ঝাড়খণ্ডের ৯০ শতাংশ মানুষ এখনও পরিশুদ্ধ পানীয় জল পান না। সরকারি তথ্য অনুযায়ী ২০০০ সালের নভেম্বর মাসে ঝাড়খণ্ড রাজ্য আত্মপ্রকাশের পর এ যাবৎ মাত্র ১০ শতাংশ রাজ্যবাসীর কাছে পরিশুদ্ধ জল সরবরাহের ব্যবস্থা হয়েছে।
‘পরিশুদ্ধ-জল’ সরবরাহের ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকলেও গত এক দশকে এই রাজ্যটি শিক্ষায়তন বিস্তারের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ঘটিয়েছে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী ওই সময়কালে রাজ্যে স্কুল এবং কলেজের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৯৪ শতাংশ। তবে শিক্ষা প্রসারে তার সুফল অবশ্য তেমন ভাবে মেলেনি।
কারণটা কী? সরকারি সূত্রের খবর, গত এক দশকে যে হারে স্কুল-কলেজের সংখ্যা বেড়েছে সেই অনুপাতে শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। সব মিলিয়ে এখনও প্রয়োজনের তুলনায় প্রায় ৩০ হাজারেরও বেশি
শিক্ষাকর্মী কম রয়েছেন। এর জেরে শ্রেণিকক্ষে নিয়মিত পাঠনপাঠন প্রক্রিয়া মার খাচ্ছে। তাই স্কুল কলেজের সংখ্যা বাড়লেও শিক্ষার মানোন্নয়ন তেমন ঘটেনি।
ঝাড়খণ্ডের অধিকাংশ ঘরবাড়ি এখনও কাঁচা। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী রাজ্যের ৫৮ শতাংশেরও বেশি লোক এখনও কাঁচা বাড়িতে বাস করেন। তবে কাঁচা বাড়িতে থাকলেও এই রাজ্যের ৮৮ শতাংশেরও বেশি মানুষ বাস করেন নিজের বাড়িতে। নিজের বাড়িতে বসবাস করার প্রশ্নে গোটা দেশের মধ্যে এগিয়ে রয়েছে ঝাড়খণ্ড। রাজ্যবাসীর কাছে এটা গর্বের বিষয় হতেই পারে।তবে নিজের বাড়িতে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যায় দেশের মধ্যে প্রথম হলেও, শৌচাগার ব্যবহারের ক্ষেত্রে এখনও অনেকটাই পিছিয়ে ঝাড়খণ্ড। এখনও রাজের বিশাল সংখ্যক মানুষ মাঠঘাটেই শৌচকার্য সারায় বেশি স্বাচ্ছন্দ্য পান।
পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, গ্রামে প্রাথমিক শিক্ষা এবং পরিবহণ ব্যবস্থার কিছু উন্নতি ঘটলেও গত এক দশকে ঝাড়খণ্ডের অগ্রগতি মূলত শহরকেন্দ্রিকই থেকে গিয়েছে। অন্য ভাবে বলা যায়, শহরকে ঘিরেই উন্নয়নের কাজ চলেছে জেলাগুলিতে। সে ক্ষেত্রে উন্নয়নের সর্বাধিক ছোঁয়া লেগেছে রাঁচি, পূর্ব সিংভূম, ধানবাদ, বোকারো, রামগড়, দেওঘর এবং হাজারিবাগ জেলায় তুলনায় পিছিয়ে আছে অন্য জেলাগুলি। ইতিমধ্যেই উন্নয়নের প্রশ্নে গ্রাম-শহরে বৈষম্যের অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। |