নমুনা উত্তরপত্র নিয়ে বিভ্রান্তি
খাতা দেখতে গিয়ে বিপাকে শিক্ষকেরা
চ্চ মাধ্যমিকের বাংলার খাতা দেখার দায়িত্ব পাওয়া শিক্ষকদের যে নমুনা উত্তরপত্র দেওয়া হয়েছে তাতে একাধিক প্রশ্নের উত্তর সঠিক নয় বলে অভিযোগ উঠল। বিপাকে পড়েছেন খাতা দেখার দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকেরা। খাতার মূল্যায়ন করতে গিয়ে অনেকেই বিভ্রান্ত হচ্ছেন বলেও অভিযোগ। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের ওই উত্তরপত্র নিয়ে সরব হয়েছে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন। সংশোধনী উত্তরপত্র বিলির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে অস্বস্তিতে পড়েছেন সংসদের কর্তারা। সংসদের উত্তরবঙ্গের উপ সচিব মুক্তা নার্জিনারি বলেন, “ওই ব্যাপারে যা বলার কলকাতার প্রধান অফিস থেকেই বলতে পারবে। আমরা কিছু ক্ষেত্রে বিভ্রান্তির অভিযোগ পাওয়ার পরে তা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে এনেছি।” বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন সূত্রেই জানা গিয়েছে, উচ্চমাধ্যমিকের বাংলার খাতা দেখার জন্য নিয়মাবলী সম্বলিত নির্দেশিকার নমুনা উত্তরপত্র শিক্ষকদের দেওয়া হয়েছে। ওই সমস্ত নমুনা উত্তরপত্রে একাধিক প্রশ্নের সঠিক উত্তর না থাকায় বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছেন শিক্ষকেরা। অনেকেই বিষয়টি প্রধান পরীক্ষকদের নজরে আনার পরে বেশ কয়েকটি উত্তর সংশোধন করে নতুন করে নমুনা উত্তর ও নির্দেশিকা পাঠানোর জন্য সংসদ কর্তৃপক্ষের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে। তবে এখনও নয়া নির্দেশিকা বা নমুনা উত্তরপত্র শিক্ষক বা প্রধান পরীক্ষক কারও কাছেই পৌঁছয়নি। ফলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খাতা দেখে জমা দেওয়ার ব্যাপারে দুশ্চিন্তা বেড়েছে তাঁদের। পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতির কোচবিহার জেলা নেতৃত্বের অভিযোগ, নিয়ম অনুযায়ী নমুনা উত্তরপত্র মিলিয়ে নির্দেশিকা মেনে খাতা দেখার পরে শিক্ষকদের নম্বর দিতে হয়। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার বাংলা বিষয়ের খাতা দেখার ক্ষেত্রে তাতে সমস্যা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতির কোচবিহার জেলা সম্পাদক শিশির সরকার বলেন, “প্রাথমিক ভাবে সংসদের দেওয়া নমুনা উত্তরপত্রে কয়েকটি প্রশ্নের সঠিক উত্তর উল্লেখ করা নেই। এর ফলে শিক্ষকদের খাতা দেখার ক্ষেত্রে ভুল হতে পারে। অযোগ্য ও অনভিজ্ঞ লোকদের দিয়ে নমুনা উত্তরপত্র তৈরি করাতেই এমন সমস্যা হয়েছে। দ্রুত তা সংশোধন করে নয়া নির্দেশিকা ও নমুনা উত্তরপত্র শিক্ষকদের দেওয়ার দাবি জানিয়ে সংসদ কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠিয়েছি।”
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সদস্য তথা এবিটিএ’র কোচবিহার জেলা সহকারী সম্পাদক সুজিত দাস বলেন, “উচ্চমাধ্যমিকের বাংলার বেশ কয়েকটি প্রশ্নের আসল উত্তরের বদলে সংসদের নির্দেশিকায় দেওয়া উত্তরের বিস্তর ফারাক রয়েছে। এতে কোনও শিক্ষক নির্দেশিকা মেনে নম্বর দিলে সঠিক উত্তর লিখেও পরীক্ষার্থীদের বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেজন্যই আমরা ওই আশঙ্কা এড়াতে সংসদ কর্তাদের কাছে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।” তৃণমূল শিক্ষা সেলের নেতারা অবশ্য ওই ঘটনার পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে সন্দেহ করছেন। সংগঠনের কোচবিহার জেলা সহ সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ কোর কমিটির সদস্য হরিগোপাল মল্লিক বলেন, “নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সরকারী কর্মী, শিক্ষকদের একটা অংশ নানা ভাবে ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছে। আগেও তা প্রকাশ্যে এসেছে। বিভ্রান্তিকর নমুনা উত্তরপত্র বিলির ঘটনায় তেমন কোনও রহস্য থাকতে পারে। কারা ওই নমুনা উত্তরপত্র তৈরির দায়িত্বে ছিলেন তা সাংগঠনিক ভাবে খতিয়ে দেখা হবে।” পাশাপাশি হরিগোপালবাবু জানান, এদিন ওই উত্তরপত্রের বিষয়টি নিয়ে সংসদের উত্তরবঙ্গের আঞ্চলিক দফতরের কর্তাদের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। খুব শীঘ্রই নয়া নমুনা উত্তরপত্র ও নির্দেশিকা আসার আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা। কোচবিহারের বাসিন্দা উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা বিষয়ের এক প্রধান পরীক্ষক জানিয়েছেন, ১/২, ১/৩ সহ আরও কয়েকটি প্রশ্নের যথাযথ উত্তর নমুনা উত্তরপত্রে নেই। অন্য এক শিক্ষকের কথায়, “১/২ প্রশ্নে একটি উদ্ধৃতি দিয়ে কে, কার সম্পর্কে তা বলেছেন সেই ব্যাপারে প্রশ্ন করা হয়েছে। নমুনা উত্তরপত্রে বলা হয়েছে, ওই প্রশ্নের উত্তর হবে, ‘মদন তাঁতিকে বলেছে গগন তাঁতির বৌ’। অথচ সঠিক উত্তর হবে, ‘গগন তাঁতির বৌ ভূষণ ঘোষাল সম্পর্কে ওই মন্তব্য করেছেন। অন্য একটি উদ্ধৃতি দিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে, লেখক নির্দিষ্ট সূক্ষ্ম পেশি দুটির নাম লেখ। নমুনা উত্তরপত্রে তার একটি স্টেপিডিয়াম লেখা হয়েছে। সঠিক উত্তর হবে স্টেপিডিয়াস। এরকম আরও কয়েকটি ভুল রয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.