বর্ধমান জেলা ভাগের প্রস্তুতি শুরু করল প্রশাসন। শনিবার জেলাশাসকের দফতরে বসেছিল একটি সর্বদলীয় বৈঠক। সেই বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলি ঐকমত্যে পৌঁছেছে বলে দাবি জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনার। তিনি জানান, নতুন জেলার সদর আসানসোলে হবে বলে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তবে বর্ধমানের সঙ্গে নতুন গঠিত আসানসোল জেলার সীমানা নির্ধারণ নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। কারণ, বিধানসভা এলাকা ভাঙা যায় না। তা ভাঙতে গেলে ‘ডিলিমিটেশন কমিটি’র সম্মতি লাগে। তাই কোন ব্লক কোথায় পড়বে এবং নতুন থানার সীমানা কী হবে, তা নিয়ে কিছুটা মতবিরোধ রয়েছে রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে। ঠিক হয়েছে, ১৬ এপ্রিল পরবর্তী বৈঠক। সেখানেই তাঁরা এ বিষয়ে তাঁদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন।
ইতিমধ্যেই জেলা পুলিশকে কমিশনারেট এবং গ্রামীণ, এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। সংগঠনগত ভাবে জেলাকে গ্রামীণ ও শিল্প, এই দু’ভাগে ভাগ করে ফেলেছে তৃণমূল-ও। কিন্তু সিপিএম, সিপিআই প্রভৃতি বামপন্থী দলগুলি এখনও সংগঠনকে এই দু’ভাগে ভাগ করেনি। সিপিএমের পক্ষ থেকে বরাবরই জেলা ভাগ নিয়ে আপত্তি উঠেছে। কিন্তু শনিবারের এই বৈঠকে উপস্থিত সিপিএমের তিন প্রতিনিধি, দলের জেলা কমিটির সদস্য বীরেশ মণ্ডল, গণেশ চৌধুরী ও আব্দুল মালেক জেলা ভাগ নিয়ে কোনও আপত্তি জানাননি বলেই দাবি জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনার।
বীরেশ মণ্ডল পরে বলেন, “জেলায় লোকসংখ্যা প্রচুর বেড়েছে। আয়তনও বিশাল। তাই জেলা ভাগ নিয়ে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু যে পদ্ধতিতে আসানসোল ও বর্ধমানের মধ্যে সীমান্তবর্তী এলাকা ভাগ করার কথা হচ্ছে, তাতে আমাদের আপত্তি আছে। যেমন, কাঁকসা ব্লকের তিনটি পঞ্চায়েতকে আসানসোল জেলা ও চারটিকে বর্ধমান জেলায় ফেলার কথা বলা হচ্ছে। কারণ, দুর্গাপুর পূর্ব বিধানসভাকে ভাঙা যাবে না। এর মধ্যে বিদবিহার পঞ্চায়েতের অবস্থান দুর্গাপুরের লাউদোহার কাছে। বলা হচ্ছে, তাকে বর্ধমান জেলায় থাকতে হবে। ফলে এই এলাকার লোকেদের ৯০ কিলোমিটার দূরে বধর্মান জেলায় যেতে হবে। আমরা তাই বলেছি, সীমানার এলাকা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করে দলের মতামত আমরা ১৬ তারিখেই জানাব।”
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের এক অনুষ্ঠান শেষে শনিবার আইনমন্ত্রী তথা তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক মলয় ঘটক জানান, রাজ্যের পাঁচটি জেলাকে ভাগ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, “প্রশাসনিক বৈঠকে উপস্থিত ১২টি স্বীকৃত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা এতে সহমত পোষণ করেছেন। আসানসোলের মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবি মেনে এই জেলাকে ভাগ করা হচ্ছে। এতে প্রশাসনিক কাজে প্রচুর সুবিধা হবে।” |