পঞ্চম শ্রেণিতে ছবি এঁকে পড়ানোর সূচি থাকায় প্রধান শিক্ষিকা সাহায্যকারী নিয়ে পড়াতে বলেছিলেন স্কুলের এক দৃষ্টিহীন শিক্ষিকাকে। ওই শিক্ষিকা সেই প্রস্তাবে রাজি হননি। এর পরে প্রায়ই তাঁকে ডেকে এনে মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ এনে জেলাশাসক ও ডিআইয়ের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই শিক্ষিকা। ঘটনাটি কোচবিহারের পূর্ব গুড়িয়াহাটি গার্লস হাই স্কুলের। ওই শিক্ষিকার নাম সোনালি অধিকারী। তাঁর বাড়ি আলিপুরদুয়ারে। সোমবার তিনি তাঁর মা কৃষ্ণা দেবীকে সঙ্গে নিয়ে জেলাশাসক মোহন গাঁধী এবং ডিআই মহাদেব শৈব্যের সঙ্গে দেখা করে মৌখিক অভিযোগ জানান। পরে জেলাশাসক বলেন, “এসএসসি পাশ করে আসা কোনও শিক্ষিকাকে সাহায্যকারী নেওয়ার কথা বলাটাই অপরাধ। সেটা বলা হলে তা দুর্ভাগ্যজনক। বরং প্রতিবন্ধী সহকর্মীকে অন্যদের বাড়তি সহযোগিতা করা উচিত। আমি ওঁকে লিখিত অভিযোগ জমা দিতে বলেছি। সেটা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ |
কোচবিহারের জেলা স্কুল পরিদর্শক মহাদেব শৈব্য অবশ্য জানান, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে। স্কুল ও শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১০ সালে কোচবিহার শহর লাগোয়া ওই স্কুলে এসএসসি’র মাধ্যমে ইংরেজির শিক্ষিকা হিসাবে চাকরিতে যোগ দেন সোনালি দেবী। মা কৃষ্ণা দেবীকে নিয়েই তিনি স্কুলে যাতায়াত করেন। তাঁর অভিযোগ, মাসিক চুক্তিতে সাহায্যকারী নিয়ে ক্লাস করতে রাজি না-হওয়ায় তাঁর উপরে মানসিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে। সোমবারও প্রায় দুই ঘন্টা প্রধান শিক্ষিকার দফতরে বসিয়ে এজন্য তাঁকে চাপ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সোনালি দেবী বলেন, “প্রথমে সহ্য করেছি। সোমবার মারাত্মক চাপ দেওয়া হয়। বাধ্য হয়েই ডিএম ও ডিআইকে সব জানিয়েছি। মঙ্গলবার লিখিত জানাব।” পাশাপাশি, তাঁর অভিযোগ, প্রধান শিক্ষিকা তাঁকে এবিটিএ করার জন্য পরামর্শ দিলেও তিনি তা না মেনে পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতিতে যোগ দেন। তার জেরেই নির্যাচন বেড়েছে বলে সোনালি দেবীর অভিযোগ। পুর্ব গুড়িয়াহাটি গার্লস হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সতী চক্রবর্তী বলেন, “সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন। পড়ুয়াদের স্বার্থের কথা ভেবেই ওকে একজন সাহায্যকারী নিতে বলা হয়।” স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক স্বপন আইচ জানান, সাহায্যকারী নেওয়ার ব্যাপারে কোনও জোরাজুরি করা হয়নি। এবিটিএ’র কোচবিহারের জেলা সম্পাদক বকুল দত্ত বলেন, “এমন হওয়ার কথা নয়। খোঁজখবর নিচ্ছি।” |