চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার হলেন এক সিপিএম নেতা-সহ দু’জন। শনিবার সন্ধ্যায় হুগলির শেওড়াফুলি থেকে ওই দু’জনকে গ্রেফতার করে বর্ধমানের কাটোয়া থানার পুলিশ। রবিবার কাটোয়া আদালতে তোলা হলে ধৃতদের পাঁচ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন ভারপ্রাপ্ত এসিজেএম ইডেন লামসা।
পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম সুশীল রায় এবং সুবীর রায়। তাঁর দুই ভাই। থাকেন শেওড়াফুলি স্টেশনের কাছে হরিশ রোডে। তবে আদি বাড়ি বর্ধমানে। সুবীরবাবু সিপিএমের বৈদ্যবাটি লোকাল কমিটির সদস্য। সুশীলবাবু শেওড়াফুলি স্টেশন লাগোয়া একটি সমবায় ব্যাঙ্কের কর্মী। |
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৪ এপ্রিল বর্ধমানের বড়নীলপুরের বাসিন্দা সুব্রত রায় কাটোয়া থানায় অভিযোগ করেন, হুগলির শেওড়াফুলির ওই সমবায় ব্যাঙ্কে করণিক পদে চাকরি দেওয়ার নাম করে সুশীলবাবু এবং সুবীরবাবু তাঁর কাছে দু’লক্ষ টাকা চান। গত ৩০ নভেম্বর কাটোয়া বাসস্ট্যান্ডে তাঁদের হাতে এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা তুলে দেন সুব্রতবাবু। সে দিন তাঁদের সঙ্গে এসেছিলেন বিশ্বেশ্বর রায় নামে বড়নীলপুরেরই এক বাসিন্দা। সুব্রতবাবু পুলিশকে জানান, পরে তিনি বুঝতে পারেন, ওই তিন জন তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। বারবার তাঁদের কাছে টাকা ফেরত চেয়েও তা পাননি বলে অভিযোগ সুব্রতবাবুর। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই সুশীলবাবু এবং সুবীরবাবুকে পুলিশ গ্রেফতার করে। আর এক অভিযুক্ত বিশ্বেশ্বর রায় পলাতক। অভিযোগকারী সুব্রতবাবুর আইনজীবী তাপস মুখোপাধ্যায় বলেন, “টাকা দেওয়ার সময়ে নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে লিখিত করা হয়েছে। তা পুলিশের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।” ধৃতদের আইনজীবী ধীরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “মিথ্যা অভিযোগে আমার মক্কেলদের ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।”
পুলিশ জানায়, বৈদ্যবাটি লোকাল কমিটির সদস্য সুবীরবাবু পরিবহণ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। তাঁর দু’টি ট্রাক রয়েছে। দলে তিনি সুনীল সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। দলের তরফে শেওড়াফুলি হাটে মুটিয়া-মজদুরদের সংগঠন দেখাশোনা করেন। সুবীরবাবুর গ্রেফতার প্রসঙ্গে সিপিএমের হুগলি জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুনীল সরকারের প্রতিক্রিয়া, “সুবীরবাবুদের পারিবারিক বিবাদ রয়েছে। তার জেরেই এমন ঘটেছে। এর মধ্যে রাজনীতি নেই।” বৈদ্যবাটি পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা সিপিএম নেতা সুজিত গুহর বক্তব্য, “পারিবারিক বিবাদে মামলায় সুবীরবাবুদের সঙ্গে প্রতিপক্ষ দাঁড়াতে পারেনি। তাই, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। কাউকে চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা সুবীরবাবুর আছে না কি?” |