অভাবের তাড়নায় যাতে কেউ কিডনি বিক্রি না করেন এলাকায় গিয়ে বাসিন্দাদের কাছে এ ব্যাপারে আবেদন জানালেন রায়গঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত। রবিবার মোহিতবাবু রায়গঞ্জ ব্লকের বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েতের জালিপাড়া এলাকায় যান। মোহিতবাবুর সঙ্গে ছিলেন জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ, দলের রায়গঞ্জ ব্লক সভাপতি লিয়াকত আলি, রায়গঞ্জ লোকসভা যুব কংগ্রেস কমিটির সহ-সভাপতি তুষার কান্তি গুহ-সহ অনেকেই। গরিব বাসিন্দাদের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে কিডনি বিক্রি করানোর অভিযোগে ওই এলাকারই বাসিন্দা শেখ কুদ্দুশ নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রায়গঞ্জ পুলিশের সহযোগিতায় হাওড়ার বাউড়িয়া থানার পুলিশ রায়গঞ্জ থেকে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। কলকাতার শ্যামপুর এলাকার বাসিন্দা শেখ রফিক নামে এক যুবকের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ধৃত কুদ্দুশ গত ৬ বছর ধরে বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকে ১০ জনেরও বেশি গরিব বাসিন্দাকে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে কলকাতায় নিয়ে গিয়ে কিডনি বিক্রি করিয়েছে। কিডনি পাচারচক্রের সঙ্গে তার যোগাযোগ রয়েছে। মোহিতবাবু বলেন, “অভাবের তাড়নায় যাতে কেউ কিডনি বিক্রি না-করেন সে জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। গরিব বাসিন্দারা ১০০ দিনের কাজ, ইন্দিরা আবাস যোজনা, বিপিএলের সুবিধা, বিভিন্ন ভাতা, অন্যান্য সরকারি সুবিধা যাতে পান সে জন্য গ্রামপঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। রাজ্য সরকারকে বিষয়টি জানিয়েছি। দুষ্কৃতীরা গরিব বাসিন্দাদের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে কিডনি বিক্রি করতে যাতে বাধ্য না করান সে ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনকেও বলেছি। মোহিতবাবু জানান, আগামী ৬ মার্চ কংগ্রেস বিধায়কদের একটি প্রতিনিধি দল বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা পরিদর্শন করে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলবেন। তার পর তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট জমা দেবে! গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, জালিপাড়া এলাকায় প্রায় ১২০০ জন বাসিন্দার বসবাস। তাঁরা প্রত্যেকেই মৎস্যজীবী। তাঁদের পক্ষে শংলু জালির অভিযোগ, বছর কয়েক আগে দিল্লিতে একটি কারখানায় দিনমজুরির কাজ করার সময় দুর্ঘটনায় তার ডান হাত কাটা যায়। চিকিৎসার খরচ তোলার জন্য শেখ কুদ্দুশের পরামর্শে কলকাতায় গিয়ে ৮০ হাজার টাকায় একটি কিডনি বিক্রি করেন। বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান কংগ্রেস নেতা মনসুর আলি বলেন, “পূর্বতন রাজ্য সরকারের গাফিলতির জেরে বাসিন্দারা ঠিকমতো সুবিধা পাচ্ছেন না। মোহিতবাবু বিষয়টি রাজ্য সরকারকে জানিয়েছেন।” |