রক্তদান শিবিরের সংখ্যা কমে যাওয়ায় মালদহ সদর হাসপাতালে রক্তের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ওই ঘটনায় বিপাকে পড়েছেন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত থেকে শুরু করে বহু রোগী। রক্তের সঙ্কট দেখা দিতেই একশ্রেণির দালাল রোগীর পরিবারের লোকেদের চড়া দামে রক্ত কিনতে বাধ্য করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রক্তের সঙ্কট এতটাই যে, সোমবার সদর হাসপাতালে ব্লাড ব্যাঙ্কে মাত্র ৬ প্যাকেট রক্ত মজুত ছিল। তাও কেবলমাত্র “ও” পজেটিভ। সদর হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের পরিবারের লোকেদের বাইরে থেকে রক্ত জোগাড় করতে হয়। হাসপাতালে রক্তের সঙ্কট কাটাতে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের নারী ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রের দ্বারস্থ হয়েছেন। নারী ও সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী বলেন, “যেভাবে ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের সঙ্কট দেখা দিয়েছে তা উদ্বেগজনক। সদর হাসপাতালের সুপার আমাকে রক্তের সঙ্কটের কথা বলেছেন। সদর হাসপাতালের রক্তের সঙ্কট মেটাতে সবাইকে আবেদন জানানো হচ্ছে। পাশাপাশি জেলার সমস্ত ক্লাব, রাজনৈতিক দলের যুব সংগঠনের সাহায্য চেয়েছি।” রক্তের সঙ্কট মেটাতে এগিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মালদহ সদর হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরাও। মঙ্গলবার সদর হাসপাতালের চিকিৎসকরা এই ব্যাপারে বৈঠকে বসছেন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপন কুমার ঝরিয়াত বলেন, “রক্তের সঙ্কট মেটাতে জেলার সমস্ত ক্লাব, সংগঠনের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। সবাই একসঙ্গে এগিয়ে না আসলে সমস্যা মেটানো যাবে না। আগামী ২-৩ দিন বেশ কয়েকটি রক্তদান শিবির হবে। তাতে রক্তের সমস্যা কিছুটা মিটবে বলে আশা করছি।” জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ৬০০ বেডের মালদহ সদর হাসপাতালে প্রতিদিন ৩০-৩৫ প্যাকেট রক্ত লাগে। পাশাপাশি সদর হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে জেলার বিভিন্ন নার্সিংহোমে ১৫ থেকে ২০ প্যাকেট রক্ত সরবরাহ হয়। এ ছাড়া থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তদের জন্য প্রতিদিন ৬ প্যাকেট রক্ত লাগে। এই সময় সদর হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে বিভিন্ন গ্রুপের ৭৫ থেকে ৮০ প্যাকেট মজুত থাকত। সেখানে মাত্র ৬ প্যাকেট রক্ত মজুত রয়েছে। জেলা ডিস্ট্রিক্ট ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরামের সম্পাদক সৌমিত্র দত্ত বলেন, “রক্তের সঙ্কটে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে জেলার শতাধিক থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগী। শীঘ্রই এই সঙ্কট মেটানো না-গেলে তাঁদেরই বেশি সমস্যায় পড়তে হবে।” |