অণ্ণার পরে এ বার যোগগুরু রামদেব। দুর্নীতি ও কালো টাকার প্রশ্নে ফের সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার হুমকি দিলেন রামদেব। তাঁর শিবিরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, খুব শীঘ্রই ওই বিষয়গুলি নিয়ে সারা দেশে শান্তিপূর্ণ জন-আন্দোলনে নামতে চলেছেন রামদেব। পাশাপাশি দিল্লিতে এক দিন ধর্নায় বসার হুমকিও দিয়ে রেখেছেন এই যোগগুরু। আগামী ৩ জুন দিল্লিতে তিনি ওই বিক্ষোভ-অবস্থানে বসবেন বলে ঠিক হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত বছর ওই দিনেই রামলীলা ময়দান থেকে তাঁকে জোর করে তুলে দিয়েছিল পুলিশ। তারই বর্ষপূর্তি হিসেবে ওই দিনেই প্রতীকি ধর্নায় বসতে চলেছেন রামদেব ও তাঁর সঙ্গীরা।
ইতিমধ্যেই অণ্ণা শিবিরের তরফে ওই ধর্নাকে সমর্থন জানানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন রামদেব ঘনিষ্ঠ বালকৃষ্ণ। প্রথমে মুম্বই ও তার পরে দিল্লি-সরকারের বিরুদ্ধে অণ্ণার দুর্নীতি বিরোধী লড়াইয়ে যে ভাবে জনসমর্থনে ভাঁটা পড়েছে, তাতে উদ্বিগ্ন অণ্ণা থেকে রামদেব সব পক্ষই। রাজনৈতিক দলগুলির মতো অণ্ণা বা তাঁর সহযোগীদের সে ভাবে ঘোষিত কোনও ক্যাডারবাহিনী নেই। যে তরুণ প্রজন্মের ভরসায় অণ্ণারা লড়াইয়ে নেমেছিলেন, তাঁদের উৎসাহেও ভাটার টান স্পষ্ট। কম-বেশি একই কথা রামদেবের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এই পরিস্থিতিতে কৌশল বদলে জনভিত্তি বাড়াতে অণ্ণা ও রামদেব যৌথ আন্দোলনের পথে হেঁটেই সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে চলেছেন। তিনি যে রামদেবের লড়াইকে সমর্থন করছেন, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন অণ্ণা। আজ তিনি বলেছেন, “রামদেবের সঙ্গে শীঘ্রই দেখা হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে এক সঙ্গে আন্দোলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।”
রামদেবের নতুন করে এই আন্দোলনে নামার প্রসঙ্গে আজ কংগ্রেসের তরফে কোনও মন্তব্য করা না হলেও সাংসদদের প্রতি করা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বক্তব্যের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন অধিকাংশ দলই। সম্প্রতি অণ্ণা-ঘনিষ্ঠ কেজরিওয়াল মন্তব্য করেন, ‘সংসদের প্রতি শ্রদ্ধা কী করে দেখাব, যেখানে ১৬২ জন সাংসদের নামে ফৌজদারি মামলা রয়েছে!’ তাঁর ওই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করতে চলেছেন কেন্দ্রীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পমন্ত্রী বীরভদ্র সিংহ। প্রসঙ্গত, যে ১৪ জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অণ্ণা-শিবির দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে, সেই তালিকায় বীরভদ্রের নামও রয়েছে। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন ওই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিনি ইতিমধ্যেই কেজরিওয়ালকে একটি চিঠি লিখেছেন। তাতে ওই মন্তব্য করার জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছেন বীরভদ্র।
সংসদ অবমাননার অভিযোগে কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস এনেছেন কংগ্রেস সাংসদ জগদম্বিকা পাল, সজ্জন সিংহ, আরজেডি-র রামকৃপাল যাদব, রাজনীতি প্রসাদের মতো নেতারাও। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের অবিলম্বে জবাব দিতে কেজরিওয়ালকে চিঠি দিয়েছেন লোকসভা সচিবালয়ের স্বাধিকার কমিটির যৌথ সচিব ভি আর রমেশ। পাল্টা জবাবে আজ কেজরিওয়াল জানিয়েছেন, “আমি কিছু ভুল বলিনি। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই আমি জবাব দেব। তা ছাড়া ক্ষমা চাওয়ারও প্রশ্ন নেই।” |