সপ্তাহখানেক আগেই এক ছাত্রীকে ভর্তি নেওয়া নিয়ে বিবাদ বেধেছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকদের মধ্যে। সেই ছাত্রী এখনও ভর্তি হতে পারেনি। রানিগঞ্জে হিন্দি বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি নিয়ে সমস্যা নতুন কিছু নয়। সেই সমস্যা সমাধানে আর একটি হিন্দি বালিকা বিদ্যালয় নির্মাণের প্রস্তাব দেওয়া হল পুরসভার বাজেটে। এ ছাড়াও এ বারের বাজেটে রানিগঞ্জ পুর এলাকায় একটি মাদ্রাসা নির্মাণ ও সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের জন্য হস্টেল নির্মাণের জন্যও অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে।
পুরসভা সূত্রে জানা যায়, রানিগঞ্জ পুর এলাকায় প্রায় ৪০ শতাংশ বাসিন্দা হিন্দিভাষী। এলাকায় মাত্র একটি হিন্দি বালিকা বিদ্যালয় থাকায় সমস্যায় পড়েন ছাত্রছাত্রীরা। তাই আর একটি স্কুলের প্রয়োজন রয়েছে। এ ছাড়া, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পড়ুয়াদের জন্য একটি হস্টেলের দাবিও দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি পুরসভায় পেশ হওয়া বাজেটে এই সব দাবি মেটানোর আশ্বাস মিলেছে। |
সিপিএম পুরপ্রধান অনুপ মিত্র জানান, এ বার পুরসভার বার্ষিক বাজেটে প্রায় ৩১ কোটি ৯৩ লক্ষ ৫৩ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এর মধ্যে হিন্দি বালিকা বিদ্যালয়, সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের ছাত্রাবাস ও মাদ্রাসা নির্মাণের জন্য মোট ৬০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। অনুপবাবু জানান, শহরের গির্জাপাড়ায় বালিকা বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের জন্য জমি দিয়েছেন একটি বেসরকারি সংস্থা। রাজারবাঁধে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পড়ুয়াদের জন্য যেখানে হস্টেল গড়ার কথা ভাবা হয়েছে, সেই ১৯ কাঠা জমি পুরসভার নিজস্ব। এ ছাড়া মাদ্রাসা নির্মাণের জন্য জমি দান করেছে কুমারবাজারের দত্ত পরিবার। রানিগঞ্জ টিডিবি কলেজের হিন্দির প্রাক্তন অধ্যাপক ডি পি বার্নোয়াল, আসানসোল বিবি কলেজের অধ্যক্ষ দামোদর মিশ্র, ঊর্দু সায়ের ঈশ্বর বেতাবরা বলেন, “বাজেটের প্রস্তাব অনুযায়ী কাজ হলে দীর্ঘদিনের চাহিদা পূরণ হবে।”
পুরপ্রধান অনুপবাবু জানান, হিন্দি বিদ্যালয় চালুর জন্য পর্ষদের কাছে অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। মাদ্রাসা ও হস্টেলের ব্যাপারে সমীক্ষা শেষ হয়ছে। অনুমতিও শীঘ্রই মিলবে। পুরপ্রধান আরও জানান, এ বার বাসস্ট্যান্ড উন্নয়ন প্রকল্প, শিশুবাগান ও হাটতলায় দু’টি পুরবাজার উন্নয়নে মোট এক কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এ ছাড়া রাস্তাঘাট, পানীয় জল, বিদ্যুৎ ও শিক্ষাখাতে বেশি নজর দেওয়া হয়েছে। সিহারসোলে পুর এলাকার একমাত্র শ্মশান ও রনাইয়ে কবরস্থান এলাকার উন্নয়নের ব্যাপারেও পরিকল্পনা হয়েছে বলে জানান অনুপবাবু। তিনি জানিয়েছেন, পুরসভার নিজস্ব আয় চার কোটি চল্লিশ লক্ষ টাকা। বাকি টাকার সংস্থান হবে বিভিন্ন সরকারি অনুদান থেকে।
এ প্রসঙ্গে রানিগঞ্জ পুরসভার একমাত্র বিরোধী কাউন্সিলর তৃণমূলের হেনা খাতুনের দাবি, “মাদ্রাসা ও ছাত্রাবাস গড়ার বিষয়গুলি দু’বছর আগেই অনুমোদন পেয়েছে। তাই এ বার ফের বাজেটে এই প্রসঙ্গ ওঠায় আমি খানিকটা বিস্মিত। তবে দেখতে হবে, বাজেটের প্রস্তাব যেন শুধু কাগজে-কলমেই না থেকে যায়।” তিনি আরও জানান, পুর এলাকায় সব থেকে বড় সমস্যা পানীয় জলের। আমরাসোঁতা, আহমেদনগর এলাকায় জলের সমস্যা রয়েছে। কুমারবাজার নিচু এলাকায় বিদ্যুৎ ও জলের সরবরাহ নেই। তাই অন্য সব কিছুর আগে শহরের জলসমস্যা মেটানোর দিকে পুরসভার নজর দেওয়া উচিত বলে দাবি করেছেন বিরোধী কাউন্সিলর। |