আইন-শৃঙ্খলা নয়, ভিআইপিদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতেই লেগে যাচ্ছে প্রচুর পুলিশ। ফলে ফাঁক থেকে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একটি রিপোর্টে উঠে এল এই তথ্যই।
দেশের এই ভিআইপির মধ্যে রয়েছেন মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক, বিচারপতি, আমলা প্রমুখ। ব্যুরো অফ পুলিশ রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১০ সালে ছ’মাস এবং তার বেশি সময়ের জন্য গোটা দেশে ১৬ হাজার ৭৮৮ জন ভিআইপির নিরাপত্তার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল ২৮ হাজার ২৯৮ জন পুলিশকর্মী। কিন্তু সেই কাজে ব্যস্ত ছিলেন ৫০ হাজার ৫৯ জন পুলিশকর্মী। ২০০৯ সালে ১৭ হাজার ৪৫১ জন ভিআইপির নিরাপত্তার জন্য প্রায় ২৩ হাজার ৬৩৭ জন পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে এই কাজে ব্যস্ত ছিলেন ৪৭ হাজার ৩৫৫ জন।
২০১০-এ বিহারে সব চেয়ে বেশি ভিআইপি-কে নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল। তিন হাজার ৩০ জন। দ্বিতীয় স্থানে পঞ্জাব। এক হাজার ৬৮৫ জন। তার পর পশ্চিমবঙ্গ। এক হাজার ৬৪০ জন। সেই বছরেই এই কাজের জন্য পঞ্জাবে মোতায়েন করা হয়েছিল পাঁচ হাজার ৪১০ জন, দিল্লিতে পাঁচ হাজার এক জন এবং অন্ধ্রে তিন হাজার ৯৫৮ জন পুলিশকর্মী।
এর ফলে সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়ার কাজটি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে পুলিশের কাছে। জনবহুল রাজ্যগুলিতে মাথাপিছু পুলিশের সংখ্যা নগণ্য। দেশের জনসংখ্যার নিরিখে যেখানে ১ লাখ মানুষের নিরাপত্তার জন্য ১৭৪ জন পুলিশ প্রয়োজন, সেখানে পশ্চিমবঙ্গে এক লক্ষ মানুষের জন্য মাত্র ৮১ জন, বিহারে ৮৮ জন, মধ্যপ্রদেশে ১১৫ জন, রাজস্থানে ১১৮ জন পুলিশকর্মী রয়েছেন। কম জনসংখ্যার রাজ্যগুলির অবস্থা অবশ্য ভাল। ত্রিপুরায় ১ লাখ মানুষের নিরাপত্তার জন্য এক হাজার ১২৪ জন, মণিপুরে এক হাজার ১৪৭ জন এবং মিজোরামে এক হাজার ১১২ জন পুলিশকর্মী রয়েছেন। শুক্রবার এই রিপোর্ট পেশ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম জানান, ভিআইপি-র সংখ্যা বাড়তে থাকায় অবস্থা আরও জটিল হচ্ছে। তিনি বলেন, “এর জন্য ভিআইপিদের নিরাপত্তার কাজে মোতায়েন পুলিশদের ব্যাপারে নির্দিষ্ট সময় পর পর পর্যালোচনা দরকার।” |