বিষ্ণুপুর শহরে যানজট
‘ট্রাফিক কিওস্ক’ আছে, নেই যান নিয়ন্ত্রণ
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য জনবহুল এলাকায় বসানো হয়েছিল কাচ ঘেরা ঘর ‘ট্রাফিক কিওস্ক’। কিন্তু সেখানে ট্রাফিক পুলিশই মোতায়েন করা হয়নি। চার বছর ধরে বিষ্ণুপুর শহরের চার প্রান্তে চারটি ‘ট্রাফিক কিওস্ক’ কার্যত অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কিন্তু শহরের যানজট কাটাতে প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। বিষ্ণুপুরের উপপুরপ্রধান তৃণমূলের বুদ্ধদেব মুখোপাধ্যায়েরও অভিযোগ , “যানজটের সমস্যা নিত্যদিনের ভোগান্তির কারণ। বারবার রাস্তার গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করার জন্য পুলিশ প্রশাসনকে অনুরোধ জানিয়েছি। কিন্তু পুলিশ পাওয়া যায়নি।”
মন্দির নগরী বিষ্ণুপুরে বেড়াতে এসে যানজট নিয়ে পর্যটকেরাও মাঝে মধ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এই পুরনো শহরের রাস্তাঘাট সংকীর্ণ। অনেক এলাকায় রাস্তার দু’পাশ বেদখল হয়ে দোকান বসানোর অভিযোগ রয়েছে। রসিকগঞ্জ, গোপালগঞ্জ বাজার, চকবাজার বা স্টেশন রোড এলাকায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত যানজট লেগে থাকে। বাসিন্দাদের ক্ষোভ, নিত্যদিন যানজট লেগেই থাকে। যান নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশের দেখা মেলে না।
মাড়ুইবাজার এলাকায় যানজটের চেনা ছবি। নিজস্ব চিত্র
চকবাজারে বাজার করতে এসেছিলেন বাঁকাদহের বাসিন্দা সুদেব দাস। তিনি বলেন, “সঙ্কীর্ণ রাস্তায় লোকজন যেমন খুশি গাড়ি ঢুকিয়ে দিয়েছে। এর জেরে সাইকেল নিয়েও যাওয়া যাচ্ছে না।” একই অভিজ্ঞতা বিষ্ণুপুর শহরের বৈলাপাড়ার বাসিন্দা সুদীপ্ত দাঁ’রও। তিনি বলেন, “কয়েক জন পুলিশ দিলেই শহরের যানজটের সমস্যা এড়ানো যেত। কিন্তু প্রশাসন সেই উদ্যোগটুকুও নিতে পারছে না।” বাসিন্দাদের ক্ষোভ, পথ নিরাপত্তা সপ্তাহের সময় ঘটা করে পুলিশ নানা কর্মসূচি নেয়। কিন্তু তারপরে বছরের বাকি দিনগুলিতে রাস্তায় নিয়ম ভাঙা চললেও পুলিশ ‘নিষ্ক্রিয়’ই থাকে।
বছর চারেক আগে বিষ্ণুপুর শহরের যানজট ও দুর্ঘটনা এড়াতে চারটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় গড়া হয়েছিল ‘ট্রাফিক-কিওস্ক’। কিন্তু ট্রাফিক পুলিশের অভাবে তা আজও চালু করা যায়নি। মাস খানেক আগে বিষ্ণুপুর বাইপাসের ‘কিওস্ক’টি রাতে লরির ধাক্কায় ভেঙে যায়। এর পরে ‘কিওস্কে’র ভিতরের জিনিসপত্র সবই লোপাট হয়ে যায়। বাকি তিনটির মধ্যে স্টেশন রোড ও চকবাজার এলাকার ‘কিওস্ক’ দু’টিও নষ্ট হয়ে গিয়েছে। শুধুমাত্র বাসস্ট্যান্ডের ‘কিওস্ক’টি ব্যবহারের উপযোগী রয়েছে। কিন্তু জল-ঝড়ে সেটিও নষ্ট হওয়ার পথে।
বছর খানেক আগে বিষ্ণুপুরের বাইপাস রাস্তার চৌমাথায় বরুন সরকার নামে এক কংগ্রেস কর্মী লরির ধাক্কায় মারা যান। তাঁর দেহ নিয়ে শহরে শোক মিছিল হয়। কংগ্রেস সেবাদল শহরে ট্রাফিক পুলিশ নিয়োগের দাবি জানায়। প্রশাসন আশ্বাস দিলেও পরিস্থিতি বদলায়নি। মাঝে মধ্যেই বাইপাস রাস্তায় পথদুর্ঘটনা ঘটছে। কিন্তু বাইপাস মোড়ের ওই ‘ট্রাফিক কিওস্কে’ পুলিশ চোখে পড়েনি। বিষ্ণুপুরের উপপুরপ্রধান বলেন, “ট্রাফিক কিওস্কগুলি কেন ফেলে রাখা হয়েছে জানা নেই।” একই প্রশ্ন বাসিন্দাদেরও। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “এখানে ‘ট্রাফিক সেল’ নেই। পুলিশকর্মীরাই যান নিয়ন্ত্রণ করেন। কর্মী সংখ্যা কম থাকায় ‘কিওস্ক’গুলিতে পুলিশ দেওয়া যায়নি। তবে যানজট সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।” তবে মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) অদীপকুমার রায়ের আশ্বাস, “শহরের কয়েকটি জায়গায় ‘ট্রাফিক সিগন্যালিং’ ব্যবস্থা চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশাকরি শীঘ্রই তা করা যাবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.