আকাশ মেঘলা থাকলেই মাথায় হাত পড়ে নওদার পেঁয়াজ চাষিদের। রবিবার ও সোমবার আকাশ মেঘলা থাকায় চাষিদের আশঙ্কা গত বছরের মতোই এ বারও অকালে বর্ষা না হয়। এ বছর এমনিতেই বেশি ফলন হওয়ায় পাইকারি পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ৬-৭ টাকা থেকে ৪ টাকায় নেমে এসেছে। তাছাড়া নওদা বড় পেঁয়াজ উৎপাদনকারী অঞ্চল হলেও সেখানে কোনও পেঁয়াজ সংরক্ষণের কেন্দ্র নেই। এলাকার চাষিদের অভিযোগ, প্রতিটি নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক নেতারা প্রতিশ্রুতি দিলেও, আজও গড়ে ওঠেনি সংরক্ষণ কেন্দ্র। নওদার মাটি ও আবহাওয়া পেঁয়াজ চাষের উপযোগী হওয়ায় অনেক চাষিই অর্থকরী ফসল হিসেবে পেঁয়াজ চাষকে গুরুত্ব দেন। কিন্তু সংরক্ষণাগার নেই বলে ফলন বেশি হওয়ায় সমস্যাও তৈরি হয়।
নওদার আমতলা থেকে পাটিকাবাড়ি পর্যন্ত এলাকায় সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। শিবনগর, মহম্মদপুর, দুধসর, নওদা, চণ্ডীপুর, আমতলা, পাটিকাবাড়ি এলাকার চাষিরা নভেম্বর থেকে পেঁয়াজ লাগাতে শুরু করেন। মার্চে ঘরে তোলা হয় পেঁয়াজ। নওদার আমজাদ হুসেন বলেন, “নভেম্বরের আগে মাটি শুকনো করে গুঁড়ো করে পেঁয়াজের বীজ ফেলতে হয়। তিন বার সেচ দেওয়া হয়। তারপর পরিচর্যা। তবে তোলার সময় পেঁয়াজ বৃষ্টিতে ভিজে গেলে সমস্যা শুরু হয়। গত বছরই বৃষ্টিতে প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। এ বার আশা করি তা পূরণ করতে পারব।” মহম্মদপুরের চাষি আলতাফ শেখ বলেন, “সাত দিন আগেও পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম ছিল ৬-৭ টাকা। এখন তা ৪ টাকায় নেমে গিয়েছে। দু’দিন আকাশ মেঘলা থাকায় এ বারেও গতবারের ভয় রয়েছে।”
নওদা ব্লক কৃষি দফতরের হিসেবে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়। প্রতি বিঘায় ৩০-৪০ কুইন্ট্যাল পেঁয়াজ ফলে। নওদা ব্লক কৃষি আধিকারিক জেসমিন হক বলেন, “গত বছর শিলাবৃষ্টিতে পেঁয়াজের ব্যাপক ক্ষতি হয়। তাই এ বছর মেঘলা দেখলেই ভয় পাচ্ছেন চাষিরা। যা উৎপাদন হয়েছে তাতে কেজি প্রতি ৫-৬ টাকা পেলেও সমস্যা হবে না। কিন্তু এর কম হলেই চাষিরা সমস্যায় পড়বেন।” কিন্তু পেঁয়াজ সংরক্ষণ নিয়ে কী ভাবছেন তাঁরা? নওদার কংগ্রেস বিধায়ক আবু তাহের খান বলেন, “আমি বিষয়টি নিয়ে বিধানসভায় একাধিকবার দাবি করেছি। আগামীতে নিশ্চয় সংরক্ষণাগার তৈরি করা হবে।” |