এক্সপ্রেসওয়ের আলো জ্বালানোর দায়িত্ব কার? পূর্ত বিভাগ না জাতীয় সড়ক পরিবহণ দফতরের? এই নিয়েই চলছে চাপান-উতোর। আর তার জেরে দীর্ঘদিন ধরে অন্ধকার হয়ে রয়েছে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে। অভিযোগ, এর সুযোগে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে অপরাধমূলক কার্যকলাপ বেড়েই চলেছে। আলো না-থাকায় রাতের অন্ধকারে মাঝেমধ্যে ঘটে যাচ্ছে দুর্ঘটনাও।
দীর্ঘদিন ধরে ছোট-বড় খানাখন্দে ভরা ছিল বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে। এখন ওই রাস্তা সারানোর কাজ চলছে। এক্সপ্রেসওয়ের ধারে বাতিস্তম্ভগুলিতে আলোও জ্বলছে না। কিন্তু, জাতীয় সড়ক সংস্থা (এনএইচএআই) পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, রাস্তায় আলো দেওয়ার কাজ পূর্ত বিভাগের। এ দিকে, পূর্ত বিভাগ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, এখন এই রাস্তার দায়িত্বে জাতীয় সড়ক সংস্থা। সুতরাং রাস্তার ধারে আলো লাগানোর দায়িত্বও তাদেরই।
যশোহর রোডের দু’নম্বর গেট থেকে শুরু হয়ে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত সাড়ে সাত কিলোমিটার লম্বা এই এক্সপ্রেসওয়ে কলকাতা শহরে ঢোকার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। শুধু বিমানবন্দর যেতেই নয়, নিবেদিতা সেতু হয়ে দিল্লি রোড বা বম্বে রোড ধরার জন্যও এই রাস্তা ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ এই এক্সপ্রেসওয়েতে রাতেও প্রচুর যানবাহন চলে। নিউ টাউন বা রাজারহাট এলাকার অফিস থেকে বালি বা উত্তরপাড়ার দিকে ফেরার জন্যও এই রাস্তা ব্যবহার করেন অনেকেই। |
নিউ টাউনের এক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী অলোক রায়ের অভিযোগ, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে এই রাস্তায় আলো না থাকায় রাতে যাতায়াত করতে রীতিমতো ভয় করে।’’ ওই রাস্তার ধারেই তৈরি হয়েছে বেশ কয়েকটি আবাসন। বিমানবন্দরের দু’নম্বর গেটের কাছে একটি আবাসনের বাসিন্দা সমীরবরণ সাহার অভিযোগ, ‘‘রাস্তা অন্ধকার থাকার সুযোগে মাঝেমধ্যেই আমাদের আবাসনের সামনে চুরি-ছিনতাই হয়।’’ এলাকাবাসীর প্রশ্ন, গোটা কলকাতা জুড়েই যেখানে রাস্তার সৌর্ন্দযায়নের কাজ চলছে, বসছে আলো, নিউ টাউন এক্সপ্রেসওয়েতেও আলোকস্তম্ভ বসে গিয়েছে, সেখানে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় এখনও আলো বসছে না কেন?
পূর্ত দফতর ও জাতীয় সড়ক সংস্থার মধ্যে চাপান-উতোর চললেও কবে ওই রাস্তায় আলো জ্বলবে, তার দিশা দিতে পারেনি কোনও দফতরই। জাতীয় সড়ক সংস্থার এক অধিকর্তা অনিল দীক্ষিত বলেন, ‘‘বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দেখভাল করার দায়িত্বে থাকলেও কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি অনুযায়ী রাস্তায় আলো জ্বালানোর কাজ আমাদের নয়। এই দায়িত্ব পূর্ত দফতরের। বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে আলো বসানোর ব্যাপারে অনেক বার পূর্ত দফতরকে চিঠি দিয়েছি। চিঠি দিয়েছি উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসককেও। আমরা আমাদের দায়িত্ব মতো রাস্তা সারিয়ে দিলাম। এ বার রাস্তায় আলো জ্বালানোর দায়িত্ব পূর্ত দফতরের।’’ অন্য দিকে, পূর্ত দফতরের ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের চিফ ইঞ্জিনিয়ার অরুণ ভদ্র বলেন, ‘‘এই রাস্তা যখন তৈরি হয়, তখন দায়িত্বে ছিল পূর্ত বিভাগ। সেই সময়ে আমরা রাস্তা তৈরি করে আলোও বসিয়েছিলাম। পরে বেশির ভাগ আলোই খারাপ হয়ে যায়। ওই রাস্তা এখন জাতীয় সড়ক সংস্থার অধীনে চলে গিয়েছে। তাই আলো জ্বালানোর দায়িত্ব এখন তাদেরই। তবে, এই সমস্যার সমাধান করতে জাতীয় সড়ক বিভাগ ও স্থানীয় পুরসভাগুলির সঙ্গে আলোচনায় বসা যেতে পারে।’’ |