কোঝিকোড়ের কিস্সা
হালুয়া-সঙ্গম
পার্টি কংগ্রেসে এসে অনেক সিপিএম নেতাই এক বার ঢুঁ মারছেন শহরের এস এম স্ট্রিটে। এখানেই মেলে কোঝিকোড়ের বিখ্যাত হালুয়া আর কলার চিপ্স। লাল, কালো, হলুদ, মেরুন নানান রঙের হালুয়া মিলছে কলা, আনারস বা নারকেলের স্বাদের। সেই ‘স্যুইট মিট’ থেকেই রাস্তার নাম হয়েছে এস এম স্ট্রিট। সবরীমালা যাওয়ার সময় পুণ্যার্থীরা এখান থেকেই হালুয়া ও ‘ভারুথাকায়া’ বা কলার চিপ্স কিনে নিয়ে যান। এক সময় নারকেল পাতা দিয়ে তৈরি এমন এক লম্বা ঝুড়িতে করে এই কলার চিপ্স বিদেশে রফতানি হয়েছে, যাতে তা বহু দিন টাটকা ও মুচমুচে থাকে। শেষ বাক্যে বলা থাক, সিপিএমের বিশতম পার্টি কংগ্রেস সফল করার ডাক দিয়ে শহরে বিরাট বিরাট বিজ্ঞাপনও দিয়েছে ‘কোঝিকোড় হালুয়া সঙ্ঘম’!

সঙ্গীত সন্ধ্যা
মার্ক্সবাদী বলে কি গণসঙ্গীত ছাড়া আর কিছু শুনতে নেই? মোটেই না। পার্টি কংগ্রেস উপলক্ষে কোঝিকোড়ে প্রায় প্রতি দিনই সঙ্গীতানুষ্ঠান হচ্ছে। চলছে দেশ-বিদেশের চলচ্চিত্র ও নাট্যোৎসবও। শনিবারের সন্ধ্যায় ছিল ‘গজল ইভনিং’। সৈকত-শহরবাসীর মন ভরিয়ে দিলেন সিথারা কৃষ্ণকুমার। শুক্রবার সন্ধ্যায় টাউন হলে হাজির ছিলেন পি জয়চন্দ্রন। দক্ষিণ ভারতের এই বিখ্যাত শিল্পী এ আর রহমানের প্রথম সুর করা গানে কণ্ঠ দেন। পরে জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছেন। শুধু সিপিএম নন, সিপিআইয়ের স্থানীয় নেতারাও দল বেঁধে হাজির ছিলেন গান শুনতে। আপ্লুত জয়চন্দ্রন বলে গেলেন, “কমিউনিস্ট পার্টি সঙ্গীতের মূল্য বোঝে।”

শারীরচর্চা
পার্টি কংগ্রেসের বিতর্ক শুরু হচ্ছে সকাল ন’টা থেকে। তার আগে ভোরবেলায় সমুদ্রের ধারে দেখা মিলছে সিপিএম নেতাদের। কেউ বিচ রোডের ধারেই যোগাসন বা ব্যায়াম সেরে নিচ্ছেন। কেউ লম্বা লম্বা পা ফেলে হাঁটছেন। কেউ আবার শুধুই সমুদ্রের হাওয়া ফুসফুসে ভরে নিচ্ছেন। পশ্চিমবঙ্গের নেতারাও বাদ নেই। কেরলের বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোঁরায় প্রচুর বাঙালি যুবক কাজ করেন। মহম্মদ সেলিমের মতো নেতাদের সমুদ্রের ধারে দেখে ছুটে আসছেন তাঁরা। বাসুদেব আচারিয়া, অমল হালদাররাও ঘুরে যাচ্ছেন সমুদ্রের ধারে। তার পরে খবরের কাগজ কিনে রওনা দিচ্ছেন পার্টি কংগ্রেসের দিকে। কেউ কেউ আবার মাছ ধরার বন্দর দেখতে চাইছিলেন। কিন্তু সময়াভাবে হয়ে উঠছে না।

রং সিগন্যাল
পার্টি কংগ্রেসে প্রস্তাব কমিটির চেয়ারপার্সন হয়েছেন বৃন্দা কারাট। প্রতিদিন যে একাধিক প্রস্তাব গৃহীত হয়, তার পুরো বয়ান মঞ্চ থেকে পড়া হয়। গোটা পলিটব্যুরোই রয়েছে মঞ্চে। শনিবার বৃন্দা এক বার প্রস্তাব পড়তে যাওয়ার সময় পলিটব্যুরোর কয়েক জন সদস্যের সঙ্গে কথা বলে বিমান বসু পরামর্শ দিয়েছিলেন, পুরো প্রস্তাব পড়ে সময় নষ্ট করার দরকার নেই। প্রতিলিপি তো বিলি করা হয়েছে, সরাসরি আলোচনায় ঢুকে গেলেই হয়। বিমানবাবুর পরামর্শ শুনে বৃন্দা ফিরে তাকালেন এস আর পিল্লাইয়ের দিকে। ‘কমরেড এসআরপি, আমি কি প্রস্তাব পাঠ করতে পারি’? প্রশ্ন তাঁর। এসআরপি-র উত্তর, ‘ইয়েস’। এ বার মাইক্রোফোনটা নিজের দিকে ঘুরিয়ে বৃন্দার মন্তব্য, ‘সরি বিমানদা! আপনার আপত্তি প্রেসিডিয়ামে খারিজ হয়ে গিয়েছে’!

কমরেডস
চুলে পাক ধরেছে, কিন্তু পুরনো বন্ধুত্বে মরচে পড়েনি। একসময় যাঁরা একসঙ্গে দলের যুব বা ছাত্র সংগঠনে কাজ করতেন, এখন তাঁরাই দলের শীর্ষ কমিটিতে। পার্টি কংগ্রেসে এসে সকলেরই পুরনো কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। পার্টি কংগ্রেসের প্রেসিডিয়ামের অংশ হিসেবে মঞ্চে এম এ বেবি ও মহম্মদ সেলিম। বিতর্কের মধ্যেও তাঁদের ঠাট্টা-ইয়ার্কিতে কমতি নেই। একই সঙ্গে দু’জনে ডিওয়াইএফআই-এর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে ছিলেন। প্রকাশ কারাট, সীতারাম ইয়েচুরি তো আছেনই। তাঁদের পাশাপাশি রয়েছেন এ বিজয়রাঘবন ও নীলোৎপল বসু। দু’জনেই এক সময় এসএফআই-এর সর্বভারতীয় নেতা ছিলেন। এখন দু’জনেই কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য। দু’জনেই তাই পার্টি কংগ্রেসে চূড়ান্ত ব্যস্ত। প্রবীণদের মধ্যে সকলের নজর কেড়েছেন ই পি জয়রাজন এবং এ বিজয়কুমার। প্রথম জন ডিওয়াইএফআইয়ের প্রথম সর্বভারতীয় সভাপতি। দ্বিতীয় জন তাঁর উত্তরসূরি। তাঁদের ঘিরে বারেবারেই ফিরে আসছে পুরনো দিনের কথা।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.