কখনও চাকা আটকে আবার কখনও এসি বিকল হয়ে থমকে যাচ্ছে মেট্রোর রেক। অফিস টাইমে মাত্রাতিরিক্ত ভিড়ও নিত্যদিনের ঘটনা। তার উপরে প্রায়শই বাতিল হয় ট্রেন। সব মিলিয়ে ‘মেট্রো-দুর্ভোগ’ এখন কার্যত বারোমাস্যার পর্যায়ে। এর মধ্যেই কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সপ্তাহে ৫ দিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেট্রো চলবে ৬ মিনিট অন্তর। সম্প্রতি শুরু হয়েছে এই পরিষেবা। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, এই নতুন ব্যবস্থায় দুর্ভোগ কি এড়ানো যাবে?
মেট্রো সূত্রে খবর, যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য অনেক সময়েই মেট্রো ঠিকমতো চলে না। ট্রেন বাতিল হলে পরের মেট্রোয় ভিড় যথেষ্টই বাড়ে। প্রসঙ্গত, বেলার দিকে দু’টি মেট্রোর সময়ের ফারাক বেশি হওয়ায় সমস্যা আরও বাড়ে। কর্তৃপক্ষের দাবি, যাত্রী-সুবিধার্থে দু’টি মেট্রোর ব্যবধান কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, এত দিন যেখানে ২৩৬ বার ট্রেন চালিয়ে মাঝেমধ্যেই ফাঁপড়ে পড়তে হয়েছে, সেখানে এখন দিনে ২৭০ বার সুষ্ঠু ভাবে ট্রেন চালানোর উপায় কী? মেট্রোর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (সাধারণ) প্রত্যুষ ঘোষ বলেন, “সম্প্রতি নতুন একটি রেক এনেছি। আরও ৬টি নতুন এসি রেক আনা হবে। তাই সময়সীমা কমানো সম্ভব হয়েছে।” মেট্রো সূত্রে খবর, একটি ট্রেন দিনে গড়ে ৭-৮ বার যাতায়াত করতে পারে। এই হিসেবে, দিনে ২৭০ বার যাতায়াত করতে গড়ে ১৮-১৯টি রেক প্রয়োজন। মেট্রোর মুখপাত্রের দাবি, ২৪টি রেক আছে। আরও ছ’টি এ বছরেই আসবে। ফলে সমস্যা হবে না। পাশাপাশি প্রশ্ন উঠেছে, দিনে এত বার মেট্রো চললে, রক্ষণাবেক্ষণের সুযোগ থাকবে কি? এত দিন ২৩টি রেকে যে ভাবে মেট্রো চলত, তাতেও রক্ষণাবেক্ষণ ঠিকমতো হত না বলে অভিযোগ। কর্তৃপক্ষের দাবি, চলাচলের সময়ের পরে কারশেডে রেকগুলির রক্ষণাবেক্ষণ হয়।
মেট্রোর বাম-ইউনিয়নের দাবি, মেট্রোয় পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে। পর্যাপ্ত কর্মীও নেই। ইউনিয়নের তরফে প্রসাদ গুহ ও খোকন মজুমদার জানান, এই দু’টি অভাব মেটাতে কর্তৃপক্ষ উদ্যোগী না হলে, রেক বাড়িয়ে বা মেট্রো চলাচলের সংখ্যা বাড়িয়ে বিশেষ লাভ হবে না। যদিও প্রত্যুষবাবুর পাল্টা দাবি, মেট্রো চলাচলের সংখ্যা বাড়লেও রক্ষণাবেক্ষণে কোনও সমস্যা হবে না।
তবুও মেট্রোর সাম্প্রতিক ‘পারফরম্যান্সে’র পরে এই নতুন প্রক্রিয়া নিয়ে পুরোপুরি আশাবাদী নন যাত্রীরাও। নিত্যযাত্রী সঞ্জয় কুণ্ডুর কথায়, “ভাল খবর। কিন্তু ঠিকমতো চলবে কি?” |