বাড়ছে চুরি-ডাকাতি
পরিচারিকা রাখলে থানায় জানানোর পরামর্শ পুলিশের
বাড়িতে কাজের লোক নেই বৃদ্ধ দম্পতির। একমাত্র ছেলে প্রবাসী। পাড়ায় কারও বাড়িতে রাজমিস্ত্রী বা রঙের মিস্ত্রি কাজ করলে তাঁকেও গৃহস্থালীর কাজের জন্য লোক জোগাড় করে দেওয়ার কথা বলেন বৃদ্ধ দম্পতি। সেই সূত্রে এক রঙের মিস্ত্রীর যোগাযোগেই উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহের রহড়ায় অসীম দত্ত ও সীমা দত্তের বাড়িতে কাজে যোগ দেয় বছর আঠারোর টুম্পা সরকার ওরফে রেশমা খাতুন। বাড়ি বাড়ি ঘুরে পরিচারিকার কাজ করে সোনু বিবি, জ্যোৎস্না খাতুনরা। দু’জনেই সদ্য কুড়ি পেরিয়েছে। তবে যে সব বাড়িতে তারা কাজ করে তার কোনওখানেই তারা নিজেদের আ,সল নাম জানায় না। সেখানে তাদের নাম কোথাও মিনতি, কোথাও লতা, কোথাও চামেলি আবার কোথাও মনিকা।
ঘর মোছা থেকে শুরু করে বাসন মাজা ইত্যাদির কাজ ভাল করার সুবাদে গৃহস্থ বাড়িতে মিনতি, লতা, চামেলিদের চাহিদাও প্রচুর। আর এটাই তাদের তুরুপের তাস। যে যে পাড়ায় তারা কাজ করতে যায় সেখানকার সব বাড়ির ভূগোল তাদের নখদর্পণে। এ হেন কাজের লোকের হাতে নিশ্চিন্তে ঘরদোর ছেড়ে গৃহস্থদের অন্যত্র যাওয়ার ঘটনায় উদ্বিগ্ন ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের পুলিশ। কারণ পুলিশের বক্তব্য, সম্প্রতি শিল্পাঞ্চলে ক্রমশ বেড়ে চলা অপরাধে দেখা গিয়েছে অপরাধ সংগঠিত করার ক্ষেত্রে মেয়েদের সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে গৃহস্থের বাড়িতে চুরি-ডাকাতির ক্ষেত্রে এই সোনু বিবি, জ্যোৎস্না খাতুন ওরফে মনিকা, লতা কিংবা চামেলির নাম উঠে আসছে। ইদানী শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় ফাঁকা বাড়িতে ও মন্দিরগুলোতে চুরির সংখ্যা বাড়ছিল। পুলিশের বেশ কয়েকটি সূত্র কিছুদিন ধরেই এই চুরিগুলোতে মহিলাদের উপস্থিতির কথা জানাচ্ছিল। দিন তিনেক আগে সনু, রেশমা, জ্যোৎস্না-সহ চার মহিলা চোরকে পুলিশ গ্রেফতার করে। আদতে জগদ্দলের বাসিন্দা এই চারজন টিটাগড় জি সি রোডের বস্তিতে ঘর ভাড়া করে থাকত।
ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, কি ভাবে কোনও এলাকায় একটি বা দু’টি বাড়িতে কাজের লোক হিসাবে ঢুকে খুব অল্প দিনেই এলাকার খুঁটিনাটি জেনে নিত এরা। বাড়িতে কাজ পাইয়ে দেওয়ার কাজটি কখনও এদের কেউ করত। আবার কখনও রঙ মিস্ত্রির ছদ্মবেশে থাকা এদের পুরুষ সঙ্গীরা বাড়ির বয়স্কদের সঙ্গে গল্প করে কাজের লোকের প্রয়োজন আছে কি না জেনে এদের পাঠাত। এই মহিলা চোরদের মূল লক্ষ্য হল এলাকার কোনও বারোয়ারি বা বাড়ির মন্দির। সাধারণত, অধিকাংশ মন্দিরেই নিরাপত্তার ব্যবস্থাটি ঢিলেঢালা। মন্দিরের তালা ভাঙতে পারলেই নিশ্চিন্তে গয়না ও টাকা হাতিয়ে নেওয়া যায়। এটাকে কাজে লাগাত তারা।
ব্যারাকপুরের গোয়েন্দা প্রধান দীপনারায়ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘বিভিন্ন মন্দিরে যে সব চুরির ঘটনা ঘটছিল সেগুলিতে মহিলাদের হাত আছে খবর পাওয়া যাচ্ছিল। অনেক পরিশ্রম করে চারজনকে ধরা হয়েছে। তবে এরা ভয়ঙ্কর ধূর্ত। এদের আরও কয়েকজন সঙ্গী ছড়িয়ে আছে গোটা শিল্পাঞ্চল এলাকায়। তাদের ধরার চেষ্টা চলছে।” একই সঙ্গে গৃহস্থের প্রতি তাঁর পরামর্শ, কোথাও পরিচারিকা হিসাবে কাউকে কাজে নিলে তা যেন তাঁরা সংশ্লিষ্ট থানায় বিশদে জানান।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.