বিপাকে চালকল
গুদামের অভাবে বিপাকে পড়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরে চালকলগুলি। রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী সম্প্রতি বালুরঘাটে এসে সমস্যা মেটাতে প্রতি ব্লকে গুদাম তৈরির কথা ঘোষণা করলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না বলে অভিযোগ। জেলায় ছোট বড় মিলিয়ে চালকলের সংখ্যা ৪৮ টি। তার মধ্যে ৩৮ টি বড়। চালকল মালিকদের বক্তব্য, জেলায় ধানের উৎপাদন বেশি। এ বছর রেকর্ড পরিমাণ (৭লক্ষ মেট্রিক টন) ধান হয়েছে। জেলার হিলি বাণিজ্য পথে বাংলাদেশের সঙ্গে ধান-চাল রফতানি হত। বছর দু’য়েক ধরে নিষেধাজ্ঞার জেরে তা বন্ধ রয়েছে। লেভি উৎপাদন করে অন্যান্য জেলায় সরবরাহের জন্য একসময় দক্ষিণ দিনাজপুরে অনেক চালকল গড়ে ওঠে। এখন বিভিন্ন জেলাতে আলাদা করে চালকল গড়ে উঠেছে। এখানকার চালকলগুলিকে সরবরাহ করতে হয় না। মালিকদের অভিযোগ, তাতে চালকলগুলির উৎপাদন মজুত করে রাখার প্রয়োজনীয়তা বেড়েছে। অথচ পর্যাপ্ত গুদাম নেই। সরকারের তরফে গুদাম তৈরির জন্য জমি নির্ধারণের কথা বলা হয়েছিল। অথচ মাসখানেক পেরিয়ে গেলেও সে ব্যাপারে সরকারের তরফে কোনও উদ্যোগই দেখা যাচ্ছে না। জেলা খাদ্য নিয়ামক ভাস্কর হালদার বলেন, “জেলার বাসিন্দাদের জন্য ২০ হাজার টন চাল প্রয়োজন হয়। বাকি চাল চাহিদা মত অন্যান্য জেলায় পাঠাতে সময় লাগে। গুদাম কম থাকায় সমস্যা হচ্ছে। জেলায় সরকারি গুদাম রয়েছে ১০ টি। প্রায় ৩০ হাজার টন চাল মজুতের ক্ষমতা সম্পন্ন আরও ১০/১২ টি গুদামের প্রয়োজন। কেন না চাল অনেক দিন ধরে এখানে মজুত থাকছে।” বর্তমানে জেলায় ছোট বড় মিলে ৪০ টি চালকল চালু রয়েছে। বাকি ৮ টি বন্ধের মুখে। দক্ষিণ দিনাজপুর রাইস মিল অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক রঞ্জন পাল বলেন, “একে ধান-চালের বহির্বাণিজ্য বন্ধ। তার উপর সরকার নির্ধারিত লেভি চাল তৈরি করে মজুত করার মতো গুদাম বা জায়গা নেই।” তিনি জানান, বছর তিনেক আগেও দক্ষিণ দিনাজপুরের চালকলগুলি থেকে লেভি চাল হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগণা, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া-সহ উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়িতে বিপিএল, অন্ত্যোদয়, মিড-ডে মিল-সহ নানা সরকারি প্রকল্পের জন্য সরবরাহ হতো। এখন প্রতিটি জেলাতেই লেভি তৈরি হচ্ছে। এখানকার চালকলগুলিতে ধান-চাল মজুত করার জায়গা নেই। জেলাশাসক দুর্গাদাস গোস্বামী বলেন, “ইতিমধ্যে জেলায় ৩০০ উপর সরকারি শিবিরে চেকের মাধ্যমে প্রায় ৩০ হাজার টন ধান কেনা হয়েছে। ধান কেনার প্রক্রিয়া চলছে।” খাদ্য দফতর সূত্রের খবর, দক্ষিণ দিনাজপুরে চালকলগুলির কাছে ২০ হাজার মেট্রিক টন লেভি চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেছে প্রশাসন। চাষিদের কাছে সরাসরি সহায়ক মূল্যে ধান কিনে চালকলগুলি লেভি উৎপাদন করে খাদ্য দফতরে দেবে। তা ছাড়া এফসিআই-সহ বিভিন্ন সমবায়ের মাধ্যমে প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে শিবির করে চাষিদের কাছ থেকে সহায়ক মূল্যে ধান কেনা চলছে। সব মিলিয়ে এ জেলায় প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে সরকারি তরফে শিবির হচ্ছে। জেলায় তপন ব্লক ছাড়া অন্য কোথায় ধান কেনা নিয়ে চাষিদের ক্ষোভ বিক্ষোভ বিশেষ নেই। খাদ্য নিয়ামকের দাবি, তপনের একাংশ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের সহযোগিতা না মেলায় সমস্যা হয়েছে। তপনের গড়ুইল গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রধান নিরোদ দাসের অভিযোগ, “চাষির থেকে ৩ কুইন্টাল করে ধান কেনার দাবি করা হলেও কাজ হয়নি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.