হুগলি নদীতে বানের জলে জেটি ঘাট ভেঙে যাওয়ায় রবিবার দুপুর থেকে বাউড়িয়া-বজবজ নদীপথে লঞ্চ পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। জেটি ঘাটটি অবশ্য মেরামতির কাজ এ দিন থেকেই শুরু হয়েছে বলে হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতি সূত্রের খবর।
এ দিন সকাল সাড়ে ১০ টা নাগাদ হুগলি নদীতে জোয়ারের জল বেশ উঁচু হয়ে এসে পাড়ের উপরে আছড়ে পড়ে। এই ভাবে জল আসাকেই সাধারণত ‘বান’ বলা হয়। জলের তোড় সামলাতে না পেরে জেটিঘাটটি ভেঙে যায়।
জেটিঘাটটি মোট চারটি নোঙর দিয়ে বাঁধা থাকে। নদীর পাড় থেকে একটি সিঁড়ি এসে জেটিঘাটে যোগ হয়। সিঁড়ি দিয়েই লঞ্চযাত্রীরা লঞ্চে ওঠানামা করেন। হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, জোয়ারের জলের তোড়ে নোঙরগুলির চেন ছিড়ে যায়। ফলে জেটিঘাটটি সিঁড়ি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এই অবস্থায় লঞ্চে ওঠানামা আর সম্ভব নয়। |
দুর্ঘটনার পর থেকেই বন্ধ হয়ে যায় লঞ্চ পরিষেবা। এখানে লঞ্চ চালায় হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতি। জেটিঘাটটিও তাদের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। সমিতি সূত্রের খবর, প্রতিদিন এই জেটিঘাট থেকে বাউড়িয়া এবং বজবজের মধ্যে ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত লঞ্চ চলে। গড়ে ৬০টি ট্রিপ হয়। যাতায়াত করেন ৬-৭ হাজার যাত্রী।
উল্লেখ্য, বজবজে চটকল-সহ অন্যান্য কলকারখানায় প্রতিদিন বাউড়িয়া থেকে শ্রমিকেরা লঞ্চ ধরে যাতায়াত করেন। আবার বজবজ থেকেও অনেকে আসেন নদীপথেই বাউড়িয়াতে। অনেকে বজবজ স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে বাউড়িয়া থেকে কলকাতায় যাতায়াত করেন।
কিন্তু জেটিঘাটটি ভেঙে যাওয়ায় এই সব নিত্যযাত্রীরা বিপাকে পড়েন। এ দিন দুপুরেই হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতির প্রশাসক অপরেশ ঘোষ বাউড়িয়ায় আসেন। তাঁর সঙ্গে আসেন সমিতির অন্যান্য পদাধিকারীরা। ঠিক হয়, মেরামতির কাজ এ দিন থেকেই শুরু করা হবে।
একই সঙ্গে আজ, সোমবার থেকেই ফের লঞ্চ পরিষেবা চালু করারও সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে অপরেশবাবু জানান। তিনি বলেন, “পাশেই জেলা পরিষদের একটি পুরনো জেটি রয়েছে। সেটিকেই সামান্য সংস্কার করে তার মাধ্যমে আপাতত লঞ্চ পরিষেবা চালু করে দেওয়া হবে। কয়েক দিনের মধ্যে সমিতির নিজস্ব জেটিঘাটটি মেরামত হয়ে যাবে। তখন ফের এখান থেকে লঞ্চ চলবে।”
এ দিকে লঞ্চ পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভুটভুটিতে করে বহু মানুষ এ দিন হুগলি নদী পারাপার করেন। কিন্তু নদী অশান্ত থাকায় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা দেখা দেয়। অপরেশবাবু বলেন, “আমরা যাত্রীদের সাবধান করে বলেছি, একদম অশান্ত নদীতে ভুটভুটিতে করে পারাপার করবেন না।”
উল্লেখ্য, গত বছর ২০ মার্চ বানে এই জেটিঘাটটিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ফলে প্রায় ৪৫ দিন বন্ধ ছিল লঞ্চ চলাচল। ওই সময়ে অবশ্য মেরামতির কাজটিই শুরু হতে দেরি হয়েছিল। এ বারে দুর্ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে। ফলে গতবারের মত মেরামতিতে দেরি হবে না বলে সমিতির আধিকারিকদের দাবি। |