তৃণমূল নেতাকে মারে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ
লনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী আগের দিনই ‘দলে গোষ্ঠীবাজি না করার’ নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু রবিবারই এক তৃণমূল নেতাকে মারধরের ঘটনায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উঠল বর্ধমানের মঙ্গলকোটে। গুরুতর জখম হয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি তৃণমূলের মঙ্গলকোট ব্লক কমিটির সদস্য কাজি আনোয়ারুল হক। এই ঘটনায় জড়িতদের ধরার দাবিতে মঙ্গলকোটের নানা জায়গায় পথ অবরোধ করেন প্রহৃত নেতার অনুগামীরা। পুলিশ গিয়ে অবরোধ তোলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকালে নতুনহাট-গুসকরা রাস্তার পাশে দোকান খুলছিলেন আনোয়ারুল। এলাকায় তিনি আনু কাজি নামে পরিচিত। সেই সময়ে তিনটি মোটরবাইকে চড়ে কয়েক জন সেখানে আসে। বেগতিক বুঝে আনু কাজি দোকানের উপরে দোতলায় উঠে যান। দুষ্কৃতীরা সেখানে গিয়ে রড, লাঠি দিয়ে মারধর করে। প্রথমে তাঁকে নতুনহাট প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, পরে বর্ধমান মেডিক্যালে স্থানান্তর করা হয়। মারধরের পরে দুষ্কতীরা বোমা-গুলি ছুড়ে গুসকরার দিকে চলে যায় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
দুষ্কৃতীদের ধরার দাবিতে রবিবার পথ অবরোধ মঙ্গলকোটে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তথা প্রহৃত নেতার ভাগ্না রেজাউল মির্জার অভিযোগ, “মোটরবাইকে চড়ে আজাদ মুন্সি, অঞ্জন মুন্সি ও তাদের লোকজন এসে মামাকে মারধর করেছে।” আনু কাজির দাদা মইনুদ্দিন কাজি বলেন, “অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে দলের লোকজনের হাতেই মার খেতে হল ভাইকে।” প্রহৃত নেতার পরিবারের সদস্য শেখ আসরাফ আলি, আয়েষা সুলতানাদের ক্ষোভ, “অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে সিপিএমের জমানাতেও মার খেতে হয়েছে। এ বার তৃণমূলের লোকজন মারল।”
তোলাবাজির অভিযোগকে কেন্দ্র করে মঙ্গলকোটে এর আগেও তৃণমূলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উঠেছে। গত বছর ডিসেম্বরে বোমায় পুড়ে যায় আনু কাজির বাড়ি। গত ২৯ জানুয়ারি এলাকায় আনু কাজির ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত কচি শেখ খুন হন। প্রতিটি ক্ষেত্রেই তোলাবাজির প্রতিবাদ করার জন্যই এমন হামলা হয়েছে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের হয়। সব ক’টি ক্ষেত্রেই অভিযুক্ত আজাদ ও অঞ্জন। এ দিনের ঘটনায় অবশ্য তাঁরা জড়িত নন বলে দাবি আজাদ ও অঞ্জনের। তাঁদের পাল্টা অভিযোগ, “আনু কাজির নেতৃত্বে এলাকায় তোলাবাজি চলে। আমরা প্রতিবাদ করে গ্রামছাড়া হয়েছি।”
বর্ধমান মেডিক্যালে প্রহৃত নেতা। নিজস্ব চিত্র।
গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ অবশ্য সরাসরি স্বীকার করেননি মঙ্গলকোটের তৃণমূল সভাপতি অপূর্ব চৌধুরী। তিনি শুধু বলেন, “আমরা চাই, আনু কাজিকে যারা মারধর করেছে, তাদের পুলিশ গ্রেফতার করুক।” ঘটনায় জড়িতদের ধরার দাবিতে আনু কাজির অনুগামীরা এ দিন লোচন দাস সেতু, স্কুল মোড় ও থানার কাছে পথ অবরোধ করেন। এর ফলে বর্ধমান-কাটোয়া রুটে আটকে পড়ে বেশ কিছু গাড়ি। নতুনহাট বাসস্ট্যান্ড থেকেও ঘটনার পরে কোনও বাস চলাচল করেনি। দুপুর পর্যন্ত বন্ধ ছিল নতুনহাট বাজারও। অবরোধকারীদের অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
মঙ্গলকোট থানার পুলিশ অবশ্য নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ অস্বীকার করে জানায়, কচি শেখ খুনের ঘটনায় ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসডিপিও (কাটোয়া) ধ্রুব দাস বলেন, “তদন্ত চলছে। অভিযুক্তেরা শীঘ্রই ধরা পড়বে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.