|
|
|
|
পঞ্চায়েতের আধিকারিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রধানের |
পীযূষ নন্দী • আরামবাগ |
পঞ্চায়েতের সরকারি আধিকারিকেরা জনপ্রতিনিধিদের ‘উপেক্ষা’ করছেন বলে বেশ কিছু দিন ধরেই অভিযোগ উঠছিল আরামবাগের কয়েকটি পঞ্চায়েতে। যে জন্য উন্নয়নের কাজে সমস্যা হচ্ছিল বলেও অভিযোগ। এ বার দু’টি পঞ্চায়েতের প্রধান সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের দুই সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে বিডিও-র কাছে লিখিত নালিশ জানিয়েছেন।
ঘটনাটি হরিণখোলা ১ এবং মায়াপুর ২ পঞ্চায়েতের। হরিণখোলা ১ পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের অজিত রায়ের সঙ্গে সেখানকার নির্বাহী সহায়ক (পঞ্চায়েতে সরকার কর্মীদের মধ্যে সর্বোচ্চ পদ) শম্ভুনাথ পালের বিবাদের বিষয়টি ব্লক প্রশাসনের নজরে আসে গত মাসের শেষের দিকেই। অভিযোগ ওঠে, পঞ্চায়েত কর্মীদের বেতন-সংক্রান্ত বিলে নির্বাহী সহায়কের নামই তুলছেন না প্রধান। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁর বেতনও আটকে যায়। মার্চ মাসেও যাতে ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, সে ব্যাপারে নির্বাহী সহায়ক আরামবাগের বিডিও মৃণালকান্তি গুঁইয়ের কাছে দরবার করেন। বিডিও-র মধ্যস্থতায় তাঁর বেতন-সংক্রান্ত সমস্যা মিটলেও গত ২৪ মার্চ প্রধান লিখিত ভাবে ওই নির্বাহী সহায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন বিডিওর কাছেই। ওই চিঠিতে নির্বাহী সহায়ককে পদ থেকে ‘অন্যত্র সরিয়ে দেওয়ার’ আবেদনও করেছেন প্রধান। তিনি লিখেছেন, “নির্বাহী সহায়ক যদি পঞ্চায়েত প্রধানের থেকে পদমর্যাদায় বড় হন, আমাকে জানিয়ে দেওয়া হোক। আমি পদত্যাগ করব।” অজিতবাবু পরে টেলিফোনে বলেন, “প্রধানের সঙ্গে যুগ্ম ভাবে নির্বাহী সহায়কের সই ছাড়া পঞ্চায়েতে কোনও আর্থিক লেনদেন সম্ভব নয়। কিন্তু উনি চেকে সই করার নির্দিষ্ট দিনগুলিতেই আসেন না। ফলে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচি গতি হারাচ্ছে।” প্রধানের দাবি, এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েতে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে এসে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। তাঁরা ক্ষোভ-বিক্ষোভও দেখাচ্ছেন। অন্য দিকে, নির্বাহী সহায়ক শম্ভুনাথবাবুর বক্তব্য, “পঞ্চায়েতে কিছু বিষয়ে অমত পোষণ করায় প্রধান ক্ষুব্ধ হয়েছেন।” বিডিও এ ব্যাপারে বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মায়াপুর ২ পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে প্রধান সিপিএমের শশাঙ্ক সাঁতরার সঙ্গে পঞ্চায়েত সচিব চিন্তাহরণ মালিকের বিবাদ দেখা দিয়েছে। শশাঙ্কবাবুর অভিযোগ, “সচিব কথা শুনছেন না। ডেকে পাঠালে আমাকেই উল্টে দেখা করতে বলছেন। এতে কাজে-কর্মে ক্ষতি হচ্ছে।” বিষয়টি বিডিওকে জানিয়েছেন তিনিও। সচিবের বক্তব্য, “একশো দিনের প্রকল্পে একটি কাজে শ্রমিকেরা মাপজোক নিয়ে আপত্তি তোলায় শ্রমিকদের কথা মতোই মাপ বাড়িয়ে দেখাতে হবে বলে জানিয়ে দেন প্রধান। কিন্তু প্রকল্পটির নির্মাণ সহায়ক এবং আমি সেই চাপ উপেক্ষা করেছি।” বিডিও-র দাবি, মায়াপুর ২ পঞ্চায়েতের এই সমস্যা মিটিয়ে ফেলা হয়েছে।
খানাকুল ১-২, গোঘাট ১-২ এবং পুড়শুড়ার কিছু পঞ্চায়েতেও এ ধরনের সমস্যা দানা বাধছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিডিওরা। সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে ‘সমন্বয়’ রেখে জনপ্রতিনিধিদের কাজের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। বিভিন্ন প্রকল্পের কাজে ‘স্বচ্ছ্বতা’ বজায় রাখার কথাও বলা হয়েছে। |
|
|
|
|
|