|
|
|
|
দুর্নীতি, স্বজনপোষণের অভিযোগ |
রাস্তা তৈরির কাজ বন্ধ করে পঞ্চায়েতের কাছে ব্যাখ্যা চাইল প্রশাসন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • চাঁচল |
জাতীয় গ্রামীন কর্মসংস্থান সুনিশ্চিতকরণ প্রকল্পে রাস্তা তৈরিকে কেন্দ্র করে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠেছে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে। অভিযোগ পেয়েই রাস্তার কাজ বন্ধ করে ওই পঞ্চায়েতের কংগ্রেসি প্রধানের কাছে লিখিত ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে প্রশাসন। মালদহের চাঁচলের চন্দ্রপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। অভিযোগ, ২০ লক্ষ টাকার কাজের জন্য টেন্ডার ফর্ম বিলি করার বিজ্ঞপ্তি দিয়েও নির্দিষ্ট দিনে হাজির ছিলেন না প্রধান। ফলে পঞ্চায়েতে গিয়ে ফিরে যেতে হয় আবেদনকারী ঠিকাদারদের। টেন্ডার ফর্ম বিলি না হলেও কয়েকদিন পরেই শুরু হয়ে যায় রাস্তা তৈরির কাজ। টেন্ডার ছাড়াই প্রধানের ঘনিষ্ঠ ঠিকাদাররা ওই কাজ করছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এরপরই তদন্তে নেমে রাস্তা তৈরির কাজ বন্ধ রাখার পাশাপাশি দ্রুত প্রধানকে চিঠির উত্তর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। চাঁচল-২ ব্লকের বিডিও ভাস্কর মজুমদার বলেন, “ওই পঞ্চায়েতে রাস্তার কাজের বরাতকে কেন্দ্র করে দুর্নীতির অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ পেয়েই প্রধানের কাছে লিখিত ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি প্রধানকে রাস্তার কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। সব খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পঞ্চায়েত ও প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মাটি কাটার কাজ ছাড়াও এনআরইজিএস প্রকল্পে ৪০ শতাংশ টাকা রাস্তা তৈরির কাজে খরচ করা যায়। প্রধানের বুথ এলাকায় কংক্রিটের রাস্তা তৈরির ৮টি প্রকল্পের জন্য গত ২২ মার্চ ঠিকাদারদের আবেদন করতে বলা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয় যে ব্লক ও জেলা পরিষদে নথিভূক্ত ঠিকাদাররাই আবেদন করার যোগ্য। আবেদনের পরদিন ফর্ম দেওয়ার কথা বলা হলেও ওই দিন প্রধান পঞ্চায়েতেই আসেননি। দুর্নীতি আঁচ করে অবশ্য থেমে থাকেননি ১১ জন ঠিকাদার। তারা বিডিওকে গোটা বিষয়টি জানান। বিডিওর নির্দেশে পঞ্চায়েতের এক আধিকারিক ওই ঠিকাদারদের লিখিত ভাবে জানান যে প্রধান না আসায় এদিন ঠিকাদারদের ফর্ম দেওয়া যায়নি। গত রবিবার ওই রাস্তার কাজ শুরু হতেই বাসিন্দাদের পাশাপাশি টনক নড়ে ঠিকাদারদের। টেন্ডার ছাড়াই কীভাবে কাজ শুরু হল তা নিয়ে ফের বিডিওর কাছে অভিযোগ জানানো হয়। নিয়ম বহির্ভূত ভাবে প্রধান বাড়িতে বসেই তার ঘনিষ্ঠ ঠিকাদারদের টেন্ডার পাইয়ে দেন বলেও অভিযোগ ওঠে। অভিযোগকারী দুই ঠিকাদার নজরুল হক, লাল মহম্মদ বলেন, “বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল ব্লক ও জেলা পরিষদে নথিভূক্ত ঠিকাদাররাই আবেদন করার যোগ্য। তা না করে প্রধান তার ঘনিষ্ঠ কয়েকজনকে দিয়ে ওই কাজ করাচ্ছেন। টেন্ডারের ফর্ম দেওয়াই হল না, তাহলে টেন্ডার কবে কীভাবে হল সেটাই বোধগম্য হচ্ছে না। প্রশাসনকে সব কিছুই জানানো হয়েছে।” চাঁচলের ভারপ্রাপ্ত মহকুমাশাসক অশোক সরকার বলেছেন, “গুরুতর অভিযোগ। সব খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নব কুমার সিংহ বলেন, “বিডিওর নির্দেশ পাওয়ার পরই বৃহস্পতিবার থেকে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। এর বেশি কিছু বলব না। যা বলার প্রশাসনকেই বলব।” পঞ্চায়েতের দলীয় একাধিক সদস্য দাবি করেছেন, ওই বিষয়ে তাঁরাও কিছু জানেন না। তাদের জানানোও হয় না। চাঁচল-২ ব্লক কংগ্রেস সভাপতি হবিবুর রহমান বলেছেন, “ওখানে রাস্তার কাজ নিয়ে সমস্যা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে প্রধানের কাছে খোঁজ নিয়ে জেনেছি অভিযোগ ঠিক নয়।” |
|
|
|
|
|