুর ‘নরম’ করল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা বিরোধী শিবির। রবিবার শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবের সঙ্গে ‘আদিবাসী বিকাশ পরিষদ’ নেতৃত্বাধীন ‘তরাই-ডুয়ার্স জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি’র প্রতিনিধিদের বৈঠক হয়। পরে কমিটির তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, তারা দু’দিনের বদলে এক দিন (১০ এপ্রিল) ২৪ ঘণ্টার বন্ধ পালন করবে। ১১ এপ্রিলের প্রস্তাবিত বন্ধ প্রত্যাহার করা হল।
‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ)-এ তরাই-ডুয়ার্সের এলাকা অন্তর্ভুক্তির দাবি খতিয়ে দেখার বিরোধিতায় ওই বন্ধ ডেকেছিল কমিটি। সরকারি সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে কমিটির প্রতিনিধিদের কাছে দু’দিনের বন্ধই প্রত্যাহার করার আবেদন জানানো হয় রাজ্য সরকারের তরফে। কমিটির তরফে জিটিএ-তে তরাই ও ডুয়ার্সের মৌজা অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। পরে শিল্পমন্ত্রী বলেন, “আন্দোলনকারীদের উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীকে সে কথা জানাব। রাজ্যের উন্নয়নে যাতে বিঘ্ন না হয়, সে ব্যাপারে আন্দোলনকারীরাও আমাদের সহায়তা করবেন বলে আশা করি।” কমিটির তরফে অতুল রায় বলেন, “রাজ্য সরকার সদর্থক মনোভাব দেখিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর তরফে পার্থ চট্টোপাধ্যায় আমাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীকে ফের আমাদের উদ্বেগের কারণ জানানোর ব্যাপারে উদ্যোগী হওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন উনি। সেই প্রেক্ষিতেই দু’দিনের বদলে এক দিন বন্ধ পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।” বন্ধের সমর্থনে কমিটির তরফে আজ, সোমবার শিলিগুড়ি-সহ তরাই ও ডুয়ার্সের নানা এলাকায় মিছিলের ডাকও দেওয়া হয়েছে।
ঘটনা হল, মোর্চার নেতৃত্বে তৈরি ৩২টি সংগঠনের ‘যৌথ মঞ্চ’ জিটিএ-তে তরাই-ডুয়ার্সের কিছু মৌজা অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে আগামী ১৮ ও ১৯ এপ্রিল পাল্টা বন্ধ ডেকেছে। এখন কি তারাও সিদ্ধান্ত বদলাবে? মঞ্চের অন্যতম নেতা পারশনাথ বরাইক বলেন, “ওঁরা (কমিটি) এক দিন বন্ধ করলে আমাদেরও ভাবতে হবে। সোমবার বৈঠকে বসছি। শিল্পমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা হবে। তার পরে সিদ্ধান্ত নেব।”
এর পরেও অবশ্য বন্ধ নিয়ে উদ্বেগের কারণ থাকছে পাহাড় এবং লাগোয়া তরাই-ডুয়ার্সের বাসিন্দাদের। পর্যটন মরসুম ছাড়াও, চা-শিল্পে এখন পাতা তোলার কাজ পুরোদমে শুরু হতে চলেছে। ‘ডুয়ার্স ব্রাঞ্চ অব ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন’-এর সচিব প্রবীর ভট্টাচার্য বলেন, “এক দিনের জন্য বাগান ধর্মঘট হলেও বড় ক্ষতি হবে। তা সবাইকে বুঝতে হবে।” চা বাগানকে বন্ধের আওতা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন বাগানমালিকদের অন্য সংগঠন ‘টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া’র উত্তরবঙ্গের সচিব রণজিৎ দত্ত। শিল্পমন্ত্রী ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রীর সঙ্গে এ দিন কমিটির বৈঠক শুরু হওয়ার কথা ছিল বিকেল ৪টেয়। কিন্তু বৈঠক শুরু হয় সন্ধ্যা সওয়া ৬টা নাগাদ। চলে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত। আলোচনায় তরাই ও ডুয়ার্সের মোট ২৬টি সংগঠন যোগ দেয়। সরকারি সূত্রের খবর, কমিটি জিটিএ-তে তরাই ও ডুয়ার্সের মৌজা অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে কার্যত ক্ষোভ প্রকাশ করে মন্ত্রীদের কাছে। শিল্পমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পার্থবাবু বলেন, “জিটিএ-চুক্তি নিয়ে বিধানসভায় বিল পাশ হয়েছে। সুতরাং অযৌক্তিক দাবি তোলা যাবে না। বুঝতে হবে, বন্ধ মানেই রাজ্যের সর্বনাশ। আলোচনার মধ্যে দিয়েই আমাদের এগোতে হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.