শতবর্ষের অন্নপূর্ণা পুজোয় মাতল ঝালদা
মূর্তি গড়ার সংগতি ছিল না। তাই ঘটেই পূজা শুরু হয়। ছিল না পাকা মন্দির। অগত্যা খড় ও খেঁজুর পাতার কুড়ে ঘরেই সেই ঘট প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১০০ বছর আগে ঝালদায় এ ভাবেই শুরু হয়েছিল অন্নপূর্ণা পুজো। দেখতে দেখতে স্থায়ী মন্দির তৈরি করা হয়েছে। মন্দিরে এসেছে দেবী প্রতিমা। কুপির আলোর বদলে এখন বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত থাকে মন্দির প্রাঙ্গণ। ঝালদা শহরের কয়েক জন যুবকের উদ্যোগে শুরু হওয়া সেই অন্নপূর্ণা পুজো এ বার একশো বছরে পড়েছে। তাই অন্যবারের তুলনায় এ বার পুজোর জাঁকজমকও বেশি। বাসিন্দারা যেন দুর্গাপুজোর আনন্দে মেতেছেন। সূবর্ণবণিকদের পুজো বলে পরিচিত হলেও কালে কালে এখন তা আপামর ঝালদাবাসীর পুজো হয়ে উঠেছে।
নিজস্ব চিত্র
পুজো প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা গেল এলাকার বাসিন্দারা পুজো প্রাঙ্গণে জড়ো হয়েছেন। কচিকাঁচা থেকে বয়ষ্করা এসেছেন। মন্দিরের ভিতরে চলছিল দেবী আরাধনা। অন্নপূর্ণা পুজো কমিটির সভাপতি তথা ঝালদা পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান মধুসূদন কয়াল বলেন, “ঝালদাতে সূবর্ণবনিক সমিতিভুক্ত পরিবারের সংখ্যা প্রায় ৪০০। সবাই মিলে চাঁদা দিয়ে এই পুজোর আয়োজন করা হয়। সমিতির পুজোর তত্ত্বাবধান করলেও সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষ পুজোয় যোগ দেন। সাধ্যমত সবাই সহযোগিতা করেন। সে কারণেই এই পুজো ঝালদাবাসীর পুজো হয়ে উঠেছে।” তিনি জানান, দ্বাদশীর দিনে অন্নকূট উৎসব হয়। সে দিন এলাকার প্রায় ২০ হাজার বাসিন্দা একাসনে বসে প্রসাদ গ্রহণ করেন। তবে পুজো এলেই এলাকার প্রবীণদের মনে পুজোর গোড়ার দিনগুলোর কথা স্মৃতি ভেসে ওঠে। প্রবীন বাসিন্দা উমাপদ চন্দ্র, প্রদ্যোত চন্দ্ররা বলেন, “এই পুজোর সঙ্গে আমাদের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। শরীর সায় না দিলেও পুজোর চারটে দিন বাড়তে থাকতে পারি না। মন্দিরে চলে আসি। পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হলে স্মৃতিচারণা হয়। শৈশবকে যেন ফিরে পাই।”
এখানকার পুজো শুরুর পিছনে একটি কাহিনী প্রচলিত রয়েছে। আর্থিক স্বচ্ছলতা না থাকার জন্য অনেকের বাড়িতে অন্নের টানাটানি ছিল। তাই পরিবারের স্বচ্ছলতা ফেরাতে দেবী অন্নপূর্ণা পুজোর প্রচলন করা হয়। এ বার শতবর্ষ উপলক্ষে পুজোর দিনগুলি আরও আনন্দময় করতে সন্ধ্যায় নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। পুজো কমিটির সদস্য সুজিত চন্দ্র, মিহির দত্তরা বলেন, “কচিকাঁচাদের নাচ-গান রয়েছে। এ ছাড়া পদাবলী কীর্তন, ছৌ-নাচ প্রভৃতির আয়োজন করা হয়েছে।”
মাটি, কাগজ, গাছের পাতা দিয়ে শিল্পী নিখিল চন্দ্রের তৈরি করা ঝালদা শহরের নানা দ্রষ্টব্য স্থানের প্রদর্শনীও অন্যতম আকর্ষণ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.