এলাকারই এক শিক্ষকের বাড়িতে পড়তে যেতে শনিবার সন্ধ্যায় বেরিয়েছিল দশম শ্রেণির ছাত্র সৈকত মণ্ডল (১৪)। রাত বাড়লেও বাড়ি না ফেরায় শুরু হয় খোঁজ। অভিযোগ, হুগলির মগরার ভেড়িকুঠি এলাকার বাসিন্দা ওই ছাত্রের বাবার মোবাইলে অচেনা নম্বর থেকে ফোন করে, এক জন বলে, ‘১০ লক্ষ টাকা পেলে সৈকতকে ছেড়ে দেওয়া হবে’।
মগরা থানায় ঘটনা জানাতে গিয়ে সৈকতের বাবা রাজেন্দ্রনাথ মণ্ডল দেখেন, থানার সামনে একটি ভ্যানে ছেলের মৃতদেহ রাখা। জানতে পারেন, স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে এলাকার একটি পরিত্যক্ত সরকারি ভবনের ঘর থেকে সৈকতের দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রাজেন্দ্রনাথবাবু খুনের মামলা দায়ের করেছেন। খুনের প্রতিবাদে এবং ঘটনায় জড়িতদের ধরার দাবিতে ওই রাতেই এলাকাবাসী জি টি রোডে আধ ঘণ্টা অবরোধ করেন। |
পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী বলেন, “দেহে আঘাতের চিহ্ন না থাকলেও, দেখে মনে হয়, ওই ছাত্রটিকে খুন করা হয়েছে। ওর মুখে-নাকে সামান্য রক্ত ছিল। খুনের অভিযোগ এবং ছেলেটির বাবার দেওয়া মোবাইল নম্বরের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।”
স্থানীয় উত্তমচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ত সৈকত। পরিবারের দাবি, শনিবার বিকেল ৫টা নাগাদ সৈকত পড়তে বেরোয়। রাত ৮টা বাজলেও সে ফেরেনি। বাড়ির লোক খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, শিক্ষকের বাড়ি থেকে ৭টা নাগাদ বেরিয়েছিল সৈকত। খোঁজাখুঁজির সময়েই রাজেন্দ্রনাথবাবুর মোবাইলে অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে। পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, এক অপরিচিত তাকে বলে, সৈকত তাদের কাছে রয়েছে। ১০ লক্ষ টাকা পেলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু কবে, কোথায় টাকা দিতে হবে, সে ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি। পরে ওই নম্বরটিতে আর যোগাযোগ করা যায়নি। প্রতিবারই সেটি বন্ধ ছিল।
রাজেন্দ্রবাবু মগরা থানায় পৌঁছনোর আগেই স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ সৈকতের দেহ উদ্ধার করে। স্থানীয় সূত্রের খবর, যে বাড়িটি থেকে তার দেহ মিলেছে, সেটিতে আগে পূর্ত দফতরের অফিস ছিল। তবে ১৯৯৮ থেকে বাড়িটি পরিত্যক্ত। সেখানে নানা ‘অসামাজিক কাজকর্ম’ চলে বলে এলাকাবাসীর দাবি। তাঁরা জানান, ওই বাড়িটি থেকে কয়েক বছর আগেও ওই ভবন থেকে একটি মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল।
পেশায় চাষি রাজেন্দ্রনাথবাবু বলেন, “ছেলে পড়াশোনা নিয়েই থাকত। কারা কেন ওকে খুন করল কিছুই বুঝতে পারছি না। ওর কোনও শত্রু ছিল না।” |