ইন্টারনেটের যুগে চিঠিপত্র পাঠানো যেখানে মুহূর্তেই সম্ভব, সেখানে ব্লক থেকে একটি চিঠি আসতে সময় লাগছে ৮-১০ দিন। এই ভাবেই দীর্ঘদিন ধরে কাজ চলছে দুবরাজপুর ব্লকের পারুলিয়া পঞ্চায়েতে। এর ফলে সময় মতো কাজ করা যাচ্ছে না বা তাড়াহুড়ো করে কাজ করতে গিয়ে নানা ভুল হচ্ছে।
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েতের প্রধান, কর্মী বা কোনও পঞ্চায়েত সদস্য তাঁদের প্রয়োজনে দুবরাজপুর ব্লকে গেলে তাঁদের হাতে প্রয়োজনীয় চিঠিপত্র দিয়ে দেওয়া হয় ব্লক থেকে। তবে সমস্যা হয় তখনই হয়, যখন নির্দিষ্ট সময়ে কেউ ব্লকে না যান। কর্মীদের অভিযোগ, এই ভাবে হাতে করে চিঠি আদান-প্রদানের ফলে গুরুত্বপূর্ণ এবং অতি প্রয়োজনীয় চিঠি দেরিতে পৌঁছনোয় সমস্যার পাশাপাশি রয়েছে চিঠিগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনাও।
কিন্তু এখানে ইন্টারনেট ব্যবহারের অসুবিধা কোথায়? পঞ্চায়েতের কর্মীরা জানান, বিএসএনএলের ল্যান্ডলাইনের পরিবর্তে রয়েছে ডব্লু এলএল পরিষেবা। যা কার্যত অচল। তা ছাড়া, এলাকায় বিএসএনএলের মোবাইল পরিষেবা থাকলেও ঠিক মতো কাজ করে না। দু’একটি বেসরকারি মোবাইল কোম্পানির পরিষেবা বিএসএনএলের মতো। সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন পারুলিয়া পঞ্চায়েতের প্রধান রবিবাল অঙ্কুর। তিনি বলেন, “সময় মতো চিঠি পেলে যে কাজ খুব সহজে করা যেত সেটাই অনেক তাড়াহুড়ো করে করতে হচ্ছে।” এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ব্লক থেকে পাঠানো ‘আমার বাড়ি’ প্রকল্পের জন্য সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতে ৫ জনের নাম চেয়ে পাঠানো চিঠিটি ২৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ব্লক অফিসে জমা দেওয়ার নির্দেশ ছিল। অথচ সেই চিঠি তিনি হাতে পান ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে। রাতারাতি ওই প্রকল্পের প্রাপকদের নামের তালিকা বের করতে খুবই সমস্যায় পড়তে হয়েছিল বলে দাবি কর্তৃপক্ষের।
ইন্টারনেট ব্যবহার প্রসঙ্গে পঞ্চায়েতের কর্মীরা বলেন, “এখানে টাওয়ারের অসুবিধা থাকায় নেট খোলা যায় না। ফলে হাতে হাতে চিঠির উপরেই আমাদের নির্ভর করতে হয়।”
দুবরাজপুরের যুগ্ম বিডিও মানিক সিংহ মহাপাত্র বলেন, “প্রায়শই ওই পঞ্চায়েত থেকে কেউ না কেউ ব্লকে কাজে আসেন। ফলে বিশ্বাসযোগ্য ভাবে চিঠি পৌঁছনোটা সমস্যার কথা নয়। ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারলে অতি দ্রুত চিঠিপত্র পাঠানো সম্ভব হত।” তিনি আরও বলেন, “ব্লকের মোট ১০টির মধ্যে ৭টি পঞ্চায়েতে ইন্টারনেটের সুবিধা রয়েছে। বাকি পঞ্চায়েতগুলিকে বলা হয়েছে প্রয়োজনে বেসরকারি নেটওয়ার্কের পরিষেবা ব্যবহার করতে, যাতে চিঠি আদান-প্রদানের সমস্যা এড়ানো যায়।” |