অস্ত্বিত্বই নেই, এমন অস্থায়ী কর্মীদের মজুরি বাবদ আসা সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠল কুলটি পুরসভার বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগ তুলেছেন পুরসভার বিরোধী বাম কাউন্সিলররা। তাঁরা জানান, রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তাঁদের আমলে কোনও বেনিয়ম হয়নি দাবি করে অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন পুরসভার উপপ্রধান বাচ্চু রায়।
কুলটি পুরসভায় প্রতি মাসে বেতন তোলেন প্রায় সাড়ে তিনশো অস্থায়ী কর্মী। তাঁরা মূলত শহরের জঞ্জাল সাফাই ও জল সরবরাহের কাজ করেন। দৈনিক ৭০ টাকা হিসেবে মজুরি পান তাঁরা। পুরসভার বিরোধী বাম কাউন্সিলরদের অভিযোগ, এই অস্থায়ী কর্মীদের মধ্যে ১৪৬ জনের কোনও অস্তিত্ব নেই। পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের প্রিয়ব্রত সরকার জানান, ৩৫টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে নিকাশি ও সাফাইয়ের কাজে তিন জন করে নিযুক্ত। কিন্তু প্রতি মাসে বেতন তোলেন প্রায় সাড়ে তিনশো কর্মী। প্রিয়ব্রতবাবু বলেন, “আমরা জানতে চেয়েছি, এই বাড়তি কর্মীরা কোথায় কী কাজ করেন, তার পরিসংখ্যান দিতে হবে।” প্রিয়ব্রতবাবুর দাবি, বোর্ড অধিবেশনে বারবার আবেদন জানিয়েও পুর কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও সদুত্তর মেলেনি। তাই শেষমেশ তাঁরা রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে বিষয়টি জানিয়েছেন। |
কুলটির উপ-পুরপ্রধান তথা সাফাই ও নিকাশি দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল বাচ্চু রায়ের অবশ্য পাল্টা দাবি, এ ধরনের কোনও অনিয়ম তাঁদের আমলে হয়নি। তাঁর কথায়, “বছর পাঁচেক আগে পুরসভায় অনাস্থা এনে বামপন্থীরা কংগ্রেস ও তৃণমূল পরিচালিত বোর্ড ফেলে দিয়ে নিজেরা ক্ষমতায় এসেছিল। সেই সময়েই এই অনিয়ম হয়েছে। আমরা কাউকে কাজ থেকে বসিয়ে দিইনি।” বাচ্চুবাবু আরও জানান, তাঁরা এলাকাভিত্তিক জরিপের কাজ শুরু করেছেন। কোথায় কত অস্থায়ী শ্রমিক প্রয়োজন, তার তালিকা তৈরি করা হবে। যদি কর্মী বাড়তি হয় তবে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বামেদের আমলে এই শ্রমিদের নিযুক্ত করার কথা মানতে চাননি বিরোধী নেতা প্রিয়ব্রত সরকার। তাঁর পাল্টা দাবি, তাঁদের সময়ে মোট ১৭০ জন শ্রমিক ছিলেন। তা কী ভাবে বেড়ে সাড়ে তিনশো হল, তা-ই তাঁদের প্রশ্ন বলে জানান তিনি।
পুর এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, সাড়ে তিনশো সাফাইকর্মী থাকলে ওয়ার্ড পিছু অন্তত ১০ জন করে কর্মী থাকার কথা। কিন্তু বাস্তবে ওয়ার্ড পিছু দু’জনের বেশি কর্মী চোখে পড়ে না। এলাকার সাফাই-ও ঠিক মতো হয় না বলে অভিযোগ। কুলটির পুরপ্রধান তথা তৃণমূল বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়ের আশ্বাস, পুর এলাকায় নিযুক্ত অস্থায়ী কর্মীদের নামের তালিকা পরীক্ষা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। |