লজেন্স এখন আতঙ্ক, খুচরো সমস্যায় জেরবার শিলংবাসী
ফি বা লজেন্স পছন্দ করুন আর না করুন, শিলংয়ে পা দিলে খুচরো টাকা বা পয়সার বদলে এই বিকল্প বস্তুটি পার্সে পুরতেই হবে। এমনকী মিষ্টি যাঁরা পছন্দও করেন, দিবারাত্রি ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ লজেন্সের গুঁতোয় তাঁদেরও রক্তচাপ বেড়ে যাচ্ছে। লজেন্সের ঠেলায় তিক্ত হয়ে উঠেছে বিকিকিনি।
শিলংয়ে বেশ কিছুকাল ধরে চলছে কম অঙ্কের টাকা ও খুচরো পয়সার সঙ্কট। কোনও দোকানেই দু’টাকা, পাঁচ টাকা ফেরত দেওয়া হয় না। পরিবর্তে গছিয়ে দেওয়া হচ্ছে লজেন্স বা টফি। লাবানের বৌদি, রিলবং-এর কাকিমা, লাইটুমরার মারিয়াম আন্টি বা পুলিশবাজারে বাঙালি পর্যটক পরিবার-- সকলের একই অভিজ্ঞতা। দিল্লি মিষ্টান্ন ভাণ্ডার হোক বা গিদেতি, ছাতার দোকান হোক বা পোশাক বিপণি--সর্বত্র একই অজুহাত। খুচরো টাকার নাকি সরবরাহ নেই। শহরের বহুজাতিক বিপণিতে ক্যাশ কাউন্টারের পাশেই রাখা ক্যান্ডির বাক্স। খুচরোর পরিবর্তে ক্যান্ডি নিতেই হবে আপনাকে। ট্যাক্সিতে উঠলেও খুচরোর বদলে ফেরত পাবেন ‘ম্যাঙ্গো বাইট’। কেবল পাঁচ টাকার অজুহাত দিয়ে শুরু হলেও আজকাল, ১০ টাকার নীচের অঙ্কের কোনও খুচরো পয়সাই ফেরত দেওয়া হয় না।
নোট ফেরিওয়ালা। ছবি: উজ্জ্বল দেব
বেশ কিছু দোকান আবার অন্য উপায় বের করেছে। তারা পাঁচ টাকার বদলে, ‘৫’ ছাপ্পা মারা স্লিপ দিচ্ছে। বলা হচ্ছে, ওই দোকান থেকেই পরে অন্য কোনও দ্রব্য কিনলে, স্লিপের বদলে পাঁচ টাকা মূল্য ধরা হবে। তাই, পার্সে আসল পাঁচ টাকার পাশাপাশি, পাঁচ টাকার ছাপ্পা স্লিপও অবলীলায় জায়গা করে নিচ্ছে। একেবারে হাতেগড়া বিকল্প নোট। যার আইনগত কোনও ভিত্তি নেই। দিল্লি মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের বক্তব্য, “যে সব পাঁচ টাকার নোট পড়ে আছে, তা এত ছেঁড়াফাটা যে ক্রেতারা নেবেন না। নতুন পাঁচ টাকা আসছেই না। বাধ্য হয়েই লজেন্স দিচ্ছি।” শিলং-এর দোকান-বাজারে ছেঁড়া-ফাটা নোটের দশা দেখলে বহিরাগতরা কিছুতেই নিতে চাইবেন না। এমনকী, দশ থেকে একশো টাকার নোটও অধিকাংশই পুরোনো। এক টাকা থেকে পাঁচ টাকার বিনিময়ে তা-ও লজেন্স জুটবে। কিন্তু, শিলংয়ে পঞ্চাশ পয়সার মুদ্রা একেবারেই ‘অচল’। ৫০ পয়সা দামের লজেন্স কিনলেও দু’টো কিনতে হবে। দোকানদার ৫০ পয়সার মুদ্রা নেবেনই না।
ছেঁড়া নোট ও খুচরো পয়সা নিয়ে নিত্যদিনের এই সমস্যার শেষ কবে হবে তার কোনও আভাসই আপাতত নেই। জীর্ণ, ছেঁড়া পুরোনো টাকা বদলানোর একমাত্র ভরসা, পুলিশবাজারে ‘নোট ফিরিওয়ালা’র দল। লাঠিতে কাগজের পতাকার মতো নোট লাগিয়ে তাঁরা ঘোরেন। স্বভাবতই ছেঁড়া নোট বদলাতে গেলে ‘কমিশন’ দিতেই হবে তাঁদের।
কিন্তু জনগণের এই ভোগান্তি সত্ত্বেও এই সমস্যা নিয়ে হেলদোল নেই প্রশাসন কর্তাদের। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানাচ্ছে, রাজ্যে খুচরো পয়সা বা এক থেকে পাঁচ টাকার কোনও ঘাটতি নেই। জেলাশাসকের দফতর জানাচ্ছে, “জনগণ আমাদের কাছে এই নিয়ে অভিযোগ জানাননি। অভিযোগ না পেলে কী করে ব্যবস্থা নেব?”
বেড়াতে এসে নাজেহাল পর্যটক বা পাঁচ টাকার বদলে লজেন্স নিয়ে ফেরা আম জনতা বিস্তর জট পেরিয়ে জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানাবেন-এমনটা আশা করাও বাড়াবাড়ি। পরিস্থিতি সামলাতে, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে জানুয়ারি মাসে ‘কয়েন মেলা’র আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু মেলার পরেও শিলংয়ে খুচরো সমস্যা রয়েই গিয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.