সৌরভের গুরুর নতুন শিষ্য চমক কেকেআরের
০১৫-এর বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ায় জনৈক চিরাগ জানিকে ভারতের জার্সি গায়ে দেখা যাবে কি না সময় বলবে। কিন্তু তেমন কিছু হলে নিশ্চয়ই সৌরাষ্ট্রের তরুণ মনে রাখবেন কলকাতাকে। নাইট রাইডার্সকে।
কে চিরাগ জানি? বাইশ বছরের তরুণ, মারকুটে বললে একটু কমই বলা হয়। হাতে বাহারি স্ট্রোক। দেশের নামীদামি প্রতিশ্রুতি থেকে বেছে বেছে এ বার নাইটদের ঝুড়িতে। কেন? ইনি শেষ ওভারে নেমে এক ওভারে ২২ তুলে টিমকে জয়ের স্বপ্ন দেখাতে পারেন, অবিশ্বাস্য পরিস্থিতিকে রাতারাতি বদলে দিতে পারেন অনুকূল অবস্থায়। বিস্ফোরক ডান-হাতি ব্যাট করতে নামেন আটে। মহারাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ওই আটে নেমেই ৬৭ বলে করা ৯৮ নটআউট মানেই অবধারিত ভাবে তাঁর সঙ্গে তুলনা টানা হচ্ছে পল ভলথাটির। কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের হয়ে যাঁর ৬৩ বলে অপরাজিত ১২০ মাতিয়ে দিয়েছিল গত বারের আইপিএল।
আর চিরাগ? বান্দ্রা কুর্লা মাঠে ৩১০ তাড়া করতে নেমে ২৩২-৯ থেকে অবধারিত হারের দিকে যাচ্ছিল সৌরাষ্ট্র। সেই সময় হাতে সাত ওভার নিয়ে নামেন চিরাগ। তাঁর বিধ্বংসী ব্যাট থেকে আসা দশটা বাউন্ডারি আর ছ’টা ওভার বাউন্ডারি প্রায় জিতিয়ে দিচ্ছিল তাঁর দলকে। মাসখানেক আগের সেই ম্যাচের কথা বলতে গিয়ে এখনও উত্তেজিত শোনায় সৌরাষ্ট্র কোচ দেবু মিত্রের গলা, “পশ্চিমাঞ্চল দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী জোন। সেই শক্ত গাঁট থেকে আমাদের প্রায় মূলপর্বে তুলে দিয়েছিল চিরাগ। মহারাষ্ট্রের বিরুদ্ধে শেষ ওভারটায় ও ২৩ রান করেছিল! এখনও বিশ্বাস করতে পারি না! আর শুধু ওই ইনিংসটা না, টুর্নামেন্টের বাকি ম্যাচেও ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেলেছে চিরাগ।” কীরকম ভাল? একটা পরিসংখ্যানই বোধহয় যথেষ্ট। এখন পর্যন্ত রাজ্যের হয়ে খেলা পাঁচটা ম্যাচে ২৫৫ রান, গড় ৮৫, স্ট্রাইক রেট ১০২.৪!
চিরাগ জানি: নাইটদের নতুন স্বপ্ন।
চিরাগের জ্বলে ওঠার নেপথ্যে মূল নাম একটাই। দেবু মিত্র। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের শৈশবের কোচ এখন ক্রিকেটার গড়ার কারিগরের চাকরিতে বহাল। চেতেশ্বর পূজারা, এ বারে আইপিএলের সবচেয়ে দামি তারকা রবীন্দ্র জাডেজার পরে এ বার তাঁর শিষ্য চিরাগ। জহুরির চোখ ঠিক চিনে নিয়েছিল চিরাগকে। গত বছরে অগস্টে প্রথম চিরাগের খেলা দেখেন, প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ডেকে নেন সৌরাষ্ট্রের শিবিরে। এ বছর বিজয় হাজারেতে অভিষেক। বাবা, মা, ছোট বোনকে নিয়ে ছোটখাটো সংসার চিরাগের। বাবা পুলিশে চাকরি করেন। “ক্রিকেটের প্রতি প্যাশনটা পেয়েছি বাবার কাছ থেকেই। উনি জেলা স্তরে ক্রিকেট খেলতেন। বাবাকে দেখে দেখে খুব ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়,” বলছেন চিরাগ। হার্ড-হিটার হিসেবে ঘরোয়া ক্রিকেটে পরিচিতি পেলেও নাইটদের নবতম সদস্য ওই একটা বিশেষণের গণ্ডিতে আটকে থাকতে চান না। লাজুক, নরম হিন্দিতে মনে করিয়ে দেন, “আমি কিন্তু চোখ বন্ধ করে ধুমধাড়াক্কা চালাই না। লুজ বল পেলে মারি। পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলতে পারি।” কোচ দেবুও বলছেন, “চিরাগ খুব ঠান্ডা মাথায় ব্যাট করে। আনতাবড়ি চালানোটা ওর স্টাইল নয়। কিন্তু সুযোগ পেলে বল বাউন্ডারির বাইরে পাঠানোর শক্তি আছে ওর ব্যাটে। আর ছেলেটা খুব খাটতে পারে।” অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ, ব্রেট লি-র ভক্ত চিরাগ। আর এখন কেকেআরে টিমমেট ইউসুফ পাঠানের কাছ থেকে জানতে চান ব্যাটিং ব্যাকরণের টুকিটাকি।
আইপিএল ফোরের আকাশে অন্যতম ভারতীয় তারা হয়ে উঠেছিলেন ভলথাটি। আইপিএল ফাইভের মঞ্চটা কি চিরাগের হতে পারে না? “সুযোগ পেলে নিশ্চয়ই পারব,” যখন বলেন চিরাগ, গলায় থাকে প্রত্যয় আর আত্মবিশ্বাস। মনে হয় তিনিই যেন আইপিএল ফাইভে তাঁর দলের অন্যতম স্লোগানের জলজ্যান্ত উদাহরণ।
‘নিউ ডন, নিউ নাইটস’। নতুন ভোর, নতুন কেকেআর।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.